বৃহস্পতিবার ● ২৮ আগস্ট ২০১৪
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » এবার দূরপাল্লার বাসে ওয়াই-ফাই
এবার দূরপাল্লার বাসে ওয়াই-ফাই
এবার দূরপাল্লার যাত্রীদের ইন্টারনেট সেবা দিতে বাসেই যুক্ত হচ্ছে ওয়াই-ফাই সংযোগ। পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত বিলাসবহুল বাসে এই সেবা চালু করা হবে। এ উদ্যোগ সফল হলে দেশের অন্যান্য দূরপাল্লার রুটেও এই সেবা চালু করা হবে।
দূরপাল্লার ভ্রমণে যাত্রীদের একঘেয়েমি দূর করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্রাউজ, মেইল চেক করা, মেইল প্রেরণ এবং গেম খেলার সুবিধা দিতে বাসে বসানো হবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াই-ফাই রাউটার।
বেসরকারি বাস মালিকরা যাত্রীদের সেবা দিতে এগিয়ে এলে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিআরটিসির পরিচালক (টেকনিক্যাল) এবং বিআরটিসি বাস উইথ ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সিস্টেম প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল আবদুল্লাহিল করিম।
তিনি বলেন, ‘টেস্ট কেস হিসেবে দূরপাল্লার দু‘একটি বাসে আমরা এই প্রযুক্তি চালু করতে পারি।’
এদিকে রাজধানীতে চলাচলরত ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সংযুক্ত বিআরটিসি বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি সপ্তাহে ৫টি এবং আগামী সপ্তাহে আরো ৫টি বাসে ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে বলে জানান আবদুল্লাহিল করিম।
তিনি বলেন, ‘আপাতত উত্তরা-মতিঝিল রুটে এই সেবা চালু করা হচ্ছে।’
অন্য রুটে কেন নয়- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উত্তরা থেকে গাজীপুর এবং উত্তরা থেকে আজিমপুর, মতিঝিল থেকে ক্যান্টনমেন্টের বালুঘাট, আজিমপুর থেকে গাবতলী হয়ে সাভার, রামপুরা হয়ে উত্তরা রুটেও এই সেবা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু মতিঝিল-উত্তরা রুট ছাড়া অন্য রুটে ইন্টারনেট সংযোগে কাক্সিক্ষত গতি না পাওয়া এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়ায় ওসব রুটের বাস থেকে ওয়াই-ফাই প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল ঢাকার রাস্তায় ১০টি ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট যুক্ত বিআরটিসি বাস ছাড়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের কারিগরী সহায়তায় রাস্তায় নামানো এসব বাসে ইন্টারনেটের পাশাপাশি ভেহিকেল ট্র্যাকিং সিস্টেমও চালু করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাভার রুটে থ্রিজি না থাকায় ওই রুট থেকে ওয়াই-ফাই বাস প্রত্যাহার করে তা গাজীপুর রুটে দেওয়া হয়। কারিগরী সমস্যার কারণে পরে ওই রুট থেকেও ওয়াই-ফাই বাস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রথমদিকে বিআরটিসির কিছু দোতলা নন-এসি ও আর্টিকুলেটেড বাসে এ সুবিধা থাকলেও পরবর্তীতে শধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাসেই এ সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
বিআরটিসির প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘নন-এসি এবং আর্টিকুলেটেড বাসে বেশির ভাগ ভাসমান যাত্রী থাকায় ইন্টারনেটের চাহিদা পর্যাপ্ত না হওয়ায় ওয়াই-ফাই প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
ওয়াই-ফাই বাসগুলোতে মাঝে মাঝে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এবং গাড়ি দ্রুতবেগে চললে ইন্টারনেটের গতি অত্যন্ত ধীর হয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও অনেক ডিভাইসে সংযোগ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীদের কেউ কেউ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, একটি বাসে দুটি করে রাউটার বসানো রয়েছে। একটি রাউটার দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন। এই ইন্টারনেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে এক মেগাবাইট। বেশি যাত্রী এক সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শুরু করলে গতি ধীর হয়ে যায়। এছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে যুক্ত হয়েই অনলাইনে গেম খেলতে শুরু করেন। উচ্চ গতির ইন্টারনেট না পাওয়ার এটাও একটা কারণ।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, এসব বাসের ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট কেবল অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে। ফলে অন্য অপারেটিং সিস্টেমের ডিভাইসে (মোবাইলফোন, ট্যাব) বাসের ভেতর ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে না। তবে আগামীতে বাসের ভেতরে রাউটারের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
এসব বাসে কাক্সিক্ষত গতির ইন্টারনেট না পাওয়ার পেছনে কারিগরি দুর্বলতাও একটি বড় কারণ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলেছেন, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সমস্যা হলে বাস থেকে তেমন কোনো সহায়তা পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ‘টেকনিক্যাল ম্যানপাওয়ার’ -এর সংখ্যা কম থাকায় বাস যাত্রীদের সঠিকভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ‘টেকনিক্যাল ম্যানপাওয়ার’ দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগিরই হয় তো লোকবল পাওয়া যাবে।