রবিবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ের উদ্যোগ
ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ের উদ্যোগ
কর্তৃপক্ষকে অনলাইন পোস্ট ও পেজ মুছে দেয়ার মতো ক্ষমতা দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারে আরও কিছু আইন প্রণয়ন করেছে চীন। সরকারের সমালোচনা করা অবৈধ তথ্যদাতাদের শাস্তি দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে নতুন আইনে। খবর রয়টার্সের।
নতুন নিয়ম অনুসারে বিতর্কিত পোস্ট বা পেজ মুছে দিতে হবে সেবা প্রদানকারী কোম্পানিকেই। মুছে দেয়া তথ্যগুলো আবার হস্তান্তর করতে হবে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষই ওই পোস্ট কিংবা পেজের মূল ব্যক্তিকে শাস্তি দেবে।
এ আইনের মাধ্যমে চীনের নতুন নেতা জি জিনপিং যে ইন্টারনেটের ওপর আরও খড়্গহস্ত হবেন তার পূর্বাভাস মিলছে। এমনিতেই চরম নজরদারিতে থাকা ইন্টারনেটে খুব কমই সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে পারে চীনারা। সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, নতুন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যবহারকারীকেই তার আসল নাম দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। চীনে অবশ্য আগে থেকেই এ পদ্ধতি চলে আসছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ এবং জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট সিনা অবশ্য আগে থেকেই অনলাইনের পোস্টের ওপর কড়া নজর রাখে। কিন্তু নতুন আইনে পোস্ট মুছে দেয়াকে বৈধতা দেয়া হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে, অবৈধ তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রচার বন্ধ করে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সেবা প্রদানকারী কোম্পানিকে। এর মধ্যে রয়েছে তথ্য মুছে দেয়া, রেকর্ড সংরক্ষণ করা। এরপর কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হবে।
সম্প্রতি সরকারের নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়টি ছড়িয়ে দেয় ব্যবহারকারীরা। তাদের অভিযোগ, সরকারের উঁচু মহলের মদদেই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে এরা। এ কেলেঙ্কারির পর পরই নতুন আইন প্রণয়ন করা হলো।
রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল তথ্য, মানবাধিকার এবং উঁচু মহলের রাজনীতি নিয়ে কথা বলা থেকে বিরত রাখতে ইন্টারনেটের ওপর চরম নজরদারি করে থাকে বেইজিং। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহারের সুযোগ নেই চীনে।
শেষ হতে যাওয়া বছরের প্রথম দিকে চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট ওয়েবোর গ্রাহকদের আসল নাম দিয়ে নিবন্ধন করতে বাধ্য করে বেইজিং। এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন অনেক ওয়েবো গ্রাহক। এক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘এখন তারা ওয়েবোকে বাধ্য করছে রেকর্ড রেখে সেগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে। এটাই কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা, যা আমাদের সংবিধানে অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত?’
আরেক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘ইন্টারনেট স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
বেইজিং অবশ্য বলছে, জনগণকে বিদ্বেষমূলক ও বেনামে অভিযোগ করা থেকে বিরত রাখতেই এ আইন করা হয়েছে। সেসঙ্গে এ আইন পর্নোগ্রাফি, রটনা, গুজবের মতো ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড থেকে চীনাদের দূরে রাখবে। এতে আরও বলা হয়, বিশ্বের বেশকিছু দেশে এ ধরনের আইন রয়েছে।