সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
মঙ্গলবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি পড়াশোনা » ক্লাউড কম্পিউটিং কি?
প্রথম পাতা » আইসিটি পড়াশোনা » ক্লাউড কম্পিউটিং কি?
৭৮৯ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০১২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটারের জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে ক্লাউড কম্পিউটিং। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির সবকিছুই চলে এই ক্লাউডের উপরে নির্ভর করে। অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে কম্পিউটারের জগতে ক্লাউড কম্পিউটিং সূচনা করেছে এক সুদূরপ্রসারী বিপ্লবের। ইন্টারনেট ও কম্পিউটিং এর সর্বত্র আজ ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তির জয়জয়কার। ক্লাউড যেনো এক যাদুর কাঠি, যার ছোঁয়ায় নিমেষে সমাধান হয়ে যাবে সব সমস্যা! অবশ্য এক দিক থেকে চিন্তা করলে কথাটা কিছুটা সত্যিও বটে। ক্লাউড আজ সবখানে ছড়িয়ে আছে, সব প্রযুক্তির পেছনেই কাজ করছে।

শুরুতেই তাই প্রশ্ন করি,

আপনি কি আজকে কোনো ক্লাউড ব্যবহার করেছেন?

জবাবে যদি না বলেন, তাহলে কিন্তু ভুল হবে। সজ্ঞানে হোক, কিংবা না জেনে হোক, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রায় সবাইই দৈনন্দিন নানা কাজে ক্লাউড প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আসছে। ইমেইল বলুন কিংবা অনলাইন কোনো সার্ভিসই বলুন, ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমেই দেয়া হচ্ছে বর্তমান ইন্টারনেটের নানা সেবা।
ক্লাউড - পুরানো নানা প্রযুক্তিরই নতুন সংকলন

তো, এই ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যাপারটা আসলে কী?

খটোমটো সংজ্ঞায় যাবার আগে সহজ সরল বাংলায় একটা জবাব দেই, ক্লাউড কম্পিউটিং হলো আর কিছুই না, নতুন বোতলে পুরানো মদ। অর্থাৎ পুরানো কিছু প্রযুক্তিকে নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে ক্লাউডে।l বর্তমানের অধিকাংশ ক্লাউড আসলে খুব বড় আকারের ডেটা সেন্টার, যেখানে হাজার হাজার সার্ভার র‍্যাকে করে সাজানো থাকে, লাখ লাখ ডলার খরচ করে তাদের ঠান্ডা রাখতে হয়। কিন্তু এই হাজার হাজার সার্ভার দিয়ে অজস্র ক্লায়েন্টের জটিল সব সমস্যার সমাধান অনেক সহজে করা চলে।
ক্লাউড কম্পিউটিং মানে সার্ভিস বা হার্ডওয়ার ভাড়া নেয়া/আউটসোর্সিং

আমি যখন স্কুলে পড়তাম, তখন বাংলাদেশে একটা ব্যবসা খুব চালু ছিলো। নানা দোকানে সাইনবোর্ড টাঙানো থাকতো, “এখানে মাসুদ রানা ও তিন গোয়েন্দার বই ভাড়া দেয়া হয়”। মাসে মাসে বই কিনে পড়ার সামর্থ না থাকলে সমস্যা ছিলোনা আমার মতো বইপোকাদের, ২টাকা করে ভাড়ায় বই নিয়ে পড়ে আবার ফেরত দিয়ে নতুন বই নিতে পারতাম, কিংবা হাতে টাকা বেশি থাকলে একাধিক বই নিতে পারতাম এক সাথে।

ক্লাউডের মূল আইডিয়াটাও তাই। ধরুন, আপনার জটিল একটা ভিডিও বা ফটো প্রসেসিং এর কাজ লাগবে। ঘরে আপনার পুরানো মেশিন, তাতে সেই কাজ করা যাবে না। আবার ওয়ান-টাইম এই কাজ করার জন্য বিশাল অংকের টাকা দিয়ে কম্পিউটার কেনারও মানে হয় না। সমাধান তাহলে কী? ভালো কম্পিউটার আছে, এমন কারো কাছ থেকে ঘণ্টা হিসাবে কম্পিউটার ভাড়া নেয়। এতে করে সবারই লাভ - আপনার কেবল যত ঘণ্টা লাগছে, তত ঘণ্টারই পয়সা দেয়া লাগবে, আর যার ঐ কম্পিউটার আছে, সেও দিনের অধিকাংশ সময় কম্পিউটারটা অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে না রেখে ভাড়ায় খাটিয়ে কিছু টাকা কামালো।

এইবার ব্যাপারটা বড় আকারে চিন্তা করেন। ধরেন, আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন, তাতে একটা ব্লগ চালাবেন। ব্লগের অধিকাংশ ব্লগার ও পাঠক বাংলাদেশে। ফলে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত ব্লগে লোকজন থাকে, তার মধ্যএ সন্ধ্যা ৮টা হতে ১১টা পর্যন্ত খুব বেশি লোক, এতোই বেশি ভিজিটর যে আপনার সার্ভারে খুব চাপ পড়ে, লোড কমাতে ৩টা সার্ভার একসাথে চালাতে হয় সেসময়। কিন্তু রাত ১২টা হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত লোড একেবারেই কম। তখন ১টা সার্ভারেই কাজ হয়ে যায়।

আপনি তাহলে কী করবেন? দুইটা অপশন (১) ৩টা সার্ভার ভাড়া করেন দিনরাত ২৪ ঘণ্টার জন্য, অথবা (২) যখন ভিজিটর বেশি, তখন ৩টা ভাড়া নেন, যখন ইউজার কম, তখন ১টা সার্ভার চালু রাখেন।

এইভাবে ভাড়া নিতে পারলে কিন্তু আপনার খরচ বেশ কমে যাচ্ছে, যখন আপনার দরকার নাই, তখন খামোখা পয়সা কেনো দিবেন? কাজেই আপনার লাভে লাভ!

উল্টা দিকে সার্ভার ভাড়া দেয়া কোম্পানিরও সুবিধা আছে। আপনি যে সময় ১টা সার্ভার ব্যবহার করছেন, ঐ সময়ে বাকি সার্ভারগুলা অন্য কাউকে ভাড়া দিতে পারছে। তাদের সিস্টেম বসে থাকছেনা অলসভাবে কখনোই।

এই যে “এখানে সুলভে সার্ভার ভাড়া দেয়া হয়”, এই আইডিয়াটাই ক্লাউড কম্পিউটিং এর মূলমন্ত্র।
ক্লাউডের সংজ্ঞা

ক্লাউড কোনো নির্দিষ্ট টেকনোলজি নয়, বরং এটা একটা ব্যবসায়িক মডেল। অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিং এ বেশ কিছু নতুন পুরানো প্রযুক্তিকে একটি বিশেষভাবে বাজারজাত করা হয় বা ক্রেতার কাছে পৌছে দেয়া হয়। যেসব ক্রেতার অল্প সময়ের জন্য কম্পিউটার দরকার বা তথ্য রাখার জায়গা দরকার, কিন্তু এই অল্প সময়ের জন্য কম্পিউটার কেনার পেছনে অজস্র টাকা খরচের ইচ্ছা নাই, তারা ক্লাউডের মাধ্যমে ক্লাউড সেবাদাতাদের কাছ থেকে কম্পিউটার বা স্টোরেজ স্পেস ভাড়া নেন।

একটু খোলাসা করেই বলি, তার জন্য ক্লাউডের সংজ্ঞাটা দেখে নেয়া যাক -

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্স্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ড্স এন্ড টেস্টিং (NIST) অনুসারে ক্লাউড কম্পিউটিং এর সংজ্ঞা নিম্নরূপ -

ক্লাউড কম্পিউটিং হলো ক্রেতার তথ্য ও নানা এপ্লিকেশনকে কোনো সেবাদাতার সিস্টেমে আউটসোর্স করার এমন একটি মডেল যাতে ৩টি বৈশিষ্ট্য থাকবে -

(১) “যত চাই, ততই পাই” বা রিসোর্স স্কেলেবিলিটি - ছোট হোক, বড় হোক, ক্রেতার সব রকমের চাহিদাই মেটানো হবে, ক্রেতা যতো চাইবে, সেবাদাতা ততোই অধিক পরিমাণে সেবা দিতে পারবে।
(২) “চাহিবা মাত্রই” বা অন-ডিমান্ড সেবা - ক্রেতা যখন চাইবে, তখনই সেবা দিতে পারবে। ক্রেতা তার ইচ্ছা মত যখন খুশি তার চাহিদা বাড়াতে কমাতে পারবে।
(৩) পে-অ্যাজ-ইউ-গো - বাংলায় বলতে গেলে “ফেলো কড়ি, মাখো তেল” পেমেন্ট মডেল। অর্থাৎ ক্রেতাকে আগে থেকে কোনো সার্ভিস রিজার্ভ করতে হবে না। ক্রেতা যা ব্যবহার করবে, তার জন্যই কেবল পয়সা দিবে।

উপরের সংজ্ঞাটাকে আগের উদাহরণের সাপেক্ষেই দেখা যাক।

ক্রেতা হিসাবে আপনার কোনো কাজে ১টা সার্ভার লাগলেও ক্লাউড সার্ভিসদাতা সেটা দিতে পারতে হবে, আবার তার পরক্ষণেই যদি আপনার চাহিদা বেড়ে ১০০টা সার্ভার লাগে, তাও দিতে পারতে হবে। কোনো গাঁইগুই, কালকে দিবো, পরে আসেন, এরকম ধানাইপানাই চলবেনা।
আর আপনার সর্বোচ্চ চাহিদা ১০০টা সার্ভার হলে শুরুতেই কিন্তু ১০০টা সার্ভার রিজার্ভ করে রাখতে হবে না, শুরুতে ১টা লাগলে ১টাই ভাড়া নিবেন, যদি পরে বেশি লাগে তখন আরো কয়েকটা নিবেন, আবার চাহিদা কমে গেলে অব্যবহৃত সার্ভার ফেরত দিয়ে দিবেন।
আর পয়সা দেয়ার সময়ে গুণে গুণে ঘণ্টা হিসাবে যেই কয়টা সার্ভার ভাড়া নিয়েছিলেন, কেবল সেই কয়টারই টাকা দিবেন।

উপরের সংজ্ঞা মেনে সার্ভিস বিক্রি করে, এরকম যেকোনো সার্ভিসকেই তাই ক্লাউড বলা চলে। আবার উল্টা ভাবে বলা চলে, বড় একটা ডেটা সেন্টারে অজস্র সার্ভার বসিয়ে রাখলেই সেটা ক্লাউড হয় না, যদি উপরের ৩টি বৈশিষ্ট্যের এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য সেখানে না থাকে।

তাহলে এক বাক্যে ক্লাউডের সংজ্ঞাটা কী দাঁড়ালো?

কম্পিউটার ও ডেটা স্টোরেজ সহজে, ক্রেতার সুবিধামতো চাহিবামাত্র এবং ব্যবহার অনুযায়ী ভাড়া দেয়ার সিস্টেমই হলো ক্লাউড কম্পিউটিং।

ও হ্যাঁ, ক্লাউড কম্পিউটিং এর নামে ক্লাউড বা মেঘ এলো কোথা থেকে? ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে ক্রেতারা সাধারণতঃ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডারের ক্লাউডের সাথে যুক্ত হন। নেটওয়ার্ক ডায়াগ্রাম আঁকার সময়ে ক্রেতা ও সার্ভারের মাঝের ইন্টারনেটের অংশটিকে অনেক আগে থেকেই মেঘের ছবি দিয়ে বোঝানো হতো। সেই থেকেই ক্লাউড কম্পিউটিং কথাটি এসেছে।

- এস এম জুবায়ের 



আইসিটি পড়াশোনা এর আরও খবর

বিডিকলিং একাডেমিতে নারীদের জন্য ‘অ্যাডভান্স ফটোশপ’ কোর্স বিডিকলিং একাডেমিতে নারীদের জন্য ‘অ্যাডভান্স ফটোশপ’ কোর্স
ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি
নারীদের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্টেম স্কলারশিপ নারীদের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্টেম স্কলারশিপ
আইডিপি এডুকেশনের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি আইডিপি এডুকেশনের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি
ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলস নাও সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলস নাও সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে মেধাবীদের জন্য দেশে বিশ্বমানের শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে মেধাবীদের জন্য দেশে বিশ্বমানের শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক
বই মেলায় আলতামিশ নাবিল এর ‘কন্টেন্ট রাইটিং এর মহারাজা’ বই মেলায় আলতামিশ নাবিল এর ‘কন্টেন্ট রাইটিং এর মহারাজা’
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সার্ভিস খাতে বিসিএস এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সার্ভিস খাতে বিসিএস এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
বইমেলায় তিতাস সরকারের প্রযুক্তি বিষয়ক বই বইমেলায় তিতাস সরকারের প্রযুক্তি বিষয়ক বই
এটুআই এবং নেটকম লার্নিং এর মধ্যে চুক্তি এটুআই এবং নেটকম লার্নিং এর মধ্যে চুক্তি

আর্কাইভ

যাত্রা শুরু করলো তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্লাটফর্ম ‘ইউনেট’
সপ্তাহব্যাপী ‘পিক-আপ’ ক্যাম্পেইনে ফুডপ্যান্ডা দিচ্ছে বিশেষ ছাড় ও ভাউচার
ফ্যাশন ও স্থায়িত্বে জেন-জি দের পছন্দ ইনফিনিক্স হট ৫০সিরিজ
স্পার্ক গো ওয়ানের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এলো টেকনো
প্রিয়শপ কো-ব্র্যান্ডেড ক্রেডিট কার্ড জিতলো মাস্টারকার্ড এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪
এআই ও অটোমেশনের অগ্রগতিতে একসাথে কাজ করবে গ্রামীণফোন ও এরিকসন
নতুন র‌্যানসমওয়্যার শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি
পিএমআই বাংলাদেশের পুরস্কার পেল বাংলালিংক
বাজারে এসারের এআই সুবিধা সম্পন্ন নতুন ল্যাপটপ
এআই ইমেজিং প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করেছে অপো ও এইচকে পলিইউ