রবিবার ● ২৬ মে ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » রবি’র অধিকাংশ শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছে ডোকোমো
রবি’র অধিকাংশ শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছে ডোকোমো
বাংলাদেশ থেকে মাত্র পাঁচ বছরের মাথায়ই নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চাচ্ছে জাপানের বিশ্বখ্যাত মোবাইল ফোন অপারেটর এনটিটি ডোকোমো। ২০০৮ সালে তখনকার একটেলের ৩০ শতাংশ শেয়ার বাংলাদেশী মালিক এ কে খানের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিল ডোকোমো। আর এখন এর মাত্র ৮ শতাংশ নিজেদের হাতে রেখে বাকি ২২ শতাংশই তারা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গেছে, ওই ২২ শতাংশ শেয়ার রবি’র মূল কোম্পানি আজিয়াটা কিনে নেবে। তবে মূল্য সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।
গত ২২ মে এক সংবাদ সম্মেলনে রবি কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে। রবি’র চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) এবং ভারপ্রাপ্ত চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ জানান, এনটিটি ডোকোমা থ্রি-জি নিলামের আগে আর কোন বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়েছে। প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ ও অনিশ্চয়তার কারণে ডোকোমো রবি’তে বিনিয়োগ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি। সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ার আজিয়াটা বারহাদ তাদের অংশীদারিত্বের পরিমাণ ৯২ শতাংশে উন্নীত করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
রবি বলছে, মোবাইল ফোন অপারেটর ও সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বিমত থাকায় বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ শিল্প এক বিরূপ পরিস্থিতিতে রয়েছে; বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মের (টু-জি) ও তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রি-জি) লাইসেন্সের ভ্যাট ছাড় না পাওয়া ও টু-জি লাইসেন্স বিধিমালার ইস্যুটি অন্যতম। এমনকি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিতেও এ বিষয়টির উল্লেখ নেই। তাই দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা এবং বিনিয়োগের তুলনায় লাভের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য না হওয়ায় বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের বদলে রবি থেকে অংশীদারিত্ব কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনটিটি ডোকোমো।
রবি কর্তৃপক্ষ বলছে, এনবিআর’র সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিতে তরঙ্গ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভ্যাটের ইস্যুতে সরকারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নও সে ইস্যুতে কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তাই থ্রি-জি নিলামে অংশগ্রহণের বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এর আগে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে একটেলের ৩০ শতাংশের শেয়ার কেনে ডোকোমো। একই সঙ্গে তখনকার আইন অনুসারে এ কে খান গ্রুপকে কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের সময় উক্ত এ কে খান গ্রুপকে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপর ৫ দশমিক ৫% হারে ১ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের সমমূল্যের ১৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা হস্তান্তর ফি হিসেবে বিটিআরসিতে জমা করে তারা।
এদিকে বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) রবির মোট আয় ১০৮০ কোটি টাকা যা গত প্রান্তিকের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। সিম কার্ডের ওপর উচ্চ করারোপ করায় সেই খাতে টাকা পরিশোধের পর কোম্পানির লভ্যাংশের পরিমাণ (পিএটি’র) পরিমাণ ছিল ১১৩ কোটি টাকা। যা ২০১২ সালে পিএটি’র পরিমাণ ছিল ৯১ কোটি টাকা। একই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির ৬৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ২০১২ সালে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) মাধ্যমে ১৭ হাজার ৫৫৭ মিলিয়ন টাকা দেশে এনেছে রবি। কিন্তু সে অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ প্রদান করা হয়নি। অন্যদিকে ২০০৬ সাল থেকে রবি তাদের শেয়ার হোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ প্রদান করেনি, কিন্তু এ সময়ের মধ্যে ২৬ হাজার ৭৭৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে রবি। যাত্রা শুরুর দুই বছর পর ২০০৮ সালে ডোকোমা রবি’র সাথে অংশ নেয়।