মঙ্গলবার ● ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » আইসিটি খাতের ঐক্যে ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম গঠনের উদ্যোগ
আইসিটি খাতের ঐক্যে ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম গঠনের উদ্যোগ
মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন
বাংলাদেশের আইসিটি খাতের বাণিজ্য সংগঠন বিশেষত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সহ অন্যান্য সংগঠনের বিদ্যমান বিভিন্ন সাংগঠনিক ও পলিসিগত সমস্যা নিরসনে সকল সংগঠনের সমন্বয়ে ‘ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম’ নামে নতুন একটি ফোরাম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারী ঢাকার বনানী ক্লাবে আইসিটি খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সাথে এ বিষয়ে একটি প্রাথমিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শুরুতে ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম গঠনের বিষয়ে উপস্থিত সবার সামনে প্রাথমিক ধারনা তুলে ধরেন ফোরামের প্রধান সংগঠক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উইনটেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আলিম।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাত আজ এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে আছে। একদিকে বৈশি^ক প্রতিযোগিতা, অন্যদিকে নীতিগত জটিলতা- এই দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শক্তিশালী ও কার্যকর নেতৃত্ব এখন সময়ের দাবি। কিন্তু গত ১৫ বছরের সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রধান সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, নীতিনির্ধারণে নিষ্ক্রিয়তা ও সদস্যদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ উদ্যোগের অভাবে খাতটি কাঙ্খিত গতিতে এগোতে পারছে না। এই বাস্তবতায় ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ সময় আলোচনায় বক্তারা বলেন, আইসিটি খাতের সংগঠনগুলোর কাঠামোগত সংস্কার এখন সময়ের দাবি। সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব পুনর্গঠন প্রয়োজন, যাতে এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় সীমাবদ্ধ না থেকে, পুরো আইসিটি খাতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। নেতৃত্বের এমন পরিবর্তন আনতে হবে, যারা সত্যিকার অর্থে প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয় এবং সদস্যদের স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখে। সংগঠনগুলোর প্রকৃত রূপ হতে হবে সদস্য-কেন্দ্রিক, যেখানে ছোট-বড় সব ধরনের সদস্য কোম্পানির সমান সুযোগ থাকবে।
অনেক উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠান মনে করে, কার্যক্রম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সংগঠনগুলো সদস্যদের মতামত যথাযথভাবে গ্রহন করে না। এই বাস্তবতা বদলাতে হলে, সদস্যদের অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও নীতিগত সুবিধা পায়।
সংগঠনগুলোর কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। সংগঠনগুলোর নীতিমালা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া উন্মুক্ত ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে, সকল সদস্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এতে সংগঠনের প্রতি সদস্যদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে আইটি খাতের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানের আলোচনার ভিত্তিতে ইউনাইটেড আইসিটি ফোরামের অন্যতম সংগঠক রিয়াদ হাসনাইন ফোরামের ভবিষ্যৎ ও আইসিটি খাতের উন্নয়নে করণীয় নিয়ে ফোরামের ঘোষণা পত্র সবার সামনে উপস্থাপন করেন।
সংগঠকদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিজিডট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরচিালক সৈয়দা নাফিসা রেজা (বর্ষা) এবং সিগনেচার ক্লাব লিমিটিডের ফাউন্ডার ও পরিচালক মোঃ শোয়েবুর রহমান খান।
এ সময় জানানো হয়, সরকার ও খাত সংশ্লিষ্ট পেশাজীবিদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আরও কিছু কার্যক্রম আয়োজন করা হবে। এসব আলোচনা থেকে উঠে আসা সুপারিশের ভিত্তিতে ‘ইউনাইটেড আইসিটি ফোরাম’ এর কর্মপরিধি ও অন্যান্য বিষয়গুলো নির্ধারন করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বাক্কো সভাপতি তানভির ইব্রাহিম, গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের সিইও আহমেদ আরমান সিদ্দিকী, এএমজেড বিজনেস সলিউশনস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উজ জামান, প্রাইডসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরচিালক মনোয়ার ইকবাল, মজুমদার আইটির স্বত্বাধিকারী সাইদুল ইসলাম মজুমদার, এপসিস্ সলিউশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরচিালক মাহতাবুল আমিন প্রমুখ।