বৃহস্পতিবার ● ২৬ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » অ্যাপলের ৮৮২ কোটি ডলার মুনাফা
অ্যাপলের ৮৮২ কোটি ডলার মুনাফা
জনপ্রিয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৮৮২ কোটি ডলার মুনাফা করেছে। ২০০৩ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্লেষকদের ধারণার চেয়ে কম মুনাফা করলো প্রতিষ্ঠানটি। ক্রেতারা আইফোন৫-এর জন্য অপেক্ষা করায় অ্যাপলের প্রান্তিক মুনাফা তুলনামূলকভাবে কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর ব্লুমবার্গের।
ক্যালিফোর্নিয়ার কুপার্টিনোভিত্তিক অ্যাপল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৯ ডলার ৩২ সেন্টে। মোট বিক্রির পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ব্লুমবার্গের বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, অ্যাপলের প্রান্তিক রাজস্ব হবে ৩ হাজার ৭২০ কোটি ডলার এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা হবে ১০ ডলার ৩৭ সেন্ট। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, প্রযুক্তি খাতে রাজস্বের দিক থেকে নিকটতম প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায়ও অনেক এগিয়ে অ্যাপল। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি থেকে অ্যাপলের পণ্য বিক্রি বাড়তে থাকে। তবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ শতাংশ কমেছে। ক্রেতারা আইফোন৫-এর জন্য অপেক্ষা করায় এমনটি ঘটেছে। মূলত আইফোন থেকেই বিপুল রাজস্ব আয় করে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ব্যাপারে সিনোভাস ট্রাস্ট কোর জ্যেষ্ঠ পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপক ড্যানিয়েল মরগান বলেন, ‘আমরা অ্যাপলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিছু অনিবার্য কারণ থাকে, যাতে মানুষ হতাশ না হয়ে পারে না। পরবর্তী আইফোন বাজারে এলেই অবস্থার পরিবর্তন হবে। বাজার মূল্যের দিক থেকে বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। শেয়ারবাজারে এর দাম ১ শতাংশ কমে ৬০০ ডলার ৯২ সেন্টে লেনদেন হচ্ছে।
চলতি প্রান্তিকেও বিক্রি প্রবৃদ্ধি কমার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে অ্যাপল। কারণ আইফোন ৫ বাজারে আসবে আগামী অক্টোবরে। এর আগে বিক্রি কমে দাঁড়াতে পারে ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে। শেয়ারপ্রতি মুনাফা হতে পারে ৭ ডলার ৬৫ সেন্টে। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী বিক্রির পরিমাণ হবে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা হবে ১০ ডলার ২৭ সেন্ট।
গত প্রান্তিকে ২ কোটি ৬০ লাখ আইফোন বিক্রি করে অ্যাপল। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসে ২ কোটি ৮৪ লাখ আইফোন বিক্রি হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। অ্যাপলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) পিটার ওপেনহেইমার জানিয়েছেন, অনেক ক্রেতা নতুন আইফোনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ফলে আইফোন বিক্রিতে সাময়িক বিরতি চলছে।
আইফোন বিক্রিতে সাময়িক বিরতি চললেও অ্যাপলের ট্যাবলেট কম্পিউটার আইপ্যাড ভালোই বিক্রি হয়েছে। গত মার্চে বাজারে আসা আইপ্যাডে এইচডি ডিসপ্লে, শক্তিশালী প্রসেসর, পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্কসেবা রয়েছে। ১ কোটি ৭০ লাখ আইপ্যাড বিক্রি হয় এ সময়। ১ কোটি ৫৪ লাখ ইউনিট বিক্রি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। ওপেনহেইমার জানিয়েছেন, শিক্ষা খাতে আইপ্যাডের বিক্রি বেড়েছে। টেক্সাসের একটি স্কুলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য কেনা হয়েছে ১১ হাজার আইপ্যাড। এ সময়ে ৪০ লাখ ম্যাক কম্পিউটার বিক্রি হয়। গান শোনার যন্ত্র আইপড বিক্রি হয় ৬৮ লাখ ইউনিট। বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল ম্যাক ও আইপড বিক্রি হবে যথাক্রমে ৪৩ লাখ ও ৬৬ লাখ ইউনিট।
সিইও টিম কুক জানিয়েছেন, অ্যাপল টিভি নামেই পরিচিত সেট টপ বক্স বিক্রি হয় ১৩ লাখ ইউনিট। এ টিভির মাধ্যমে টেলিভিশন সেটেই ইন্টারনেটে ভিডিও চালানো সম্ভব। কয়েক বছর আগের তুলনায় অ্যাপল টিভি বিক্রি তিন গুণ বেড়েছে। এ খাতের ব্যবসা বাড়ানোর জন্যও পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের টিভি বিক্রি এমন পর্যায়ে আছে, যাকে আমরা শখ বলে আখ্যায়িত করতে পারি। তবে আমরা এটি নিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।’
ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারে কিছুটা মন্দার মধ্যে রয়েছে তারা। এ অঞ্চলে বিক্রির পরিমাণ আগের প্রান্তিকের চেয়ে ২২ শতাংশ কমে ৭৮৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ওপেনহেইমার জানিয়েছেন, পণ্যপ্রতি মৌলিক ব্যয় বেড়েছে ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত অ্যাপলের ১১ হাজার ৭২০ কোটি ডলার জমা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৩ আগস্ট শেয়ারপ্রতি ২ ডলার ৬৫ সেন্ট করে বিনিয়োগকারীকে দেবে।