শনিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » চলছে নীরব মরনঘাত; কারন ফরমালিন!
চলছে নীরব মরনঘাত; কারন ফরমালিন!
ঢাকা শহরের একটা মেসে থাকি। মেসের সিস্টেম হল প্রত্যেককে ৪ দিন করে বাজার করতে হবে। ১৫ দিন আগে যখন আমার বাজার ছিল তখন অন্যান্য বাজারের সাথে ১ কেজি টমেটো কিনেছিলাম। তারপর কারো বাজারেই টমেটো কেনা হয়নি। আজ রান্নাঘরে গিয়ে দেখি এখনও একটা টমেটো অবশিষ্ট আছে তবে এটা ঠিক আগের মতোই ১৫ দিন আগে ঠিক যেমনটি ছিল। এতে আর সন্দেহ রইল না যে টমেটোতে ফরমালিন দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থাটি দেখে চোখে পানি চলে আসলো। কি খাচ্ছি আমরা!
সুধু অই টমেটো নয় বর্তমানে প্রায় সকল খাবারে এই মারাক্তক পদার্থটির মিশ্রণ লক্ষ করা যায়।জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের (আইপিএইচ) অধীনে ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরী তাদের গবেষণালব্দ তথ্য ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, দেশের মানুষ প্রতিদিন যে মাছ, মাংস, দুধ, ফল-মূল, চাল, ডাল, তেল, মসলা ও লবণ খাচ্ছে, তার শতকরা ৪০ থেকে ৫৪ ভাগেই ভেজাল রয়েছে। এসব খাদ্যে বিভিন্ন কীটনাশক, যেমন- এন্ড্রিন, ডিডিটি, হেপ্টাকোর, মেথোক্সিকোর, ইথিয়ন; ভারী ধাতু সিসা, আর্সেনিক এবং স্ট্যাফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে।
জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ২০১০ সালে ৫৭৫৯টি খাদ্যের নমুনার মধ্যে ভেজাল পেয়েছে ২৯৯০টিতে। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানটি ৩৭৭ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৭ টিতেই ভেজাল পায়।
ভেজাল এবং ফরমালিনযুক্ত খাবারের ফলে ডায়রিয়া থেকে শুরু করে ফুসফুসের সংক্রমণ, কিডনি ও লিভার পচে যাওয়া, রক্ত সরবরাহ বিঘিœত হওয়া, অন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। খাদ্যের পুষ্টিমান ২০-৪০% কমে যায়। ফরমালিন এততাই বিষাক্ত যে তা ডিএনএকে বদলে দিতে পারে। বাংলাদেশের শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারন হচ্ছে এই ফরমালিন।
ফরমালিন নিয়ন্ত্রনে বিভিন্ন আইন যেমনঃ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬, বিএসটিআই (সংশোধিত) আইন, ২০০৩, পরিবেশ সংরণ আইন, ১৯৯৫, বিশুদ্ধ খাদ্য (সংশোধিত) আইন, ২০০৫, মোবাইল কোর্ট অডিনেন্স ২০০৯, ভোক্তা অধিকার সংরণ আইন,২০০৯ ইত্যাদি হলেও এর প্রয়োগ দেখা যায় না।
আসুন আমরা সবাই মিলে ফরমালিনের বিপক্ষে না বলি এবং এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।