সোমবার ● ২৫ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » আলোচিত সংবাদ » প্রাইম ব্যাংক এর ২০ কোটি টাকা জালিয়াতি
প্রাইম ব্যাংক এর ২০ কোটি টাকা জালিয়াতি
।। নিউজ আপডেট ।। সাধারণ গ্রাহকের পকেট কাটলো প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। গ্রাহকের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে ২০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে ব্যাংকটি। সঙ্গে ভ্যাট হিসেবে নিয়েছে আরও ৩০টাকা করে।১০ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে এ অর্থ নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মূলত মুনাফা বাড়াতেই এটি করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তবে যারা এর প্রতিবাদ করেছেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সুকৌশলে গোপনীয়তার সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসাবে টাকা ফেরত দিচ্ছেন।
ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রাইম ব্যাংকের মোট শাখা রয়েছে ১৩২টি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ (এসএমই) শাখা রয়েছে আরও ১৭টি। এসব শাখায় মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। বিদায়ী বছরের হিসাব থেকে বার্ষিক হিসাব চার্জ হিসেবে তারা প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করে ২শ টাকা। কিন্তু হিসাব খোলার শর্ত মোতাবেক, প্রত্যেক ব্যাংক তার গ্রাহককে বছরে দুটি হিসাব বিবরণী দেয়, কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই।
অথচ প্রাইম ব্যাংক জানুয়ারি মাসে এসে প্রত্যেক গ্রাহকের হিসাব থেকে গণহারে ২শ টাকা কাটা শুরু করে। এভাবে ব্যাংকটি তাদের ১০ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে এই ফি কেটে নেয়। একাধিক গ্রাহক সরাসরি বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সঙ্গে ভ্যাট হিসেবে কাটে আরও ৩০ টাকা করে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো নোট বা নোটিশ দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে সচেতন গ্রাহকদের অনেকেই অভিযোগ এনেছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে। অনেকেই গিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্রে। যারা এসব জায়গায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাদের বিষয়ে অবশ্য ভিন্ন নীতি!
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “আমি আমার বেতনের চেক লেনদেন করি প্রাইম ব্যাংকের মাধ্যমে। গত ১২ জানুয়ারি অনলাইন হিসাব বিবরণীতে দেখি ২শ ৩০ টাকা কেটে নিয়েছে ব্যাংক। কারণ, হিসাব বিবরণী ফি। কিন্তু, আমি বিগত এক বছরে কোনো হিসাব বিবরণী চাইনি। আবার বছরে যে দুটি হিসাব বিবরণী বিনা খরচে পাওয়ার কথা, সেটিও কোনোদিন পাইনি।”
সরকারের উপ-সচিব পদ মর্যাদার ওই কর্মকর্তা বলেন, “এর পর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে আমি আমার এক আত্মীয়ের কাছে মৌখিকভাবে জানাই। তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন ব্যাংক থেকে আমাকে জানানো হয়, আমার হিসাবে টাকা যোগ করে দেওয়া হবে।”
ওই কর্মকর্তা বলেন, “গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমার হিসাব থেকে কেটে নেওয়া ২শ ৩০ টাকা আবার ফেরত দেয়।”
জানা গেছে, যে কজন গ্রাহক এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং হিসাব বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন, তাদেরই মূলত অন্যায়ভাবে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০ লাখ গ্রাহকদের স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে তারা এটি করেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসান খসরুকে লিখিতভাবে জানিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কয়েক দফা টেলিফোন করেও পাওয়া যায়নি। তার দপ্তরে ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারবো না। আমরা তো আর এমন সিদ্ধান্ত নিইনি। এমডি এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। তার কাছেই জিজ্ঞাসা করেন।”
সূত্র- বাংলানিউজ