শনিবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » ১৩ সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে ‘‘গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসব ২০১২”
১৩ সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে ‘‘গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসব ২০১২”
‘‘এসো পৃথিবীর পাঠশালায়” স্লোগান নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ দিনের ইন্টারনেট উৎসবের ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলো । উৎসবের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাতে আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একটু ভিন্ন আয়োজনেই উৎসবের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানানো হয় অতিথি, সাংবাদিক ও উপস্থিত অন্যদের। গ্রামীণফোনের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন সৈয়দ তাহমিদুল আজিজুল হক মঞ্চে এসে গত বছরের উৎসব আয়োজনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত বছর যখন এই উৎসবের আয়োজন করা হয়, তখন এতটা সাড়া পাওয়ার আশা তাঁরা করেননি। দেশজুড়ে এই উত্সব শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলার ঘটনা তাদের মুগ্ধ করেছে, নতুন করে এ বছর আরও বড় পরিসরে উৎসব আয়োজনে অনুপ্রাণিত করেছে।
এরপর গত বছরের আয়োজনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরতে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। তাতে জানানো হয়, ২০১১ সালে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর আয়োজনে দেশের ৬৪ জেলায় ১০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেই উৎসবে সারা দেশের প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। ইন্টারনেট-ভিত্তিক ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের মধ্য থেকে ১০২ জন আই-জিনিয়াস নির্বাচন করা হয়। পরে তাদের মধ্য থেকে আই-জিনিয়াস গ্র্যান্ড মাস্টারের স্বীকৃতি পেয়ে চৌধুরী সাদিদ আলম শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে নরওয়ে ঘুরে আসে।
গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নরওয়ে গিয়ে সেখানেও সেরাদের সেরা হওয়া চৌধুরী সাদিদ আলমের ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। সেখানে সাদিদ আই-জিনিয়াসদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলে, গত বছরের ১০২ জন আই-জিনিয়াস স্প্রেড দ্য লাইট ও আই-ক্যাম্প নামের ইন্টারনেট-বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেয়। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কীভাবে আরও সহজে তথ্য পাওয়া যায় এবং তা ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনকে আরও সহজ করা যায়, সে বিষয়ে জানিয়েছিল। ইন্টারনেটের ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনকে আরও সুন্দর করার তথ্য আশপাশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে আই-জিনিয়াসরা।
নরওয়েতে সেরাদের সেরা হওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সাদিদ আজকের অনুষ্ঠানে বলেন, বিদেশে সব প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সেরা হওয়ার অনুভূতি আনন্দ ও গর্বের।
গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসবের প্রজেক্ট ম্যানেজার মুনতাসীর হোসেন এই আয়োজনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বলেন, ১৩ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া এবারের উৎসব হবে আরও বড় পরিসরে। ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত এই উৎসবে ৬৪ জেলার ১২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ বছর উৎসবে সহযোগী হিসেবে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম। এ ছাড়া আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হবে গুগল, অপেরা মিনি, নকিয়া, ফেসবুক ও উইকিপিডিয়া। আর মিডিয়া সহযোগী হিসেবে থাকবে চ্যানেল আই ও রেডিও ফুর্তি।
এই উৎসবে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, মোবাইল ফোনের ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আরও বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দিতে তিনি সবাইকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে বলেন। তিনি তরুণসমাজকে নতুন যুগে নিয়ে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এন আই খান বলেন, দেশে বর্তমানে ২০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত ও মালদ্বীপ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। তিনি জানান, দেশের ২০ হাজার বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে।
শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ইন্টারনেট সমাজ বদলের হাতিয়ার। সরকার দেশের ২০ হাজার ৫০০ বিদ্যালয়কে মাল্টিমিডিয়াসমৃদ্ধ করতে যাচ্ছে।
অন্যদের মধ্যে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, নকিয়ার এদেশীয় প্রতিনিধি রাবি আহমেদ চৌধুরী ও গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা অ্যালান বনকে বক্তব্য দেন।