মঙ্গলবার ● ১৬ এপ্রিল ২০১৩
প্রথম পাতা » আলোচিত সংবাদ » মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষকের ৬০ বছর কারাদন্ড
মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষকের ৬০ বছর কারাদন্ড
মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে জামাল উদ্দিন নামে এক ধর্ষককে দু’বার যাবজ্জীবন অর্থাৎ ৬০ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার করে এক লক্ষ টাকা জরিমানা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।একই রায়ে আদালত অপহরণে সহায়তার অভিযোগে ধর্ষকের ছোট ভাই কামাল উদ্দিন, ভগ্নিপতি দুলাল এবং বন্ধু ইসমাইলকে ১৪ বছরের কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। এছাড়া আদালত মেহেরুন্নেছা নামে ধর্ষকের এক বোনকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো.রেজাউল করিম এ রায় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘ধর্ষক জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের দু’টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৃথকভাবে দু’বার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী তাকে ৩০ বছর করে ৬০ বছর কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। দু’টি সাজা একটির পর আরেকটি কার্যকর হবে।’
এছাড়া বাকি তিন আসামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অপহরণের অভিযোগ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারায় তাদেরও শাস্তি হয়েছে বলে জানান পিপি চন্দন তালুকদার।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ২৭ জুন বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের মতিন্যার পুলের পশ্চিম পাশ থেকে স্থানীয় ছনুয়া কুতুবখালী হোসাইনিয়া মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রতিবেশি জামালসহ দন্ডিতরা।
এরপর তাকে নগরীর চাক্তাই এলাকার চেয়ারম্যান কলোনিতে একটি কক্ষে টানা চারদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে জামাল। খবের পেয়ে ওই ছাত্রীর চাচা এবং চাক্তাই এলাকার বাসিন্দা জনৈক রফিক সওদাগর তার লোকজন নিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ২০০৬ সালের ২ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে বাঁশখালী থানায় ছয়জনকে আসামীর করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন, জামাল উদ্দিন ও তার ছোট ভাই কামাল উদ্দিন, তাদের দু’বোন নূরুন্নেছা ও মেহেরুন্নেছা এবং নূরুন্নেছার স্বামী দুলাল ও জামালের বন্ধু ইসমাইল।
প্রায় তিন মাস তদন্তের পর ২০০৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ২০০৪ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ এবং ৯ (১) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০০৭ সালের ২২ জুলাই আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
সূত্র জানায়, আদালতে বিচার চলাকালীন সময়ে আসামী নূরুন্নেছা মারা যান। এ কারণে তার নাম বিচার কার্যক্রম থেকে বাদ দেয়া হয়। বাকি আসামীরা সবাই পলাতক আছেন।