সোমবার ● ৫ নভেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » চাহিদা বেড়েছে ট্যাবলেট পিসির
চাহিদা বেড়েছে ট্যাবলেট পিসির
দেশে থ্রিজি সুবিধা চালু হওয়ায় থ্রিজি সমর্থিত যে কোন ডিভাইসের চাহিদা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ট্যাবলেট পিসির ছোট সংস্করণ মিনি ট্যাবে রয়েছে থ্রিজি সমর্থন। এছাড়া কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের সব সুবিধা থাকায় সহজেই গ্রাহক আকৃষ্ট করছে এটি। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, আল্ট্রাবুক থেকে কম্পিউটারের এই বিবর্তনে সর্বশেষ সংযোজন ট্যাবলেট। সহজে বহনযোগ্য এবং ব্যবহারিক সুবিধায় গ্রাহকের শীর্ষ পছন্দ হয়ে উঠেছে এই ট্যাবলেট পিসি। ট্যাবলেট অ্যাপলের আইপ্যাড থেকে যে জয়যাত্রার সূচনা-এর সুফল এখন প্রায় সব কম্পিউটার নির্মাতা এবং গ্রাহক উপভোগ করছেন। প্রতিটি প্রযুক্তি কোম্পানিই বাজারে এনেছে নিজস্ব ট্যাব। তবে এ ক্ষেত্রে অ্যাপলের আইপ্যাড এবং স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি ট্যাবের সফলতাই সবচেয়ে বেশি। তবে প্রচলিত ট্যাবলেটের চেয়েও সম্ভবত আরেকটি পলকা আয়েশি পণ্যের চাহিদা বোধ করছিল ভোক্তা। তাইতো ১০ ইঞ্চির পরিবর্তে ছাড়া হয় ৭ ইঞ্চি পর্দার নতুন ট্যাব। ‘মিনি ট্যাব’ নামের ট্যাবলেটের এই খুদে সংস্করণটি দারুণ গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে। ওজনে হালকা হওয়ায় বহন ব্যাপারটি আরও সহজ হয়ে উঠেছে। অ্যামাজনের কিন্ডল ফায়ার, স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি প্যাড, গুগলের নেক্সাস, অ্যাসারের আইকনিয়ার পর ৭ ইঞ্চি ট্যাবের সাম্রাজ্য দখলের লড়াইয়ে সর্বশেষ সংযোজন অ্যাপলের আইপ্যাড মিনি। আইপ্যাড মিনিতে রয়েছে অ্যাপলের এ৫ ডুয়াল কোর প্রসেসর। যারা ক্ষুদে আইপ্যাডের কর্মদক্ষতা নিয়ে সন্দিহান তাদের জানা দরকার, আইপ্যাড ২ এবং আইফোন ফোর এস-এ একই প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে। অন্য ব্র্যান্ডের মিনি ট্যাবের সঙ্গে মূল পার্থক্য হচ্ছে এর পর্দা ৭.৯ ইঞ্চি। মুখাবয়ব শনাক্তকরণে এতে রয়েছে ফেসটাইম এইচডি ফ্রন্ট ক্যামেরা। তবে ওয়াইফাই এবং থ্রিজি সমর্থিত এ ট্যাবে বরাবরের মতো ইউএসবি পোর্ট নেই। অ্যাপলের বিপণন বিষয়ক সহকারী পরিচালক ফিল শিলার জানাচ্ছেন, চলতি বছরের মার্চে উন্মোচন করা আইপ্যাড ৩-এর তুলনায় মিনি সংস্করণ ২৩ শতাংশ কম পুরুত্বের এবং ওজনের দিক থেকেও ৫৩ শতাংশ হালকা। গ্রাহকরা ২ নভেম্বর থেকে আইপ্যাড মিনি হাতে পাবেন। ১৬ গিগাবাইট ওয়াইফাই মডেলের জন্য ৩২৯ ডলার, ফোরজি মডেল ৪৫৯ ডলার আর ৬৪ গিগাবাইট মডেলের জন্য ক্রেতাদের গুনতে হবে ৬৫৯ ডলার। ট্যাব বাণিজ্যে দারুণ সফল প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। গত এপ্রিলে তারা বাজারে ছাড়ে ৭ ইঞ্চি পর্দার গ্যালাক্সি ট্যাব ২ নামের এই খুদে ট্যাব। সেলফোন সুবিধা দিতে এতে রয়েছে সিম ট্রে। ভিডিও চ্যাটিং সুবিধা দিতে রয়েছে ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরা। অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে দামেও অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী এটি। ওয়াইফাই এবং থ্রিজি সমর্থিত এ ট্যাবের দাম ৪৫ হাজার টাকা। এদিকে স্মার্ট ডিভাইসের ওএস হিসেবে অ্যান্ড্রয়েডের তুমুল জনপ্রিয়তার পর প্রথমবারের মতো ৭ ইঞ্চি ট্যাবলেটও বাজারে আনছে গুগল। নেক্সাস ট্যাব ৭ নামের এ ট্যাবে রয়েছে শক্তিশালী ১.৫ গিগা কোয়াড কোর প্রসেসর। চ্যাটিং সুবিধা দিতে থাকছে ফ্রন্ট ক্যামেরা। প্রথমবারের মতো এমন প্রসেসর কোনো মিনি ট্যাবে সংযোজিত হলো। প্রাথমিকভাবে ১৬ জিবি ধারণক্ষমতার নেক্সাস পাওয়া যাবে। পরে ৩২ জিবি সমর্থিত সংস্করণ ছাড়া হবে। অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য রয়েছে ‘গুগল প্লে’ নামের বিশাল ভা-ার। ফিচারের দিক থেকে অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী এ ট্যাবের কাছাকাছি অ্যামাজনের কিন্ডল ফায়ার। এতে মাইক্রো ইউএসবি পোর্টের পাশাপাশি রয়েছে এইচডিএমআই পোর্ট। এর রয়েছে দুটি সংস্করণ। একটি ৭ ইঞ্চি পর্দার কিন্ডল ফায়ার, অন্যটি ৭.৫ ইঞ্চি পর্দার কিন্ডল ফায়ার এইচডি। তবে এর সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, এতে কোন সিম ট্রে কিংবা বাড়তি মেমোরি ব্যবহারের সুযোগ নেই। অ্যাপ্লিকেশন ভা-ারের সুবিধা নিতে গুগল প্লে সমর্থন না করলেও অ্যামাজনের নিজস্ব অ্যাপ স্টোর তো রয়েছেই। এদিকে ট্যাবেও বেশ ভালো বাণিজ্য করছে অ্যাসার। ১০ ইঞ্চির পর প্রতিষ্ঠানটি বাজারে ছেড়েছে ৭ ইঞ্চি পর্দার আইকনিয়া ট্যাব এ১১০। এতে মাইক্রোএসডি এবং এইচডিএমআই পোর্ট সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশে পণ্যটি বাজারজাত করছে এক্সিকিউটিভ টেকনোলজি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা প্রদীপ ঘোষ জানান, প্রথমবার দেশে আনা ৭ ইঞ্চি আইকনিয়া ট্যাবের মজুদ শেষ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় ডিভাইসটি অচিরেই দেশের বাজারে আসবে। অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণের পর মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৮ সংস্করণও ছেড়েছে অ্যাসার। সেক্ষেত্রে আসল উইন্ডোজ ৮ সমর্থিত ট্যাবের দাম খানিকটা বাড়তি হওয়াই স্বাভাবিক। তবে নতুন পণ্য দেশে না এলে দামের ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু জানানো যাচ্ছে না। বাড়তি মেমোরি ব্যবহারের সুবিধা সংবলিত এই ট্যাব এর আগে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রথমবারের মতো থ্রিজি সুবিধা চালু হয়েছে। থ্রিজি সমর্থিত যে কোন ডিভাইসের চাহিদা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ট্যাবলেট পিসির এই ছোট সংস্করণ সাধারণত থ্রিজি সমর্থন করে। এছাড়া এতে কম্পিউটারের যাবতীয় সুবিধা ছাড়াও স্মার্টফোনের সব সুবিধা থাকায় সহজেই গ্রাহক আকৃষ্ট করছে মিনি ট্যাব। একে মূলত বহনযোগ্য কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের শংকর সংস্করণ বললেও ভুল হয় না। আর সেক্ষেত্রে দামি স্মার্টফোনের বিকল্প হয়ে উঠছে এই ট্যাবলেট মিনি। দেশে ইতিমধ্যে অ্যাসার ছাড়াও স্যামসাংয়ের মিনি ট্যাব বিকিকিনি চলছে। অন্যদিকে গুগলের নেক্সাস ট্যাব ৭ এর নির্মাতা আসুস হওয়ায় অচিরেই দেশের বাজারে পাওয়া যাবে এটিও। এছাড়া অ্যাপল বাংলাদেশে কোন পরিবেশক নিযুক্ত না করলেও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দেশে এসে থাকে অ্যাপল পণ্য। সেক্ষেত্রে বাজারে আসার পর গ্রাহক চাহিদামতো আইপ্যাড মিনিও পরখ করার সুযোগ পাবেন।