সোমবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » অনলাইনে ভয়ঙ্কর ইয়াবার বিজ্ঞাপন!
অনলাইনে ভয়ঙ্কর ইয়াবার বিজ্ঞাপন!
অনলাইনে একটি ওয়েবসাইটে মন্তব্যের আড়ালে চলছে নিষিদ্ধ বড়ি ইয়াবার বিজ্ঞাপন। বিক্রেতা, ক্রেতা উভয়েই বেচা-কেনার ইচ্ছার কথা জানিয়ে মোবাইল নম্বর দিচ্ছেন।
এ ছাড়া ওয়েবসাইটটিতে নানা আপত্তিকর, কুরুচিপূর্ণ ও বিকৃত মন্তব্য এবং অসৎ উদ্দেশ্যে অনেক মেয়ের মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কানাডা থেকে নিয়ন্ত্রিত ওয়েবসাইটটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো। সাইটটিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য রয়েছে আলাদা ক্ষেত্র। রয়েছে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন পেইজ (পৃষ্ঠা)। বিষয়কে ধরে নানা মন্তব্য। সেখানে পাঁচটি পৃষ্ঠায় (পেইজ) দেখা গেছে মন্তব্যের আড়ালে ইয়াবা বড়ি বেচা-কেনার বিজ্ঞাপন। যেমন: ‘আমি ইয়াবা পাইকারি বিক্রি করি’, ‘সহজেই পাবেন ইয়াবা, যোগাযোগ করুন…’, ‘আমার ইয়াবা দরকার’ ইত্যাদি।
সাইটটিতে ইয়াবার এমন বিজ্ঞাপন প্রথম দেওয়া হয় ২০১১ সালের ১ মার্চ। সর্বশেষটি এ বছরের চলতি মাসের ১৩ তারিখে। সাইটে এমন বিজ্ঞাপনের সংখ্যা শতাধিক।
সাইটটিতে ইয়াবা বিক্রির কথা জানিয়ে মোবাইল নম্বর দেওয়া এক ব্যক্তি তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন সাফি। ওই মোবাইল নম্বরে কয়েক দিন আগে ক্রেতা সেজে যোগাযোগ করলে ওই ব্যক্তি জানতে চান খুচরা না পাইকারি কেনা হবে। পাইকারি জানালে বলেন, ‘আমি তো কুমিল্লায় থাকি। আপনি একটু আগালে আমি গৌরীপুর বা দাউদকান্দি পর্যন্ত যাব। অথবা টাকা পাঠালে কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠিয়ে দিতে পারব।’ দাম জানতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের ইয়াবা বড়ির দাম জানান। ঢাকায় তাঁর নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি আছেন কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আছে, তবে একটু ঝামেলা হইছে। পরিচিত ছাড়া তাঁদের কারও নম্বর দেই না। আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন। টাকা পাঠালেই বড়ি পাঠাব।’
নারী নাম দেওয়া একটি মন্তব্যে বলা হয়েছে, তাঁরা কয়েকজন নারী ইয়াবা বিক্রি করছেন। সেখানে থাকা মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে এক নারী বলেন, ‘পরে যোগাযোগ করেন।’ সাজিদ নামে করা মন্তব্যে বিভিন্ন ধরনের ইয়াবার মূল্যতালিকা রয়েছে। ক্রেতা সেজে ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে টাকা পাঠাতে বলা হয়।
সাইটটিতে ইয়াবা দরকার জানিয়ে ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমার দরকার ছিল। তাই বিজ্ঞাপন দিয়েছি। পেয়েছি। এখন দরকার নেই।’ অবশ্য এমন বিজ্ঞাপনের সঙ্গে থাকা দুটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা নম্বর দেননি। কেউ শত্রুতা করে নম্বর দিয়েছে।
নজরে পড়েনি বিটিআরসির, ডিবির: বিষয়টি জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশেনর (বিটিআরসি) মিডিয়া উইংয়ের প্রধান সরোয়ার আলম বলেন, ‘এমন সাইট থাকলে তা তো ভয়ংকর ব্যাপার।’ সাইটের ঠিকানা দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর তিনি ফোন করে বলেন, ‘এটি ভয়ংকর রকমের অপরাধ। আমি কর্তৃপক্ষের নজরে আনছি। এ ধরনের সাইট চলতে দেওয়া যায় না।’
বিষয়টি নজরে পড়েনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। সাইবার অপরাধ নিয়ে কাজ করা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেনকেও ওই সাইটের ঠিকানা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটে মাদক ব্যবসা, মুঠোফোন নম্বর ছড়িয়ে হয়রানি করাসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ শুনেছি। তবে নির্দিষ্ট কোনো সাইট নজরে পড়েনি। আমি ওই সাইটটি দেখে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ -