বুধবার ● ১৪ নভেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » সিলেটে বর্জ্য থেকে বায়োইথানল ও জেট ফুয়েল উৎপাদনের উদ্যোগ
সিলেটে বর্জ্য থেকে বায়োইথানল ও জেট ফুয়েল উৎপাদনের উদ্যোগ
আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বায়োইথানল ও জেট ফুয়েল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি ৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট স্থাপন করবে ইকো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড (বিডি)।
গত সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন ইকো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড (বিডি) লিমিটেডের সঙ্গে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে আগামী বছর প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। এ কার্যক্রমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নগর উন্নয়ন পরিকল্পনাবিদদেরও সম্পৃক্ত করা হবে বলে সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে।
বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে ইকো ওয়ার্ল্ড ওয়াইড (বিডি) কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে বর্জ্যকে মেশিনের মাধ্যমে ধরন অনুযায়ী বিভক্ত করা হবে। এরপর কঠিন বর্জ্য যেমন- কাচ, প্লাস্টিক, সিরামিক ইত্যাদি আলাদাভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। অন্য বর্জ্যও পৃথকভাবে প্রক্রিয়াকরণ চলবে। এভাবে তিনটি ধাপে প্রক্রিয়াজাতশেষে বায়োইথানল তৈরি হবে। পরে উত্পাদন করা হবে জেট ফুয়েল। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কোনো দুর্গন্ধ ছড়াবে না ও পরিবেশ দূষণের কোনো সম্ভাবনা নেই। এ কার্যক্রম শুরু হলে দেড় থেকে দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
ইকো ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের (বিডি) পরিচালক মোশতাক আহমদ বলেন, বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বায়োইথানল উত্পাদনের মেশিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম স্থাপন করা হচ্ছে। উন্নত বিশ্বের অনেক শহরে এ মেশিনের মাধ্যমে লাভজনকভাবে বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে। ভারতের মুম্বাইতেও এ ধরনের মেশিন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠানের সিইও এডওয়ার্ড রোয়ার্থ বলেন, সিলেটে প্রতিদিন ২০০ টন বর্জ্য পাওয়া গেলে বছরে ৪০০ মিলিয়িন লিটার বায়োইথানল উত্পাদন সম্ভব হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, সিটি করপোরেশনের বর্তমান ডাম্পিং স্টেশন ১৫-২০ বছরের জন্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইডকে লিজ দেয়া হবে। এরপর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এ কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ করবে। এতে সিটি করপোরেশনের কোনো ব্যয় হবে না।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার নূর আজিজ জানান, সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ২০০ টন বর্জ্য পাওয়া যায়। এ বর্জ্য অপসারণের পর লালমাটিয়ার ডাম্পিং ইয়ার্ডে যায় ১৬০-৭০ টন। বাকিগুলো ড্রেনে ও রাস্তায় পড়ে থাকে। আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসব বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসূফ বলেন, বর্জ্য থেকে ইথানল, বায়োগ্যাস, জৈব সার উত্পাদন সম্ভব। ইথানলের সঙ্গে কেমিক্যাল মিশিয়ে জ্বালানি তেলে রূপান্তর করা যায়। এ ছাড়া ইথানল ফার্নিচারের বার্নিশ কাজ ও শিল্প-কারখানায় জৈব দ্রবণ হিসেবে ব্যবহূত হয়। বহির্বিশ্বে ইথানলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। -সিলেট প্রতিনিধি