মঙ্গলবার ● ২ এপ্রিল ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » গণজাগরণ মঞ্চের ”জয় বাংলা” আর উচ্চারিত হবেনা
গণজাগরণ মঞ্চের ”জয় বাংলা” আর উচ্চারিত হবেনা
।। নিউজ আপডেট ।। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মত ব্যক্ত করা হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে। এ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মঞ্চ গুটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের গত রোববারের বৈঠকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কয়েকজন গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তাঁরা বলেন, সরকারকে হুমকি দিয়ে ইমরান বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘সরকারের এত স্পর্ধা কোথায় যে আমাদের দাবি মানছে না!’ এ ভাষায় তিনি কথা বলতে পারেন না। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, আজ অনেকেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ধারক-বাহক হয়ে গেছেন। আজ যাঁরা শাহবাগে গলা ফাটাচ্ছেন, তাঁরাই অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শেখ হাসিনা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় ‘শেম শেম’ ধ্বনি দিয়েছেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের এটা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এ মঞ্চ দীর্ঘায়িত হলে মূল চেতনা বিনষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের পক্ষে চেতনা জাগানোর জন্য গণজাগরণ মঞ্চের ভূমিকা অসাধারণ। তবে সবকিছুর শেষ আছে। সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক সমস্যা। গণজাগরণ মঞ্চ, ধর্মরক্ষার আন্দোলন, এমনকি খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও আমাদের করতে হয়। যে তরুণেরা গণজাগরণ মঞ্চ এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে এ মঞ্চ গুটিয়ে ফেলা দরকার।’
সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, আমি গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এটা ঠিক নয়। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই।’ এ সময় সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী লেনিনকে বলেন, ‘আপনি নিজের গায়ে মাখছেন কেন? আপনাকে তো কেউ দায়ী করেনি।’ এ পর্যায়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ হয়ে যেত, কিন্তু ব্লগার রাজীব খুন হওয়ার পর এটা বন্ধ করা যায়নি। দীর্ঘায়িত হয়েছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা ঠিক নয়। আবেগ দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হয় বাস্তবতার নিরিখে। তিনি গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।
গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ৪ এপ্রিল জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ-পদযাত্রাসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে। ৫ এপ্রিল রয়েছে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়া ৬ এপ্রিল প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এর পরও সরকার দাবি না মানলে লংমার্চ, ঢাকা ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করবে গণজাগরণ মঞ্চ।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে গণজাগরণ মঞ্চ গুটিয়ে ফেলার পরামর্শ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইমরান এইচ সরকার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।