রবিবার ● ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » দেশে ৪৮০০ কি.মি. ইন্টারনেট লাইন বসছে
দেশে ৪৮০০ কি.মি. ইন্টারনেট লাইন বসছে
দেশের সর্বত্র ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে এবং ব্যান্ডউইথডের দাম কমিয়ে আনতে সরকারি-বেসরকারি এবং ডাটা কানেকটিভিটি, ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বেসিস উদ্যোগে গোলটেবিল সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু বকর সিদ্দিক এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান। এ নীতিনির্ধারণী সংলাপে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন ইউনিভাসিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য এবং বিশিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী।
রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিতে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করেন ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রোকনুজ্জামান। এ ছাড়াও মোবাইল অ্যাপসের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোকপাত করেন বেসিস সভাপতি ফাহিম মাশরুর।
সংলাপে বক্তারা বলেন, সরকার ইন্টারনেটের দাম কমানো সত্ত্বেও সারাদেশে সুলভে উচ্চমানের ইন্টারনেটর সেবা না পৌঁছানোর প্রধান কারণ হচ্ছে দেশজুড়ে ফাইবার অপটিক ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা। এ ব্যাপারে সরকারি বিনিয়োগ কম। তেমনি অনেক জায়গায় বাজার এবং সহায়ক নীতি কাঠামো না থাকায় বেসরকারি খাতেও যথাযথ বিনিয়োগ করছে না। এ প্রেক্ষিতে অতিসত্ত্বর একটি সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, সারাদেশে বিশেষ করে সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যমান সব ধরনের শক্তি, সামর্থ্য এবং অবকাঠামো সমন্বিতভাবে কাজে লাগাতে হবে।
এক্ষেত্রে বিটিআরসি নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় নয়। বরং জনস্বার্থ রক্ষায় সহায়ক সহজ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে চায়। অচিরেই বিটিসিএল আরও ৪৮০০ কি.মি. ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের এনটিটিএন লাইসেন্স ২টি থেকে বাড়িয়ে অন্তত ৪-৫টি করা হচ্ছে।
সারাদেশে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইন্টারনেটের দাম সম্ভাব্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য বিটিআরসির চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে মোবাইল অ্যাপস সম্পর্কে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপাররা যাতে তাদের নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য সরকার নির্দেশনা জারি করবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শুধু নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের অনেক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উপজেলা পর্যায়ে কাজ করছে। অথচ বেসরকারি উদ্যোক্তারা শুধু ব্যবসায়িক লাভ ছাড়া কোনো বিনিয়োগে আগ্রহী হন না। তিনি টেলিকম খাতের উদ্যোক্তাদের এ ব্যাপারে উদার হওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, সংলাপে সারাদেশের ১৮ হাজার সরকারি দপ্তর, কয়েক হাজার বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য দেশব্যাপী ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্বল্পখরচে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মোবাইল অ্যাপস থেকে আয়ের সুষম বণ্টনের ব্যাপারেও একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার বলেও সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
সংলাপে অংশ নেন বেসিসের সভাপতি ফাহিম মাশরুর, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামীম আহসান, আইএসপিএবি ও বেসিস সহ-সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, এটুআই-এর পলিসি এডভাইজার আনীর চৌধুরী, সামিট কমিউনিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খান, ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির এবং অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির। সংলাপের সহ-আয়োজক ছিল দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন।-সাব্বিন হাসান