সোমবার ● ১১ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ শতাধিক আটক
বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ শতাধিক আটক
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের সময় নীরব থাকলেও পরে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পুলিশ আটক করে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক ও বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকসহ শতাধিক নেতা-কর্মীকে।
এ সময় বিএনপির মহাসচিবের কক্ষের দরজা ভেঙে আটক করা হয় ভেতরে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীদেরও। ককটেল বিস্ফোরণের পর শতাধিক নেতা-কর্মী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নিয়েছিলেন। কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে তাঁদের প্রায় সবাইকে আটক করে পুলিশ। তবে এ সময় দলের যেসব নারী কর্মী কার্যালয়ের ভেতরে ছিলেন, তাঁদের কাউকে আটক করা হয়নি। এদিকে, পুলিশের অভিযান চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি হাতবোমাও উদ্ধার করা হয়। রাত আটটার পরে বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান শেষ হয়।
আজ সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে ১৮ দলের সমাবেশের শেষপর্যায়ে সমাবেশস্থলের কাছে ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এর পরপরই ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন এবং ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা ভাঙচুর চালান তাঁরা । এ সময় পুলিশ ও র্যাব ছিল নীরব।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। একপর্যায়ে তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে তল্লাশি চালাতে শুরু করে।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে প্রথমে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে নিচে নিয়ে আসে। একটু পর তাঁকে আবার তৃতীয় তলায় উঠতে দেখা যায়। এর একটু পর পুলিশ আবারও তাঁকে নিচে নিয়ে আসে এবং একটি পুলিশ ভ্যানে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আটক করা হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক ও বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে আটক করে।
এ সময় কার্যালয়ের ভেতরে যাঁদের পাওয়া গেছে, প্রায় সবাইকেই পুলিশ আটক করে। কার্যালয় ও আশপাশের এলাকা থেকে শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঠিক কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা পুলিশের কাছ থেকে জানা যায়নি।
পল্টন থানার পুলিশ জানায়, কার্যালয়ের প্রতিটি তলায় বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী আছেন, তাঁদের সবাইকে আটক করা হবে।
আটকের সময় মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমকর্মীদের বলতে থাকেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা করে আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছি। তার পরও আমাকে বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ তিনি এ সময় পুলিশের কাছে জানতে চান, কার নির্দেশে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কার্যালয়ের সামনে পুলিশের একটি গাড়ির কাছে ফখরুলকে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্যালয়ের সামনে পুলিশ, সাংবাদিকদের ভিড় জমে। একপর্যায়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি জানি না, কেন আমাকে বের করা হয়েছে।’ সেখান থেকে আবার মির্জা ফখরুলকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়। পরে তাঁকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে রিজভীকেও আটক করা হয়। বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরে বেশ কয়েকজন নারী কর্মী রয়েছেন বলে জানা গেছে। কার্যালয়ে চালানো অভিযানে নারী পুলিশও রয়েছেন। অভিযানে নারী কর্মীরা আতঙ্কে আছেন।
আটকের সময় ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা বলেন, এই সরকারই শেষ সরকার নয়। সরকার বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্র - প্রথম আলো