সোমবার ● ১ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ব্যক্তিগত তথ্য যোগাযোগে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধের আহবান
ব্যক্তিগত তথ্য যোগাযোগে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধের আহবান
উন্নয়ন ও গবেষণা সংগঠন ‘ভয়েস’ ও ইক্যুইটি বিডি, সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) ল’ লাইফ কালচার, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিষ্ট ফোরাম, তথ্য অধিকার আন্দোলন, অনলাইন নলেজ সেন্টার-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার’ শীর্ষক সংলাপে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অযাচিত নজরদারি ও হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানান বক্তারা। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদের সঞ্চালনায় উক্ত সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান মান্না, নারী নেত্রী খুশি কবির, অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার রহমান প্রমুখ।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, বর্তমান টেলিকমিউনিকেশন আইন অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী যেকোন ব্যক্তির ফোন নজরদারি করতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহের জন্য অবশ্যই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিতে হবে। সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে তবে এর মাত্রা কি হবে তার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ফোন কোম্পানি ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে, তারা যাতে গোপনীয়তার পলিসি মেনে চলে সে বিষয়ে সরকারের স্বচ্ছ ও জবাবদিহমিূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে। তিনি ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সম্প্রতি অনুমোদিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২১ ধারা সুস্পষ্টভাবে ব্যক্তির মানবাধিকার ক্ষুণœ করে। ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত নানাবিধ আইন ও সরকারি নজরদারির কারণে ব্যবহারকারীর মধ্যে ভয়ভীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক চর্চা ও মতপ্রকাশের অধিকারকে ক্ষুন্ন করে।
ব্যক্তিগত তথ্য গোপণীয়তা ও মানবাধিকার বিষয়ের উপর মূল আলোচনায় রেজাউর রহমান লেলিন বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টিকে পরিপূর্ণভাবে নিরাপত্তা দেয়া হয় নি। এছাড়া তিনি, ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার বৈধ ও আইনগত দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ব্যক্তির মানবাধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ব্যত্তিগত তথ্য গোপনীয়তার অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ সমাজে গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা ব্যহত করবে। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রণীত আইন যা জনঅধিকারকে খর্ব করে তা রোধ করা উচিত।
রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ব্যক্তির স্বাতন্ত্রবোধ ও মর্যাদা কেবল আইন দ্বারা সংরক্ষণ করা যাবে না। তিনি সমাজের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন আড়িপাতা ও যেকোন ধরনের নজরদারি মানবাধিকার লংঘনের শামিল। মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ তথ্য সুরক্ষার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
ব্যক্তিগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি এবং মারবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মূলনীতিগুলো উল্লেখ করে ভয়েসের ফারজানা আক্তার বলেন, যেকোন ধরনের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণœ অবশ্যই আইনি বিধানের দ্বারা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করার আগে কোন তথ্যটি কেন, কি উদ্দ্যেশে সংগ্রহ করা হচ্ছে তা অবশ্যই সনাক্ত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এবং স্বাভাবিক সময়ে বা বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া, ব্যক্তিগত তথ্য অবশ্যই ব্যক্তির সম্মতিতে সংগ্রহ করতে হবে। সরকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যদি ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশ করতে চায় তাহলে সে বিষয়ে ব্যক্তিকে অবশ্যই অবগত করা তথ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।
এছাড়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের নির্বাহী প্রধান খায়রুজ্জামান কামাল, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, অনলাইন নলেজ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক প্রদীপ কুমার প্রমুখ।