রবিবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » থ্রিজি হ্যান্ডসেট বিভ্রান্তিতে গ্রাহকরা, জনসচেতনতায় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন
থ্রিজি হ্যান্ডসেট বিভ্রান্তিতে গ্রাহকরা, জনসচেতনতায় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন
গত বছর বাণিজ্যিকভাবে থ্রিজি সেবা চালু করেছে মোবাইল অপারেটরগুলো কিন্তু থ্রিজি প্রযুক্তিতে ব্যবহার উপযোগী হ্যান্ডসেটের বিষয়ে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশনা না থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়ছেন সেবাগ্রহীতারা। এ বিভ্রান্তি রোধ করতে থ্রিজি নেটওয়ার্কে ব্যবহার উপযোগী হ্যান্ডসেটে যেসব সুবিধা থাকা প্রয়োজন, তা নির্দিষ্ট করে একটি নীতিমালা তৈরি করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ওই নীতিমালার আলোকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে।
বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হ্যান্ডসেটের বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। তা না হলে পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিটিআরসির ওপর তার দায় বর্তাবে। এজন্য এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করা হবে।
মূলত ডাটাভিত্তিক সেবাদানের ক্ষেত্রে সহায়ক প্রযুক্তি থ্রিজি। দ্রুতগতির ডাটা আদান-প্রদান উপযোগী এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও কল করাও সম্ভব। সেজন্যই এ প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী অনেকেই।
সার্কিট সুইচড ও প্যাকেট সুইচড- দুই ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার আওতায় সেবা দেয় সেলফোন অপারেটরগুলো। এর মধ্যে সার্কিট সুইচড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় ভয়েস কলের জন্য। আর প্যাকেট সুইচড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় ডাটাভিত্তিক সেবাদানের জন্য। থ্রিজি প্রযুক্তি এ দুই নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে। তবে ক্রমান্বয়ে পুরো নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা আধুনিক প্যাকেট সুইচড প্রযুক্তিতে রূপান্তরের পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করছে সেলফোন অপারেটরগুলো।
থ্রিজি নেটওয়ার্ক উপযোগী সব হ্যান্ডসেটেই ডাটাভিত্তিক সেবা গ্রহণ করা সম্ভব। তবে ভিডিও কলের ক্ষেত্রে হ্যান্ডসেটের সামনের দিকে ক্যামেরা ছাড়াও অপারেটিং সিস্টেমে ভিডিও কলের সুবিধা থাকা প্রয়োজন। বিষয়টি জানা না থাকায় হ্যান্ডসেট কিনে বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন গ্রাহক। এক্ষেত্রে সেবাগ্রহীতাদের সচেতন করে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি অপারেটরেরও দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য থ্রিজি চালু করা পাঁচ সেলফোন অপারেটরের মধ্যে টেলিটক ছাড়া বাকি চার প্রতিষ্ঠানই নিজেদের ওয়েবসাইটে থ্রিজি উপযোগী হ্যান্ডসেটের তালিকা দিয়েছে।
সম্প্রতি হুয়াউয়ি ব্র্যান্ডের চারটি মডেলের হ্যান্ডসেট আমদানিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অনাপত্তি চেয়ে আবেদন করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কিউ মোবাইল লিমিটেড। এর মধ্যে তিনটি সেট পরীক্ষা করে সেগুলোর মাধ্যমে থ্রিজি ভিডিও কল করা সম্ভব নয় বলে দেখতে পায় বিটিআরসি। প্রতিষ্ঠানটিকে এসব হ্যান্ডসেট আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও গণমাধ্যমে হ্যান্ডসেটগুলোর থ্রিজিসংশ্লিষ্ট সব বৈশিষ্ট্য প্রচারের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্মার্টফোনে থ্রিজিসংশ্লিষ্ট যেসব বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করে একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি নীতিমালা তৈরির পর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনাও জারি করা হবে।
জানা গেছে, হ্যান্ডসেট আমদানি প্রক্রিয়া সহজতর করতেও উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ‘টাইপ অ্যাপ্রুভাল’ নামে পরিচিত নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের তৈরি হ্যান্ডসেটের নির্দিষ্ট মডেলের জন্য অনুমোদন দেবে বিটিআরসি। অনুমোদিত মডেলটির বিভিন্ন ধরনের কারিগরি বৈশিষ্ট্যসংবলিত নির্দেশনা দেয়া হবে কাস্টমসের কাছে। এসব বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে আমদানি করা হ্যান্ডসেটের ছাড়পত্র দেবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে আমদানি প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংশ্লিষ্টতা থাকবে না।
বাংলাদেশ মোবাইল হ্যান্ডসেট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্মার্টফোনের বিক্রি ১০-১২ শতাংশ বাড়বে। আর অর্থবছরের শেষে সামগ্রিকভাবে হ্যান্ডসেটের আমদানি দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।