শুক্রবার ● ২৭ জুন ২০১৪
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » পৃথিবীর সমান হীরের টুকরোর
পৃথিবীর সমান হীরের টুকরোর
পৃথিবীর মতো বড় মাপের এক হীরের টুকরোর সন্ধান মিলল মহাকাশে। জ্যোতির্বিদরা বলছেন, আমাদের পৃথিবী থেকে হীরের টুকরোর দূরত্ব প্রায় ৯০০ আলোকবর্ষ, কুম্ভ রাশির দিকে রয়েছে মহাজাগতিক এই হীরের টুকরো। আমেরিকার উইসকনসিন-মিলওয়াউকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেভিড কাপলান জানিয়েছেন, তত্ত্বগত ভাবে এমন মহাজাগতিক বস্তুর অস্তিত্ব কল্পনা করা গেলেও বাস্তবে এর অস্তিত্ব প্রমাণ করা খুবই কঠিন।বিজ্ঞানীদের দাবি, অতিকায় এই হীরের টুকরোটি আসলে একটি নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষ। তারকার পৃষ্ঠদেশের তাপমাত্রা এতটাই কম যে সেখানে কার্বন জমে কেলাসে পরিণত হয়েছে। তাই গোটা নক্ষত্রটিই জমাট হীরের টুকরোর আদল নিয়েছে। নক্ষত্রটি সম্ভবত ১১০০ কোটি বছর আগে, অর্থাৎ আকাশগঙ্গা ছায়াপথ তৈরি হওয়ার সময়েই সৃষ্টি হয়েছিল।
নিতান্তই দৈবগতিকে নক্ষত্রের এই বিচিত্র অবশেষ খুঁজে পেয়েছিলেন ডেভিড কাপলান ও তার সহযোগীরা। সূর্যের মতো মাপের নক্ষত্রদের অন্তিম পরিণতিকে বিজ্ঞানীরা ‘শ্বেত বামন’ বলেন। জ্বালানি শেষ হয়ে এমন প্রবল অভিকর্ষজনিত চাপের জন্য এই অবস্থায় নক্ষত্রের বিশাল আকার সঙ্কুচিত হয়ে পৃথিবীর মতো হয়ে আসে। কিন্তু তাদের ঘনত্ব বেড়ে যায় বহুগুণ। এ ভাবেই শেষ কয়েক কোটি বছর কাটিয়ে নক্ষত্রগুলো নিভে যায়। এই নক্ষত্রের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল।
মহাকাশের এক প্রান্তে পড়ে থাকা তারকার এই অন্ধকার মৃতদেহটি বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন সহযোগী ‘পালসার’টির জন্য। সূর্যের চেয়েও বহুগুণ বড় নক্ষত্রের অন্তিম পরিণতি হল পালসার বা নিউট্রন স্টার। নিজের অক্ষের চারদিকে দ্রুতগতিতে পাক খেতে থাকে ‘মরতে বসা’ এই ধরনের তারা। সেই সময়ই তারা রেডিও তরঙ্গ বিকিরণ করতে থাকে- অনেকটা লাইট হাউসের আলোর মতো। ডেভিড কাপলানের নজর পড়েছিল এমনই এক পালসার পিএসআর জে২২২২-০১৩৭-এর ওপর।
নিজের অক্ষের চারদিকে সেকেন্ডে ৩০ বার ঘুরতে থাকা ভালো করে পালসারটি দেখতে গিয়েই বিজ্ঞানীরা দেখলেন, তার এক সঙ্গীও আছে। অন্ধকার ও প্রবল ঠান্ডা সেই সঙ্গীই একটি অখণ্ড হীরের টুকরো। নক্ষত্রের এই অবশেষ দু’টি পরস্পরের চারদিকে ২.৫ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে।