সোমবার ● ১৫ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদণ্ড
গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদণ্ড
বয়স বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির পরিবর্তে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনা ৫ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬১টির অভিযোগের সবক’টিই প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে সোমবার এ রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে বলেছেন, গোলাম আযম মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য। তিনি সবকিছুর জন্য দায়ী। তিনি শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন করেছিলেন। তাদের তিনি তার অনুসারীদের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারতেন। কিন্তু সজ্ঞানে তিনি তা করেন নি। তার বয়স ৯১ বছর। শুধু এই বিবেচনা করেই এ রায় দেওয়া হলো।
ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে সরকারি-বেসরকারি পদে যেন স্বাধীনতাবিরোধীদের চাকরি না দেওয়া হয়, সেজন্য সরকারকে আদেশ দিয়েছেন।
একই সঙ্গে জামায়াতকে ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, এরা দলবদ্ধভাবে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। এ দলটি ১৯৪৭ সালে যেমন পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, তেমনিভাবে বাংলাদেশ সৃষ্টির সংগ্রামেরও বিরোধিতা করেছে।
পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত ছয়টি, সহযোগিতা সংক্রান্ত তিনটি, উস্কানির ২৮টি, সম্পৃক্ততার ২৩টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা-নির্যাতনের ১টিসহ মোট ৬১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে।
মামলার রায়ে এ ৬১টি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল এ পাঁচ ধরনের অভিযোগের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগে ১০ বছর করে, তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে ২০ বছর করে ও পঞ্চম অভিযোগে ৩০ বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন গোলাম আযমকে। এ সাজা তিনি একাধারে ভোগ করবেন বলেও রায়ে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল।
মোট রায় ২৪৩ পৃষ্ঠার, তবে সংক্ষিপ্ত আকারে ৭৫ পৃষ্ঠা পড়া হয়।
সোমবার বেলা ১১টা ৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত রায় পাঠ করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে মামলার চূড়ান্ত অর্থাৎ মূল রায়ের অংশ পড়েন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর। দুপুর দেড়টা থেকে রায়ের তৃতীয় ও শেষ অংশ পড়তে শুরু করেন তিনি। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। আর শুরুতে বেলা ১১টা ৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রায়ের প্রথম অংশ পাঠ করেন বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক। আর সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট থেকে ১০ মিনিটের সূচনা বক্তব্য দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর।