শুক্রবার ● ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » ইন্টারনেট ব্যবহারে ৫৪তম অবস্থানে বাংলাদেশ
ইন্টারনেট ব্যবহারে ৫৪তম অবস্থানে বাংলাদেশ
বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যাবহার ক্রমেই বেড়ে চলছে । সে তুলনায় বাংলাদেশ খুব একটা ভাল অবস্থানে নেই । এর প্রধান কারন বিদ্যুৎ সমস্যা এবং ইন্টারনেট খরচ সাধারন জনগনের নাগালের বাইরে থাকা । ইন্টারনেট ব্যবহারে এখন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা দক্ষিণ কোরিয়াকে ছাড়িয়ে শীর্ষে সুইডেন। ইন্টারনেটের জনক টিম বার্নাস লির ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে সুইডেনকেই ইন্টারনেট ব্যবহারে সেরা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তালিকায় ৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৪। সংস্থাটি গত বুধবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে সংস্থাটিকে সহায়তা করে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস। আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল। খবর সিএনএনের।ওয়েব ইনডেক্স নামে এ প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দ্বিতীয়। ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে এই প্রথম দেশগুলোর তালিকা তৈরি করা হলো। সাতটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো- যোগাযোগ অবকাঠামো, ইন্টারনেট ব্যবহার, ওয়েব কন্টেন্ট এবং দেশগুলোয় ইন্টারনেটের ওপর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব।প্রতিবেদন প্রকাশে সহায়তাকারী অক্সফোর্ড ইকোনমিকস অর্থনৈতিক পূর্বাভাসের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের নেতৃস্থানীয় পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান। এ গবেষণার জন্য বিভিন্ন সূত্র থেকে পাঁচ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহের পর উপসংহারে আসার জন্য আরও এক বছর ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে জরিপ চালানো হয়েছিল। গবেষণা কাজের অর্থায়নে ১০ লাখ ডলারের বাজেট করা হয়েছিল, যার পুরোটাই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল।সার্বিকভাবে বিশ্বে তিনজনের মধ্যে একজন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বলে প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। আর আফ্রিকায় ইন্টারনেট ব্যবহার করেন প্রতি ছয়জনের একজন। শীর্ষে থাকা সুইডেনের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। প্রতিবেদনে অবাক করার মতো বিষয় হলেও সত্য যে, ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে কানাডা, আয়ারল্যান্ড, জাপান ও নরওয়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ পিছিয়ে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্য সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও আইসল্যান্ডের তুলনায় কম গতির ব্যান্ডউইথ দেয়া হয়।ওয়েব কন্টেন্টে ঢোকার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সেরা। শুধু ইন্টারনেট অবকাঠামো এবং ব্যবহার বিচারে আইসল্যান্ড সেরা। দেশটির প্রায় ৯৬ শতাংশ ব্যক্তি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বলে প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। সবচেয়ে বেশি গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পান সিঙ্গাপুরের অধিবাসীরা। আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ইন্টারনেটের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীল। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশটির জিডিপির ১৫ শতাংশ ইন্টারনেট ও অনলাইন যোগাযোগ সম্পর্কিত রফতানি দ্বারা পূরণ হয়েছে।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক দেশ এগিয়ে থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহারে বাধা এখনো দূর হয়নি। টিম বার্নাস লির বক্তব্য অনুযায়ী ইন্টারনেট বিশ্বব্যাপী একটি মুক্ত আলোচনার প্ল্যাটফর্ম। বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ অবশ্যই ইন্টারনেটের ভবিষ্যতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রচুর ব্যয়ের কারণে অনেক দেশের মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বঞ্চিত। ইন্টারনেট সংযোগ ব্যয়ের কারণে এখনো শতকোটি মানুষ এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকছেন। তাদের অধিকার আদায়ের সুযোগ করে দিতে অবশ্যই কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যয় কমানো উচিত। ইন্টারনেট ব্যবহার এখনো অনেক দেশের মানুষের কাছে বিলাসিতা। তবে আধুনিক সমাজের সঙ্গে পুরোপুরি তাল মেলাতে ইন্টারনেট এখন অবিকল্প মাধ্যম। প্রযুক্তিটিকে এখন মানবাধিকারের অংশ হিসেবেও বিবেচনা করার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেন ওয়েব ইনডেক্সের সর্বশেষ স্থান দখল করেছে। ইয়েমেনের আগে রয়েছে আফ্রিকার জিম্বাবুয়ে ও বুরকিনা ফাসো।