বৃহস্পতিবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » ভারতে মাথাপিছু ১ দশমিক ৩ কেজি অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার হয়
ভারতে মাথাপিছু ১ দশমিক ৩ কেজি অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার হয়
ভারতে ক্রমেই বাড়ছে অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতুর ব্যবহার। এ ক্ষেত্রে শুধু ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতেই দেশটির মোট ব্যবহারের ৪৮ শতাংশ হলেও অন্যান্য খাতে এর ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে বলে ন্যাশনাল অ্যালুমিনিয়াম করপোরেশন (নালকো) জানায়। অন্যদিকে পুরো বিশ্বে মোট অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ হার ১১ শতাংশ। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
বর্তমানে ভারতে মাথাপিছু ১ দশমিক ৩ কেজি অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার হয়। এ পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে বলে নালকোর চেয়ারম্যান আংশুমান দাশ বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ চীনে মাথাপিছু অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহারের পরিমাণ ১৪ কেজি। যদিও তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা উচিত নয়। কারণ অন্য ধাতু ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশটি ভারত থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।’
ভারতে যেখানে ১৭ লাখ টন অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন হয়, সেখানে চীনে এ পরিমাণ ২ কোটি টন। ফলে এসব বিষয়ে ভারত এখনো অনেক পিছিয়ে। তা ছাড়া ভেদান্তা, হিন্দালকো এবং নালকোর মতো ভারতের প্রধান অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও রয়েছে বিভিন্ন সমস্যায়। কারণ লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে দরপতনের কারণে একদিকে যেমন ধাতুটি তৈরির কাঁচামাল কয়লার দাম কমে গেছে, অন্যদিকে এর সরবরাহ নিয়েও অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ফলে পর্যাপ্ত কাঁচামালের অভাবে ২০১১-১২ সময়কালে নালকোর উৎপাদন ৩০ হাজার ৫০৮ টন কমে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৯ টনে দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমদানি বা নিলামে কয়লা কেনাও প্রতিষ্ঠানটির জন্য অনেক ব্যয়বহুল। ফলে এটি খনি থেকে সরবরাহ করা কয়লার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছে না।
উড়িষ্যা সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে খনি থেকে প্রচুর পরিমাণ বক্সাইট পাচ্ছে ভেদান্তা। যদিও বক্সাইটের যে মান, তার তুলনায় এর দাম অনেক বেশি বলে হিন্দালকো থেকে অভিযোগ করা হয়। মূলত খনিগুলো অনেক পুরাতন হয়ে যাওয়াই এর মূল কারণ। ফলে নতুন খনি চালু এবং উড়িষ্যার বিদ্যমান খনিগুলোয় উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করতে প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কয়লা ও বক্সাইটের স্বল্পতা সত্ত্বেও ভারতে যে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন বাড়ছে এ বিষয়টি উল্লেখ করেন দাশ। কারণ ২০১৫-১৬ সালের মধ্যে দেশটির উৎপাদন ৩০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি জানান। এ লক্ষ্য অর্জনে তিনটি প্রতিষ্ঠানই এখন নতুন উপায়ের খোঁজ করছে। এ ক্ষেত্রে ২০১১-১২ সালে মোট ৫ লাখ ৭৪ হাজার টন অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন করে হিন্দালকো। আরও তিনটি কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে শিগগিরই এর পরিমাণ তিন গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে কারখানার ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে উৎপাদন ১৭ লাখ ৫০ হাজার টনে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভেদান্তা।
দাশ বলেন, ‘ভারতে যদি বার্ষিক ৮-৯ শতাংশ হারেও অ্যালুমিনিয়ামের চাহিদা বাড়ে, তাহলেও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য উৎপাদন এ পরিমাণ বাড়ানোর যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১২তম পরিকল্পনার আওতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিমাণ ৮০ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে যাওয়ার যে লক্ষ্য, তা পূরণের জন্য ভারতের বিদ্যুৎ খাতই অ্যালুমিনিয়ামের সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী হিসেবে পরিণত হতে যাচ্ছে। একই সময় দেশটির পরিবহন, নির্মাণ খাত, প্যাকেজিং ও ভোক্তা পর্যায়ে এর ব্যবহার বাড়বে বলেও আমি আশা করছি।’
বর্তমানে ভারতের অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার শুধু ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও ধীরে হলেও এ অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে নালকো ধারণা করছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি মাঝেমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ব্যতিক্রমী পণ্য বাজারে আনলেও তাদের প্রধান লক্ষ্য অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন বলে দাশ জানান।