সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » জোনাকি
জোনাকি
দুপুরবেলা মোবাইলের শব্দে ঘুম ভাঙ্গল। রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসল মিষ্টি একটা সুর। পরিচয় শুনে নির্বাক হয়ে যাই। ব্যকুল হৃদয়টা যাকে চায় সেই আজ ধরা দিল ভাবতে স্বপ্নের মত লাগছে। তিন বছর আগে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাকে দেখেছিলাম, এরপর আর দেখা হয়নি। তবে তাকে আমি ছোট থেকেই চিনতাম। সেখান থেকেই আমার ভালবাসার শুভযাত্রা। ওর রূপ-যৌবন বা অন্য কিছুতেও লোভ নেই আমার। তাহলে কেন ভালবাসি তাকে? জানি না! আসলে সত্যিকারের ভালবাসার কোন কারণ থাকে না। অপেক্ষার তিনটি বছর খুব কষ্টে কেটেছে। একতরফা ভালবাসার যন্ত্রনাটা কেবল ভুক্তভোগীরাই বুঝেন। কিন্তু আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েও হল না। আমার সাথে দেখা করে তারপর তার ভালবাসার কথাটা বলবে। খুব ভয় হচ্ছে আমার। আমি দেখতে সুদর্শন নই, আনস্মার্ট ও কুৎসিত। আমার মাঝে হিরোইজম বলতে কিছুই নেই। ভয়ে ভয়ে তার সাথে দেখা করতে গেলাম। গ্রামের মানুষের দৃষ্টি অন্যরকম। পাখ দেখলে বলে পাখি উড়ছে। সেই ভয়ে তার সামনে বেশিক্ষন থাকিনি। বিকেলে ফোন দিয়ে বুঝতে পারলাম আমাকে ওর পছন্দ হয়নি। খুব কেঁদেছিলাম সেদিন। ওকে আমার ভালবাসার কথাটা না বললেই মনে হয় ভালো হত। আচ্ছা দৈহিক সৌন্দর্যই কি সবকিছু? আমি সুন্দর মনের অধিকারী, মনুষত্বের দেউলিয়া এটাই বা কম কি! ঝুলন্ত একটা সর্ম্পকের মত কথা হয় তার সাথে। এতে আরও বেশি কষ্ট হয়। আমি এভাবে থাকতে চাই না। কিন্তু যখন নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইলাম তখনই সে আমাকে আঁকড়ে ধরল। প্রথম বার কোন মেয়ে আমাকে I Love You বলল। এই ফিলিংসটা কাউকে বলে বুঝানো কঠিন। আমার ভালবাসাময় দিনগুলো ভালোই কাটঁছে। মনের মধ্যে অদ্ভূত একটা ভাললাগা লেগেই থাকে। শ্যাম্পু করা চুলের মতই সবকিছু ফুরফুরে লাগে। সুখ-দুঃখ সবাই ভাগাভাগি হয়। মান-অভিমানও হয়। আমার কাছে ওর একটা ছবি আছে। একা থাকলে ঐ ছবির সাথে কথা বলি। পড়ালেখা, ওঠা-বসা, চলাফেরা ঘুম-খাওয়া সব সময়ই তাকে অনুভব করি, যেন সবকিছুতেই সে মিশে আছে। সম্পর্ক হওয়ার সাত মাস পর দেখা করলাম। সেদিনই প্রথম বার কোন মেয়ের হাত ধরেছি। এই অনুভূতিটা বুঝানোর কোন ভাষা আমার কাছে নেই। এত ভাললাগার মাঝেও খারাপ লাগে কারন তার নিজস্ব ফোন নেই বলে যখন ইচ্ছা কথা বলা যায় না। কথা বলার সুযোগ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় আমাকে। এর মধ্যে নতুন আরেকটি সমস্যা প্রসব হলো। ওর পরিবারের সবাই বিষয়টা জেনে গেছে। পরিবারের নিষেধ না মানায় লাঞ্চনা-অপমান, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সব নীরবে সইতে হচ্ছে তাকে। গ্রামীন সমাজটা তাকে নষ্টও বানালো আমাকে ভালোবাসার অপরাধে। Just আমাকে ভালোবেসে সে আজ সবার কাছে নীচু। সব দোষ আমার। আচ্ছা এখন থেকে প্রতিদিন কথা বলতে হবে না। সপ্তাহে একদিন হলেই হবে। বছরে একবার দেখা করব। আমাদের বন্ধন হবে পবিত্রতায় পরিপূর্ণ। সততা যদি সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা হয় তবে তাকে যে পথেই খুজঁব। কিশোরীর-আবেগময় ভালবাসার জোয়ারে ভাসছি আমি। যাকে আমি রাডার বানিয়েছি তাকে ছাড়া আমার ভালোবাসার জাহাজটা তীরে পৌঁছবে কিভাবে। আমি প্রতিদিনই তার অপেক্ষায় থাকি। এই অপেক্ষা শেষ হবে কি? হবে কি করে। সে যে এখন রাক্ষস পুরীতে বন্দী। আমার অপেক্ষার প্রহরগুলো শুধুই তার…………যে প্রহরে শুধু তার কথা ভাবি…….. যে প্রহরে স্বপ্ন দেখে অশ্রু ঝরে………… যে প্রহরে নিজেকে একা মনে হয়………..যে প্রহরটা শুধু তার জন্য হলেও তার ফিরে আসার আশা খুজে পাই না। আধাঁর মানিকের মতই তার ভালবাসা শুধু জ্বলে আর নিভে। তাই ভালোবেসে তার নাম রেখেছিলাম জোনাকি।লিখেছেন- ইফতেখার আলম (মিল্টন)
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়