সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » ভালোবাসা প্রনোদনা
ভালোবাসা প্রনোদনা
বারবার আকাঙ্খার দেয়ালে মাথা কুটে মরেছি আর ব্যাকুল পাথার উথলে উঠেছে-
জিজ্ঞাসায়- ও জলময়ুরী- রবীন্দ্রনাথের কবিতা হয়ে আর কতদূর নিয়ে যাবে আমাকে। পরিশীলিত দ্যোতনায় তোমার লাবণ্যনদী তে ঝাঁপ দিয়ে খুঁজেছি পদ্মার উচ্ছ্বাস। আমারই পরশী নদীর পললে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে এলোপাথারী বসন্তÑবাতাসের ঝাপটায় চেতনামগ্ন দোয়েলটা নেচে উঠেছে বহুবার, ভালবাসার তৃষ্ণায় কাতর এক চাতক পল্লবহীন বৃক্ষে করুণ করে রেখেছিলো চৈতালী ঝিলের বিশাল শূণ্যতা কে। শুভ্র তূলোটÑমেঘের দেশ থেকে অন্তরের গোপন ঘুমষি পড়া দগ্ধপটে ঢেলে দিয়েছো প্রেম সোহাগের অমিয় ধারা।
তোমার যুগল চোখের গভীরতায় আচ্ছন্ন বলে- আমাকে আর মোনালিসা খুঁজতে এখানে ওখানে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়না। আমি প্রতিদিনই তোমার সৌন্দর্যের ভেতরটা ছুঁয়ে দেখার প্রত্যাশী থেকেই টের পাই সুন্দরবনের সবকটা সুন্দরী গাছের পাতায় কেঁপে ওটা বিকেলরোদ্দুর আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মৌন এক হেঁটে চলেছি প্রেয়সীয় উপমায় গড়া সবুজ ইন্দ্রজাল ভেদ করে। চঞ্চলতার নানান প্রেষণে দুঃসময়ের নির্বাসন থেকে আড়মোড়া ভাঙ্গি কেবলই ওই সুন্দরে আকন্ঠ নিমজ্জনে। চৈতালী বাউরী ছন্দে ভর করে ছুটে চলা ধূলোট মেঠোপথে তাড়িত হয়েছি বহুবার। এখনো ওই রোদ্দুরে স্নান করতে করতে চরপাখালীর জলসায় হারাই। খুব সাবধানে তুলে আনা জলজ শৈবাল, শালুক, কলমি পরিবারের কন্যারা ঝিলের পাড় সরব করে তুলছিলো, আমার প্রেমচড়-ই বালিয়াড়িতে ব্যস্ত লুটোপুটিতে। কাব্যÑচর্চায় অনিমেষ প্রাণাধিক জীবনের ঝলসানো স্মৃতির ক্ষত সারিয়ে দিচ্ছিলো বলে নিয়তই ছুটছি ওরই সন্ধানে।
কৃত্রিম ভালবাসার মার্বেলউঠোনে কঠিন ঘর্ষণে আক্লিষ্ট পদযুগল, নূপুরের শব্দ অর্থহীন। সীসার বিষে ফুটো হয়ে যাওয়া ফুসফুসের চেনাগলির মোড়ে মৃত্যুর নকিব প্রস্তুত। আকুতিগুলো পৌছেনা আকাশের কোথাও। এককেন্দ্রিক মনমানসিকতার আচ্ছন্ন চাঁদ উঠে সূর্য ডোবে ; সূর্য আসে চাঁদ যায়। দিন বদলায় সময়ের ঘোড়া চলে টগবগ, টগবগ। রূপকথার রাজকুমার আসেনা, রাজকুমারীর ঘুম ভাঙ্গেনা। স্বার্থ, কোন্দল, বৈষয়িক চাহিদার বাজারে সিনেমাটিক কাহিনীর আর্বতে নদীপ্রকৃতি গতিরূদ্ধ। প্রতারণা, বিশ্বাসের হৃদপিন্ডে ধ্বস্, নোংরামীর পরাকাষ্ঠার সামনে নতজানু প্রেম ভালবাসার কাহিনী গুলো ছবি হয়ে যায়, কেবলই ছবি। পঙ্গু মানসিকতার আঁকড় হয়ে চারপাশের বাতাসকে করেছে অক্সিজেনহীন।
জলময়ূরীর জলখেলিতে নানান অনুষঙ্গে বিষন্ন বকুলেরা চোখমুছে ঘুরে দাঁড়ায়। আমাকে ঘুরে দাঁড়াতে বলে। বিশ্বাসের প্রাবল্যে ফিকেরং আশার হেঁয়ালীপনার জাল ছিঁড়ে জেগে উঠতে বলে।
তোমার আমার আকাশমাটি চুম্বনে সিক্ত আমেজ থেকে উঠে আসা কাব্যময় দিবসÑরজনীকে ভালোবাসার শব্দে শব্দে বাঙময় করে তুলবে বলেই এই স্বাচ্ছন্দময় সঞ্চালন। বিশ্বাসের আঙ্গিকে স্বাগতিক প্রেমমঞ্চে কিছুটা বৈশ্বিক আভাষে ইঙ্গিতে কথাগুলো রচনা করুক অরুণপ্রভাতের নবজাতক কবিতা। মানসিক ঔদার্যে মন্ডিত কাব্যকণার তূষারহিমে পর্যুদস্ত স্থবিরতা নয়। অশূচ তান্ডবে ঝলসানো নগর নয়, এসিডে পোড়া পবিত্র কুমারী বোনের বিকৃত মুখ নয়, ভালবাসা কেবলি ভালবাসার উড়ালপঙ্খী বসুক বারবার শুকনো মরাডালে সবুজকে জাগিয়ে দিতে।
লিখেছেন - মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
শ্যামগঞ্জ, ময়মনসিংহ