শুক্রবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » তৈরি হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশে সক্ষম কম্পিউটার
তৈরি হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশে সক্ষম কম্পিউটার
ভবিষ্যতের কম্পিউটারগুলো নিজে যেমন স্বাদ-গন্ধ-শব্দ বিশ্লেষণ করতে পারবে, তেমনি পারবে ব্যবহারকারীকেও প্রদর্শিত ছবিগুলোর অনুভূতি বুঝিয়ে দিতে। এমনটাই বলছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম। সম্প্রতি ‘আইবিএম ৫ ইন ৫’ নামের বার্ষিক সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, পাঁচ বছরের মধ্যেই মানুষের অনুভূতি প্রকাশ করতে সক্ষম কম্পিউটার দেখা যাবে। খবর এএফপির।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কেন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ পছন্দ করে, অ্যালগরিদম দিয়ে খাবারের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ করে তা জানাতে সক্ষম হবে এসব কম্পিউটার। এতে শুধু যে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো আরও সুস্বাদু হয়ে উঠবে তা নয়, আমাদের পছন্দ আর স্বাদে নতুনত্ব আনতে নতুন নতুন অভাবনীয় খাবার তৈরি করা সম্ভব হবে। ধরুন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এমন খাবারের পদ্ধতি বাতলে দেবে কম্পিউটারগুলো, যাতে তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আবার কোনো খাবারের স্বাদ থেকেই যেন তারা বঞ্চিত না হন।
এ কাজগুলো করার জন্য কম্পিউটার বা সেলফোনগুলোয় থাকবে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সেন্সর। সেন্সরগুলো খুব সহজেই ব্যবহারকারী বা তার আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের সর্দি-কাশি বা অন্যান্য রোগবালাই সহজেই ধরতে পারবে। সেগুলো হবে এসব ব্যক্তির গায়ের গন্ধ, জৈবিক পরিবর্তন কিংবা নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা অণু-পরমাণু বিশ্লেষণ করে।
এসব যন্ত্রপাতি ডাক্তারদেরও কাজে আসবে। রোগীদের লিভার বা কিডনির সমস্যা খুব সহজেই ধরতে পারবেন তারা।
এদিকে স্পর্শের অনুভূতি দিতে এসব যন্ত্রে স্পর্শনির্ভর, অবলোহিত (ইনফ্রারেড) আর চাপসংবেদি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। তাতে দূর থেকেই প্রিয় ব্যক্তির স্পর্শ পেতে পারেন ব্যবহারকারী কিংবা বাসায় বসেই দোকানে থাকা কাপড়ের গুণমান বিচার করতে পারেন সেলফোনের স্ক্রিনে হাত বুলিয়েই।
শব্দ নির্ধারণ এবং তাকে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা নিয়েও কাজ করছে আইবিএম। পাঁচ বছরের মধ্যে শব্দের চাপ, কম্পন এবং শব্দ তরঙ্গের মতো বিষয়গুলো ধরতে গড়ে তোলা হবে সমভাবে ছড়ানো বুদ্ধিমান সেন্সরের মাধ্যমে। তাতে কোন বনে গাছ কাটা হচ্ছে কিংবা কোথায় ভূমিধস হতে যাচ্ছে, তা সহজেই বলে দেয়া যাবে।
আইবিএমের দাবি, এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছোটদের আধো বুলিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ ভাষা হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবে কম্পিউটিং যন্ত্রগুলো।
সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন হচ্ছে ছবি বিশ্লেষণের ক্ষমতা। এখন পর্যন্ত কম্পিউটারগুলো শুধু সঙ্গে থাকা লেখার মাধ্যমে ছবি শনাক্ত করতে সক্ষম। আইবিএম বলছে, পাঁচ বছরের মধ্যেই কম্পিউটারগুলো মানুষের মতো ছবির বিষয়বস্তু অনুধাবন করতে সক্ষম হবে। এতে যে শুধু এক্সরে রিপোর্ট কিংবা এমআরআইয়ের রিপোর্ট বুঝতে সক্ষম হবে কম্পিউটারগুলো তা নয়, পাশাপাশি এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো যাবে শিল্প থেকে শুরু করে খুচরা কৃষিপণ্য বিপণনেও।
আইবিএমের সদস্য ও উদ্ভাবন শাখার সহসভাপতি বারনি মেয়ারসন জানান, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানের শত শত কর্মী এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত আছেন। সবাই মিলে তাদের চারপাশের সবকিছুর তথ্য কম্পিউটারে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক যেমন তার চারপাশের সবকিছু থেকে তথ্য নিয়ে অনুভূতির সাহায্যে সিদ্ধান্ত নেয়, ভবিষ্যতের কম্পিউটারগুলোও একইভাবে কাজ করবে। - এসবিবি