রবিবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » বিক্রি বাড়লেও লোকসানে এরিকসন
বিক্রি বাড়লেও লোকসানে এরিকসন
চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১২) আয় ও মুনাফা বাড়লেও স্মার্টফোন যন্ত্রাংশ বিভাগ এসটি-এরিকসনের কারণে নিট লোকসানে পড়েছে বিশ্বের শীর্ষ টেলিফোন নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি নির্মাতা এরিকসন। কোম্পানিটি জানায়, ওই প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অপারেটররা ব্যাপক হারে নেটওয়ার্ক হালনাগাদ করায় বিক্রি বেড়েছে এরিকসনের। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
ফরাসি চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসটি মাইক্রোইলেকট্রনিকসের সঙ্গে যৌথভাবে স্মার্টফোনের যন্ত্রাংশ তৈরি করে এরিকসন। তবে খাতটি এ পর্যন্ত অলাভজনক বলেই বিবেচিত হয়ে আসছে। অবশ্য বিনিয়োগকারীরা এসটির করা এ লোকসানকে বাদ রেখেই এরিকসনের ভবিষ্যত্ নিয়ে আশাবাদী। আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর স্টকহোমে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মূল্য প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, উত্তর আমেরিকায় উচ্চ চাহিদার কারণে কোম্পানিটির মূল ব্যবসায় ২০১১ সালের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বছরের শেষ তিন মাসে এরিকসনের যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার ও সেবা বিক্রি ৫ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৬৯০ ক্রোনার (১ হাজার ৫০ কোটি ডলার) হয়েছে। সোয়েডব্যাংকের বিশ্লেষক হাকান রেন বলেন, নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি বিক্রিতে যে ধস নেমেছিল, সেটা শেষ পর্যন্ত দূরীভূত হতে শুরু করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অপারেটরদের কাছে এরিকসনের যন্ত্রপাতি সরবরাহের পরিমাণ ২০১১ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৮৬ শতাংশ বেড়ে ৯৪০ কোটি ক্রোনারে দাঁড়ায়। পশ্চিম ইউরোপ ও ভারতে এ প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১০ ও ৩৮ শতাংশ।
এই প্রান্তিকের আগে চার প্রাান্তিক ধরে বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি বিক্রিতে মন্দা নেমে এসেছিল। এরিকসনের প্রধান নির্বাহী হ্যানস ভেস্টবার্গ বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস দীর্ঘমেয়াদে এ শিল্পের মৌলিক দিকগুলো বেশ আকর্ষণীয়। আমি মনে করি, মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ব্যবহার বাড়তেই থাকবে।’
এরিকসন জানায়, এসটি-এরিকসনের ৮৬০ কোটি ক্রোনারের দায় নিয়েছে তারা। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২৮০ কোটি ডলার লোকসান হয়েছে বিভাগটিতে। দায় নেয়ার কারণে চতুর্থ প্রান্তিকে ৬৩০ কোটি ক্রোনারের লোকসান দেখাতে হয়েছে এরিকসনকে। ২০ ডিসেম্বর এ দায় নেয়ার ঘোষণা দেয় এরিকসন। এসটি-এরিকসনে ৫ হাজার ৯০ জন কর্মী কাজ করেন। স্যামসাং, মটোরোলা ও সনির স্মার্টফোনগুলোর জন্য প্রসেসর মডিউল ও মডেম তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি।
ভেস্টবার্গ জানান, এসটি-এরিকসনের ভবিষ্যত্ নিয়ে তেমন কিছু বলা যায় না। শেষ প্রান্তিকে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার বিক্রির বিপরীতে ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার লোকসান করে কোম্পানিটি। এদিকে গত মাসে এসটি-এরিকসন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেয় এসটি মাইক্রোইলেকট্রনিকস। এরিকসন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, এসটির অংশ কিনে নেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই তাদের।
রেন বলেন, এ বছরের যেকোনো সময় এসটি-এরিকসনকে বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিতে পারে এরিকসন। মূল দুটি কোম্পানিই প্রতিষ্ঠানটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাতে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ষোলোকলা পূর্ণ হয়েছে। এখন বলা যাচ্ছে না, আর ছয় মাস কোম্পানিটি চালু থাকবে কিনা।
এরিকসনের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জ্যান ফ্রিখহ্যামার জানান, আয়ের বিপরীতে দায় নেয়ার পাশাপাশি এসটি-এরিকসনে থাকা সমস্ত বিনিয়োগকেও লোকসান হিসেবে দেখানো হয়েছে। ২০১১ সালে নকিয়ার সিমবিয়ান স্মার্টফোন বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণার পর থেকেই এসটি-এরিকসনের আয়ে ভাটা পড়ে। এসটি-এরিকসনের যন্ত্রাংশের মূল ক্রেতা ছিল নকিয়া। - এসবিবি