বৃহস্পতিবার ● ১৮ অক্টোবর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » টায়ার থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদনের কৌশল আবিষ্কার
টায়ার থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদনের কৌশল আবিষ্কার
।। খন্দকার মারছুছ ।। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৯০ হাজার টন টায়ার জমা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো ব্যবহার করা হয় ইটের ভাটা, সিমেন্ট, ইন্ড্রাষ্টি ও অন্যান্য ফ্যাক্টোরিতে সরাসরি জ্বালানী হিসাবে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্বক বিপর্যয় সৃষ্টি করচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন যাবৎ পড়ে থাকলেও এগুলো সহজে মাটিতে পচেনা বরং টায়ারের ভিতরের ফাকা জায়গায় বষ্টির পানি জমে মশা ও অন্যান্য রোগ জীবানু উৎপাদনের ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। এই বর্জ্য টায়ারগুলো পরিবেশের যে সমস্যা সৃষ্টি করচ্ছে তার সঠিক সমাধান এবং এগুলোর উন্নত মানের ব্যবহার নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ বছর যাবৎ গবেষনার কাজ চলচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড: মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে উক্ত বিভাগের প্রভাষক মো: আব্দুল কাদের সহ আল-আমিন, খায়রুল ইসলাম, তাকের ও সমাপন উৎভাবন করল একটি মাঝারি আকারের জ্বালানী তেল উৎপাদন প্ল্যান্ট। প্রফেসর ড: মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এর আগে এই “পাইরোলাইসিস” প্রযুক্তি উপর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
প্রযেক্ট প্রদর্শনকালে দলটি ৩৫ বেশি বর্জ্য টায়ার থেকে প্রায় ১৭ কেজি তেল উৎপাদন করে দেখায়। গবেষনা দলটি উৎপাদিত তেলের গুনাগুন পরীক্ষা করে দেখেন যে উহার মান প্রচলিত তরল জ্বালানী ডিজেল বা ফার্নেস অয়েলের কাছাকাছি যাহা বিকল্প জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করার যোগ্য। প্রাপ্ত তত্ত্ব অনুযায়ী ১০০ ভাগ বর্জ্য টায়ার থেকে ৫০ ভাগ তেল এবং বাই-প্রোডাক্ট হিসাবে ৩৮ ভাগ চারকোল ও ১২ ভাগ গ্যাস পাওয়া যায়। উক্ত বাই-প্রোডাক্ট দুইটিও জ্বালানী হিসাবে ব্যবহারের যোগ্য।
প্রকল্প তৈরী কারক দলটি দাবি করেন বহি: বির্শ্বে এ নিয়ে কাজ হলেও বাংলাদেশে এটাই প্রথম। সম্প্রতি বাংলাদেশে চীন থেকে আমদানীকৃত ২ বা ৩টি প্ল্যান্ট স্থাপন করণ হয়েছে সেগুলো খুবী ব্যায়বুহুল, কম লাভজনক এবং উৎপাদন ও পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। চীনা প্রকল্প থেকে উন্নত কিছু পদ্ধতি সংযোজনের জন্য এ প্রযুক্তি আরো বেশী গ্রহণ যোগ্য এবং সাশ্রয়ী হবে বলে গবেষনা দলটির দাবী করেন।
গবেষনা লব্ধ প্রাপ্ত ফলাফলের উপর গুরুত্ব বিচার করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ড: সিরাজুল করিম চৌধুরী বলেন “এটি আসলেই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। বর্তমানে সারা বিশ্বে জ্বালানী তেলের ব্যাপক সংকেট ও পরিবেশ দূষন সমস্যা রয়েছে তা পুরাতন টায়ার থেকে তেল উৎপাদনের এই কৌশলের দ্বারা কিছুটা হলেও কমে আসবে।”
প্রকল্প পরিচালক প্রফোসর ড: মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান-”এই প্রকল্পটিতে যদি সরকারী বা অন্য কোন সংস্থার উদ্যোগে বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যায় তবে দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।”