রবিবার ● ১ জানুয়ারী ২০১২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বাঙালি বিজ্ঞানী নিয়ে বিশ্বে আলোড়ন
বাঙালি বিজ্ঞানী নিয়ে বিশ্বে আলোড়ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা ভারতবর্ষের গর্ব পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোস৷ সাম্প্রতিক সময়ে ‘হিগস-বোসন’ নিয়ে সারা বিশ্বে যে আলোচনা হচ্ছে তার নামের একটি অংশ এসেছে এই বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম থেকে৷
আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে মিলে সত্যেন্দ্রনাথ বোস পার্টিকল ফিজিক্স বা কণা পদার্থবিজ্ঞানে অনেক অবদান রেখেছেন৷ তাদের দুজনের নামে ‘বোস-আইনস্টাইন স্ট্যাটিসটিকস’ নামে একটি পরিসংখ্যান রয়েছে৷ যেসব কণা এই পরিসংখ্যান মেনে চলে তাদেরকে বলা হয় ‘বোসন’- যেটা সত্যেন্দ্রনাথ বোসের নাম থেকে নেয়া৷ এর কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আরশাদ মোমেন বলেন, ‘‘আলোর ফোটনের যে পরিসংখ্যান, সেটা প্রথম দিয়েছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বোস৷ এবং তিনি যে পরিসংখ্যানের নিয়মটা দিয়েছিলেন সেটা এই গোত্রের যে কণাগুলো রয়েছে সবার জন্য প্রযোজ্য৷”
সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিজ্ঞানীরা যে কণার অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন সেটার নাম হলো ‘হিগস’৷ আর এই হিগসও সত্যেন্দ্রনাথ বোসের দেয়া পরিসংখ্যান মেনে চলে বলে ধারণা করা হয়৷ ফলে তার নাম হয়ে গেছে ‘হিগস-বোসন’৷ কিন্তু কী এই ‘হিগস’? ড. মোমেন বলছেন, ‘‘হিগস হচ্ছে এমন একটা কণা যেটা অন্যান্য কণার জন্য ভর তৈরি করে৷”
তাহলে কেন এই কণাকে নিয়ে এত আলোচনা, কেনই বা এটি এত গুরুত্বপূর্ণ? ড. মোমেন বলেন, ‘‘হিগস যদি আবিষ্কৃত হয় তাহলে একসঙ্গে দুটো রাস্তা খুলে যাবে৷ এক, ভর তৈরির মেকানিজমটা জানা যাবে৷ এবং দুই, এর মাধ্যমে কসমোলজির কিছু সমস্যার সমাধান করা যাবে৷”
অনেকে বলছেন হিগসের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানা যাবে৷ কিন্তু, এর সঙ্গে একমত নন ড. মোমেন৷ অনেকে আবার এটাকে ‘গড পার্টিকল’ বা ইশ্বরের কণাও বলছেন৷ কিন্তু হিগসকে এমন নামে ডাকতে রাজি নন বিশ্বের বিজ্ঞানীরা৷ তারা বলছেন, এই নামটা গণমাধ্যমের দেয়া৷ ড. মোমেনও তেমনটাই বলছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘নোবেলজয়ী পদার্থবিদ লিওন লেডারম্যানের একটি বই আছে যার নাম গড পার্টিকল৷ কিন্তু তিনি আসলে নামটি দিতে চেয়েছিলেন গডড্যাম পার্টিকল৷ কারণ তিনি অনেক বছর ধরে হিগসকে না পেয়ে অনেকটা বিরক্ত হয়ে এর নাম দিয়েছিলেন গডড্যাম পার্টিকল৷ কিন্তু পরে বইয়ের প্রকাশক বললেন এই নাম দিলে অনেক অ্যামেরিকান ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারে৷ তাই ঐ প্রকাশক ড্যাম শব্দটি বাদ দিয়ে বইয়ের নাম রাখেন গড পার্টিকল৷”