রবিবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০১১
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » এসকেএ হয়ে উঠতে পারে এক মহা-বৈজ্ঞানিক প্রকল্প
এসকেএ হয়ে উঠতে পারে এক মহা-বৈজ্ঞানিক প্রকল্প
মনুষ্য প্রজাতির সূত্রপাত হয় সুদূর আফ্রিকায়৷ তাই বহুদিন যাবত ভূতত্ত্ববিদদের অন্যতম আগ্রহের বিষয় আফ্রিকা মহাদেশ৷ আর এবার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আকর্ষণ করতে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিও-টেলিস্কোপটি বসাতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা৷
এই বিশালাকার রেডিও-টেলিস্কোপটির নাম ‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারেই’ বা এসকেএ৷ এর মাধ্যমে পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্যের বহু তথ্যের নাগাল পাওয়া যাবে - এমনটাই আশা৷ শোনা যাচ্ছে, প্রকল্পটির আওতায় প্রায় চার হাজার টেলিস্কোপ ও ‘ডিশ অ্যান্টেনা’ একত্র করে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং তার মাধ্যমে লক্ষ্য রাখা হবে মহাকাশে৷ যাতে করে, বর্তমান যে কোনো সাধারণ রেডিও-টেলিস্কোপের তুলনায় এসকেএ হবে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি কার্যকর৷ এছাড়া, এই টেলিস্কোপটির বিস্তার অন্তত ২৫০ একর জায়গা জুড়ে হবে বলেও জানাচ্ছে ‘আফ্রিকান মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান’ বা নাসাম্বা৷
বিজ্ঞানীরা জানান, এই এসকেএ প্রকল্পে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে৷ চেষ্টা করা হবে বিজ্ঞানের মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার৷ শুধু তাই নয়, নতুন এই টেলিস্কোপটির সাহায্যে অতীতের অনেক তারাকে দেখা যাবে বলেও জানান তাঁরা৷
আদতে এসকেএ ছিল বিশ্বের নামজাদা সব বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত এক প্রচেষ্টার ফসল৷ বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী রেডিও-টেলিস্কোপ তৈরির জন্য এক অভূতপূর্ব ‘নীল নকশা’৷ তাছাড়া, এই প্রকল্পটি পরিকল্পনার কাজ আজ নয়, শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে৷ সে সময়, অস্ট্রেলিয়া এবং প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ড যৌথভাবে টেলিস্কোপ প্রকল্পের কাজ শুরু করার ঘোষণা দেয়৷ আর তখনই জানা যায় যে, ২১০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ মূল্যের এই প্রকল্পটির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ আফ্রিকা৷
শেষ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় দু’বছর পর নিউজিল্যান্ড নয়, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে এসকেএ নামের রেডিও-টেলিস্কোপটি তৈরি করার কাজ শেষ করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকাই৷ বলা বাহুল্য, মহাজগতে বুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধানই হবে এ প্রকল্পের লক্ষ্য৷ এসকেএ মহাজগতের অতল থেকে হাজারো বছরের পুরোনো রেডিও-তরঙ্গ তুলে আনতে সক্ষম হবে৷ তুলে আনতে সক্ষম হবে এমন সব সূত্র, যা আজকের বিশ্বে সকলেরই অজানা৷ তাই এই যন্ত্র একুশ শতকের সেরা বৈজ্ঞানিক প্রকল্প হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
উল্লেখ্য, ‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারেই’ বা এসকেএ-এর নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরো ছয় থেকে আট বছর৷ তবে তার আগেই, ‘মীরকেএটি’ নামের একটি ‘প্রোটোটাইপ’ বানাবে দক্ষিণ আফ্রিকা৷ যাতে থাকবে মাত্র ৬৪টি অ্যান্টেনা৷