সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » অপ্রকাশিত প্রেমিক
অপ্রকাশিত প্রেমিক
সঞ্চিতা, তোমাকেই বলছি। এখন রাত দুইটা। তুমি হয়তো ঘুমিয়ে আছ, নয়তো পড়ছো । তোমার ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষা সন্নিকটে, তুমি হয়তো এসএসসি- এর মত এইচএচসিতেও এ+ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছো; আমি রাত জেগে গল্প, কবিতা, নাটকের স্ত্রি”প্ট লেখার পাশাপাশি তোমাকে মনে করছি। যখন নিঝুম রাত্রে বড় একা বোধ করি, তখন কম্পিটারের সামনে বসে থেকে তোমার ছবিগুল্লো দেখি। কোন ছবি জানো? “থ্রি লেডি ইডিয়ট’স” স্বল্পদৈর্ঘ্যর চলচ্চিত্রের মহরতের ছবিগুল্লো। ছবিগুল্লো আমি জুম আউট-ইন করে অনেকক্ষণ ধরে দেখি, যতক্ষন না মন শান্ত হয়। এই চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিল তোমার। তুমিই প্রধান চরিত্র আর রিহার্সেলে সেই তুমিই নেই; এই অবস্থায় বিনা পয়সার শিক্ষক হয়ে প্রতিদিন তোমাকে রিহার্সেল করাতে যেতে লাগলাম তোমার বাসায়। তোমাদের বাসাতে রিহার্সেলের প্রথম দিন বিকালে প্রায় আধা ঘন্টা আগে গিয়ে তোমার মায়ের কাছে আমার সম্বন্ধে একটু বেশিই বলে ফেলেছিলাম; মনে হচ্ছিল আমি যেন কনের মায়ের কাছে ‘আমি কেন তার মেয়ের জন্য যোগ্য?’ এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলাম। কথার শেষের দিকে তুমি এসে আমাকে দেখে অনেক উচ্ছ্বসিত হয়েছিল, যা এখনও আমার চোখের সামনে ভাসে। এই যা, তোমাকে আমি প্রথম থেকেই তুমি বলে আসছি। অভিমান থেকে হোক আর পেশাদারিত্বের খোলসে আবদ্ধ হয়ে হোক তোমাকে কখনও তুমি বলতে পারলাম না। আর বলবোই বা কিভাবে, তুমি তো আমাকে সবসময় অ্যাংকেল বলে সম্বোধন করে থাক। যেখানে তোমার সমবয়সী বান্ধবীরা আমাকে ভাইয়া বলে ডাকে। আমাদের বয়সের পার্থক্য কি খুব বেশি? তোমার ১৬ আর আমার ২৬। যা হোক, আমার একটা কথায় তোমরা মা-মেয়ে যখন হাসতে হাসতে কাহিল হচ্ছিলে, তখন আমার বুকের ভেতর স্বর্গের অনুভূতি জাগছিল। কিন্তু বিধিবাম, তোমরা হয়তো ভেবেছিলে দুই-তিনদিন রিহার্সেল করলে তোমার রিহার্সেল শেষ হবে। কিন্তু তোমাকে কাছ থেকে দেখার লোভ সামলাতে না পেরে তিনদিনের রিহার্সেলে একটা দৃশ্যও শেষ করতে পারলাম না। তোমরা হয়তো বুঝতে পেরেছো কিনা জানি না? পরদিন বৃষ্টির পানিতে কাকভেজা হয়ে তোমাদের বাড়িতে গিয়ে তোমার মায়ের কাছে শুনলাম, তোমার মা তোমাকে মেরেছে। তোমার রিহার্সেল তাই আজ থেকে শেষ। শুধূ তাই নয়, আমার এই চলচ্চিত্রেও তুমি আর অভিনয় করছো না। এক্ষেত্রে, তোমার কোন মতামত আমি শুনতে পেলাম না। চলে এলাম কাকভেজা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে। সে রাতে আমার কোন ঘুম হল না, বার বার জানতে ইচ্ছা করছিল তোমাকে দেখাল। তোমার আঘাতের স্থানগুলোকে আদরের ভরিয়ে দেবার জন্য। জানো, এখনও ঘুমানোর সময় তোমাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি, কল্পনায় তোমাকে আদর করি। তোমাকে জয় করার জন্য, রাত জেগে কাজ করি সাফল্যর চূড়ায় উঠার জন্য। যেখানে উঠতে পারলে তুমি তোমার জন্য হলেও আমার কাছে আসবে- এই ধারণা আমার মনে কাজ করে। আচ্ছা, তোমাকে দেখলাম সেদিন কম্পিউটারের দোকানে। কিন্তু আমি তোমার সাথে কথা বলেত পারিনি। কারণ, তোমাকে দেখলে আমার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে যায়। কিন্তু তুমিও তো আমার সাথে কথা বলনি। তুমি কি মনে করে কথা বলনি, তা জানতে আমার খুব ইচ্ছা হয়। তোমাকে মনের কথা কোনদিন বলতে পারবো কিনা জানি না? তুমি হিন্দু আর আমি মুসলমানসহ আছে আরো কিছু বাধা। তোমার মিডিয়াতে কাজ করতে আগ্রহটা আমাকে স্বপ্ন দেখায়; কারণ আমিও অল্প-সল্প কাজ করছি এই লাইনে। যদি এইভাবে কাজের ফাঁকে যদি কখনও আবার হয় দেখা। অভিনয়ের ছলে হলেও তোমাকে বলব আমি সত্য কথাটা, “আমি তোমাকে ভালবাসি।” এই স্বপ্নকে সত্য করার জন্যই কাজ করে যাচ্ছি এখনও…
ইতি
তোমার অপ্রকাশিত প্রেমিক
লিখেছেন- মোঃ আরিফুল ইসলাম,
দৈনিক উত্তরবঙ্গবার্তা ভবন
কান্দিভিটুয়া,নাটোর