রবিবার ● ১৭ আগস্ট ২০১৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ইন্টারনেটে অনেকেই আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারে
ইন্টারনেটে অনেকেই আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারে
ইন্টারনেট স্ক্যান করতে পারে এমন বেশ কিছু প্রযুক্তি রয়েছে। তবে এর মাধ্যমে মানুষজনের একেবারে ব্যক্তিগত দরজার কড়া নাড়ানো হয় না। বরং কোন কোন বিষয়গুলো ইন্টারনেটে খোলা অবস্থায় রয়েছে তা দেখা হয়। তাই অনেকে ভয় পান যে, তারা ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য নিয়ে যেসব কাজ করছেন তার সবকিছুতে চোখ রাখা হচ্ছে। আসলে তা নয়।
‘হ্যাকার কনফারেন্স ডেফকন’ শিরোনামে একটি ইস্যু নিয়ে নিরাপত্তাবিষয়ক প্রকৌশলী পল ম্যাকমিলান তার একটি স্ক্যানারের ব্যবহার দেখান। এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে যারা তাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন তাদের খুঁজে বের করা হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের পাসওয়ার্ড বের করা যায় না। পোর্ট ৫৯০০ এর কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ভিএনসি নামে এক রিমোট অ্যাকসেস প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করেন। এদের মোট সংখ্যা ৩০ হাজারের মতো। এই প্রোগ্রাম যারা ব্যবহার করছেন তারা আসলে পাসওয়ার্ড দিয়ে নিরাপদ নন। কারণ তাদের কাজ যারা দেখতে চাইবেন তারা সরাসরি তাদের কাজ-কারবার দেখতে পারবেন। এভাবে মানুষ ফেসবুকে কাজ করছেন বা আমাজনে শপিং করছেন, ই-মেইল পড়ছেন বা পর্ন সিনেমা দেখছেন ইত্যাদি বের করা যায়।
তবে হ্যাকাররা এসব দেখতে পারেন সহজেই। কারণ সব মানুষ তাদের কম্পিউটারগুলো যেন উন্মুক্ত অবস্থায় ফেলে রাখেন বলে জানান আরেক প্রকৌশলী ড্যান টেন্টলার। সব কিছুই ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত। তা ছাড়া সবাই জানেন না যে, চারদিক থেকে কীভাবে নিরাপত্তা অটুট রাখতে হয়। তিনি আরো জানান, আমি অনেক কম্পিউটার নিরাপত্তাহীন দেখেছি। আমি ফেসবুকের ইনবক্স এবং ই-মেইল খোলা অবস্থায় পেয়েছি। আমি একটি ব্র্যান্ড ওষুধ কম্পানির ওয়েবসাইটের গোপন কাজগুলোও নিরাপত্তাহীন পেয়েছি। একে সত্যিই ভয়ানক বলে মনে করেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান। তাকে সাবধান করার পর তিনি সচেতন হয়েছেন। তিনি যে সফটওয়্যারে কাজ করতেন তার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি জানানো হলে তারা দেখে যে, তাদের ফায়ারওয়ালে সমস্যা রয়েছে এবং তারা দ্রুত তাদের ভিএনসি এর সেটিং বদলে ফেলে।
এমন সংগৃহীত বহু স্ক্রিনশটে দেখা যায়, অনেকেই অনেকের গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ হয়েছে। সেখানে পাওয়া গেছে ‘ইউ গট ওনড’ বা ভিএনসি সফটওয়্যারে একটি পাসওয়ার্ড দিতে বলেছে গুগল ইত্যাদি।
যারা এসব কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারেন তারা সেটিং বদলে ফেলাসহ অন্যান্য বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেন। ধরুন, কোরিয়ার টেক্সিক্যাবে যে বিজ্ঞাপনের স্ক্রিন চলে তা হঠাৎ করেই বদলে ফেলা যায়। ধরুন, এসব ক্যাবের স্ক্রিনে লিখে দেওয়া হলো ‘উত্তর কোরিয়া আত্মসমর্পণ করেছে’। তা হলে ঘটনা কী ঘটবে? এ ছাড়া ইতালির একটি পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের জটিল কাঠামো এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আপনার স্ক্রিনে চলে আসলো। এভাবে যেকোনো দেশের প্রতিরক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট বা এর কম্পিউটারগুলো নিরাপদ রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ডেফকনের আরেক প্রেজেন্টেশনে বলা হয়, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতির বিষয়গুলো ইন্টারনেটে খোলামেলা হয়ে যাওয়াটা কেমন দেখায়? অনেকের মতে, চিকিৎসার এসব যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা থাকা উচিত। খুব সহজেই যেন ইন্টারনেটে কারসাজি করে যেকোনো চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য বা যন্ত্রপাতি বের করে ফেলা না যায়, সে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে হ্যাকাররা এসব চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ওয়েবসাইট হ্যাক করে কী ধরনের সুবিধা আদায় করছেন তা ঠিক পরিষ্কার নয়।
তাই আমরা যারা ভিএনসি ব্যবহার করছি তাদের উচিত আরো সতর্ক হওয়া। নিরাপত্তার সঙ্গে কম্পিউটার ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে আামাদের।
পল আরো জানান, বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি দিয়ে এসব সার্চ দিলে বিভিন্ন ধরনের ফলাফল আসে। যেমন- আট মাস আগে হাইড্রোইলেকট্রিক সিস্টেম দিয়ে যে সার্চ দেওয়া হয়েছিল তাতে এমন ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে কম্পিউটার যারা প্রস্তুত করেন তাদের একটি কাজ করতে অনুরোধ করা উচিত। তা হলো, এইচএমআই প্যানেলে কিছু পরিবর্তন এনে কম্পিউটারের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করা।কালের কণ্ঠ