মঙ্গলবার ● ১২ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » গ্রামীণফোন থ্রিজি’র নিলামে অংশ নিবেনা !!
গ্রামীণফোন থ্রিজি’র নিলামে অংশ নিবেনা !!
থার্ড জেনারেশন মোবাইল টেলিফোন লাইসেন্স নিলামের আগেই কিছু বিষয়ে পরিস্কার হতে চায় গ্রামীণফোন। টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে বিদ্যমান শঙ্কটগুলো না মিটলে গ্রামীণফোন থ্রিজি’র নিলামে অংশ নিতে চায় না। দেশের বৃহৎ এই মোবাইল ফোন অপারেটরের চেয়ারম্যান সিগভে ব্রেক্কি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন টেলিফোন অপারেশনে বেশকিছু অস্পষ্টতা ও অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। আমরা তাতে উদ্বিগ্ন এবং বার বার করে আমরা সরকারকে সে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। গত রোববার ঢাকায় একদল সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে ব্রেক্কি আবারও তার উদ্বেগের কথাই জানান। তিনি বলেন, আমরা ইন্ডাস্ট্রির সবাই চেয়েছি থ্রিজি’র নিলামের আগেই কিছু বিষয় সমাধান হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আর সেকথা মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি’কে বারবারই বলা হয়েছে।বাংলাদেশে গ্রামীণফোন আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায়, কিন্তু সরকার অমিমাংসিত ও অস্পষ্ট বিষয়গুলো সমাধান না করলে আমাদের সে সুযোগ থাকবে না।
ইন্ডাস্ট্রির ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য একটি সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো খুব প্রয়োজন বলেও মত দেন ব্রেক্কি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে টেলিকম অপারেটরদের জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে তথ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। জিপি চায় সকল গ্রাহককেই ইন্টারনেট সেবা দিতে। এটাই এখন মানুষের বড় প্রত্যাশা এবং জিপি তাদের কাছে সেই সেবা নিয়েই হাজির হতে চায়।
জিপি চেয়ারম্যান জানান, তাদের প্রধান উদ্বেগ টুজি স্পেক্ট্রাম লাইসেন্সের জন্য ভ্যাট ছাড় না পাওয়া। তিনি বলেন, গেলো বছর যখন লাইসেন্স নবায়ন করতে হলো তখন গ্রামীণফোনসহ চারটি অপারেটরকে নবায়ন ফি’র সঙ্গে ১৫% ভ্যাটের টাকা চাওয়া হয়। অন্য অপারেটরদের মতো গ্রামীণফোনও সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। আদালতের রায়ও আসে গ্রামীণের পক্ষে। কিন্তু বিটিআরসি ও এনবিআর বিষয়টি আপিল বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে মামলাটি এখনো সুরাহা হয়নি। এরপর এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে কিন্তু ঝুলে আছে ভ্যাট ইস্যু।
এরওপর যোগ হয়েছে সরকারের নিয়োগ করা গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সাম্প্রতিক একটি অন্তবর্তীকালীন রিপোর্ট, উদ্বেগের সঙ্গে বলেন সিগভে ব্রেক্কি। তিনি বলেন, এই রিপোর্ট গ্রামীণফোন ও টেলেনরকে হতাশ করেছে। কারণ এই রিপোর্টে গ্রামীণফোনকে টেনেহিঁচড়ে এমন একটি ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে যার সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। ব্রেক্কি বলেন, কমিশনের কাজ গ্রামীণব্যাংকে নিয়ে, কিন্তু খামোখাই তারা সেখানে গ্রামীণফোনকে টেনে আনছে। তিনি বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই এই রিপোর্ট আদৌ বাস্তবভিত্তিক নয়। আমরা পুরোনো নথিপত্র ঘেটে দেখেছি এবং নিশ্চিত হয়েছি গ্রামীণফোনের লাইসেন্স নিয়ে সামান্য ঘাপলা থাকারও অবকাশ নেই।
গ্রামীণফোন এখন সরকারের সঙ্গে বসতে চায় এবং বিষয়গুলোর একটি সুরাহা করতে চায়, বলেন ব্রেক্কি।
এদিকে, এরই ধারাবাহিকতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে রোববার বৈঠক হয় সিগভে ব্রেক্কির। ওই বৈঠকের পর সরকার গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বাতিল করবে না বলে সোমবার সাংবাদিকদের কাছে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বাতিলের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই। কারণ, আমরা বিদেশি বিনিয়োগ চাই। তবে গ্রামীণফোনকে নিয়ে যে সংকট, তার সমাধানে বিকল্প বের করা হচ্ছে। সংকট উত্তরণে এখানে সরকারের সঙ্গে নরওয়ে সরকার প্রয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে।”