বুধবার ● ২৭ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ই-মেইলের মৃত্যু !
ই-মেইলের মৃত্যু !
৷৷ আইসিটি নিউজ ৷৷ অনলাইনে অন্যতম জনপ্রিয় যোগাযোগব্যবস্থা ই-মেইলের অবসান ঘটানোর চিন্তা করছেন কয়েকজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা অফিস সময়ের এক-তৃতীয়াংশ ই-মেইলের পেছনে কাটান- এ অভিযোগে এর মৃত্যু কামনা করছেন জার্মানিতে অনুষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তি মেলা সিবিটে উপস্থিত কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। খবর এএফপির।
ই-মেইলের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে ফরাসি প্রতিষ্ঠান অ্যাটোস। কোম্পানিটি বিকল্প হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো ব্যবস্থা চালু করার চিন্তা করছে। আগামী বছরই তাদের অভ্যন্তরীণ দাফতরিক কাজ ই-মেইলমুক্ত করার চিন্তা করছে। সিবিট মেলায় তারায় এ-বিষয়ক একটি প্রকল্প প্রদর্শন করছে। অ্যাটোসের নেতৃত্বে আছেন ফ্র্যান্সের সাবেক অর্থমন্ত্রী থিয়েরি ব্রেটন। তিনি বলেন ‘ আমি ই-মেইলমুক্ত সমাজ চাই। বিকল্প ব্যবস্থা চালু হলে শিল্প বিপ্লবের পর যে পরিবেশদূষণ শুরু হয়েছে, তা কমবে।’
অ্যাটোসের প্রকল্পটির প্রধান রবার্ট শ এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান একটি পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কর্মপরিবেশ চায়। এজন্য ২০১৪ সাল নাগাদ ই-মেইলের বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হবে।’
প্রতিষ্ঠানটির ২০ হাজার কর্মী এখন ‘ব্লুকিইউ’ নামের প্রকল্পে অংশ নিয়ে বার্তা আদান-প্রদান করছেন। অ্যাটোস মনে করে, বিকল্প বার্তা আদান-প্রদান ব্যবস্থায় একটি প্রতিষ্ঠানের উত্পাদনশীলতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
কিছুদিন আগে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনসের জরিপে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দিনের ২৮ শতাংশ সময় শত শত ই-মেইল পড়া, কম্পোজ করা কিংবা শুধু শুধু ঘাঁটাঘাঁটি করে অপচয় করেন।
ই-মেইলের এ মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কেবল অ্যাটোসই বিরক্ত নয়। এ তালিকায় রয়েছে ল্যানভি, ডেলয়েট ও ইন্টেলের মতো প্রতিষ্ঠান। ই-মেইল ব্যবহার না করেও যে ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করা যায়, এ রকম কিছু উদাহরণ টানেন ই-মেইলবিরোধীরা। যেমন আইবিএম কর্মকর্তা লুই সুয়ারেজ গত পাঁচ বছরে খুব কম সময়ই ই-মেইলসেবার শরণাপন্ন নেন। তার পরও তিনি প্রতিষ্ঠানটির ‘বিজনেস ২.০’-এর প্রচারণার দায়িত্ব ঠিকভাবেই পালন করে চলেছেন।
ই-মেইলের উপকারিতা অস্বীকার করেননি কোনো বিশেষজ্ঞই। জার্মানিভিত্তিক লবিং প্রতিষ্ঠান বিটকমের প্রধান ডায়েটার কেম্ফ বলেন, ‘আমাদের সমাজে যোগাযোগব্যবস্থায় ই-মেইলের অসামান্য অবদান নিয়ে কোনো সন্দে নেই। তবে এ ব্যবস্থায় অনেকে একসঙ্গে অংশ নিতে পারেন না। এটা যথেষ্ট স্বচ্ছ ও মুক্ত নয়। আমি মনে করি, স্যোসাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মতো বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে পারি আমরা।’
তবে ই-মেইলকে পুরোপুরি বিদায় জানানো সহজ নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষক টম রেনার। তিনি বলেন, ‘এটা হয়তো একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ কাজের ক্ষেত্রে সম্ভব। কিন্তু সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করবেন আপনি?’