রবিবার ● ১৪ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » সৈয়দ আশরাফের পদত্যাগ
সৈয়দ আশরাফের পদত্যাগ
সব গুজবের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পদত্যাগ করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন বলে দলটির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র থেকে শনিবার দিবাগত রাতে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পর শেখ হাসিনা তা গ্রহণ না করে সৈয়দ আশরাফকে ফিরিয়ে নিতে বলেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ আশরাফের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেননি।
শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর এক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে থাকতে পারেন বলে মন্তব্য করেন।
তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ পত্র দিলেও প্রধানমন্ত্রী তা গ্রহণ করবেন না বলে মনে হয়। প্রধানমন্ত্রী হয়তো তাকেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার নির্দেশ দেবেন। তবে শিগগিরই এ বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাবে।’
এর আগে পদত্যাগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘এ খবর ভিত্তিহীন। এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
উল্লেখ্য, পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর দলের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম সমালোচিত হতে থাকেন। দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফ একেবারেই নিশ্চুপ ছিলেন।
সিটি নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখলেও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কোনো কথা বলেননি।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরাজয়ের একটি কারণ তৃণমূলের কোন্দল। বিশেষ করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কিন্তু এসব সমাধানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কোনো চেষ্টা করেননি বলে দলের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে।
সৈয়দ আশরাফের নিষ্ক্রিয়তার কারণে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেখভাল করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের উপর দেওয়া হয়।
এছাড়া সৈয়দ আশরাফের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে নেতা-কর্মীরা তার দেখা পান না। তৃণমূল নেতা-কর্মীতো দূরের কথা অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারাও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। এমন কি যোগাযোগও সম্ভব হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন অভিযোগে নেতা-কর্মীরা সৈয়দ আশরাফের উপর ক্ষুব্ধ। ক্ষুব্ধনেতা-কর্মীরা চুপ থাকলেও বেলারুশ থেকে প্রধানমন্ত্রী ফিরে আসার পর তারা সরব হয়ে ওঠেন। কেউ কেউ সরাসরি সৈয়দ আশরাফের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করেছেন বলেও জানা যায়।
এসব কারণে সৈয়দ আশরাফ অভিমান করে ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন অভিযোগের পাশাপাশি দীর্ঘ সময় নিশ্চুপ থাকায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে গুঞ্জন ওঠে সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ করেছেন।
বেলারুশ থেকে ফেরার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে সৈয়দ আশরাফ চলমান গুজবকে বাস্তবে পরিণত করেন। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে জানাজানি হয়নি।
এর আগে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়েও একবার সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ পত্র জমা দেন। তখন এ বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ ছাপা হলে পরে দল থেকে পদত্যাগ পত্রের খবর অস্বীকার করা হয়। একইসঙ্গে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানানো হয় দল থেকে।