শুক্রবার ● ১৯ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » ইংল্যান্ডে তাপদাহে ৭৬০ জনের মৃত্যু!
ইংল্যান্ডে তাপদাহে ৭৬০ জনের মৃত্যু!
ইংল্যান্ডে প্রচণ্ড তাপদাহে গত নয় দিনে ৭৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে লন্ডনের একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দাবি করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ ও ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’-এর প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হলেও এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ ও ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির বিভিন্ন অংশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা আর ৪ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলেই সরকারের পক্ষ থেকে ৪ নম্বর জরুরি সতর্কতা জারি করা হবে।
গতকাল টানা ষষ্ঠ দিনের মতো ইংল্যান্ডে দিনের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রেকর্ড করা হয়, যা গত সাত বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
লন্ডন টাইমসের জন্য লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকেল মেডিসিনের পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে প্রথম নয় দিনে শুধু ইংল্যান্ডেই ৫৪০ থেকে ৭৬০ জনের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর এই তাপমাত্রা যদি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে, তাহলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ বলেছে, জাতীয় পরিসংখ্যানগুলোতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জা, জরাগ্রস্ততা ও ক্ষতিকর টিউমারকে দেখানো হয়েছে। কোথাও রোদ বা তাপদাহের কথার উল্লেখ নেই। আর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলা হয়, জরিপকারীরা সম্ভবত জরিপের সময় মত্যুর কারণ হিসেবে হাঁপানি বা ফুসফুসের অসুখকে চিহ্নিত করেছেন, যা তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সাধারণত বেড়ে যায়। তবে মৃত্যুর এসব কারণ-সংক্রান্ত তালিকা বছরের হিসাবে প্রকাশ করা হয়। আর গত সপ্তাহে ২০১২ সালের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে একটি মৃত্যুর বিষয় তালিকাভুক্ত হতে পাঁচ দিনের মতো সময় লাগে। সেখানে এই বিশাল সংখ্যার তালিকা সংগ্রহ সত্যিই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ ও ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, তাপদাহের ফলে ৩ নম্বর সতর্কতার মানে হলো, গরম আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা। একই সঙ্গে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর জন্য সামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা।
গত নয় দিনে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবহার অন্যান্য সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি নির্বাহী সংস্থা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে বারবার জনসাধারণকে গরম আবহাওয়ার কারণে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। সংস্থাটি লোকজনকে বেলা ১১টা থেকে তিনটা পর্যন্ত বাইরে বের না হতে বলছে। এমনকি কায়িক পরিশ্রম না করতেও বলছে। একই সঙ্গে লোকজনকে ঢিলেঢালা সুতি কাপড় পরিধান করতে ও প্রচুর পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কেন্টে রেকর্ড করা হয়। এরপরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০০৬ সালে। ওই সময় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।