মঙ্গলবার ● ৭ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহবান
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহবান
মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) গত ৫ মে ঢাকায় ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক পলিসি ডায়ালগের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশে সরকারের আইন প্রণেতাগণ, অর্থনিতীবিদ, শিক্ষাবিদ এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নেতৃবৃন্দ সহ সকলেই ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, এই কর অব্যাহতি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বন্ধ হয়ে গেলে এই খাতে লভ্যাংশের হার আশঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাবে এবং আইটি/আইটিইএস কোম্পানিসমূহের পুনঃবিনিয়োগ ক্ষমতাও কমে যাবে। ফলে এই শিল্পের উন্নতির গতি মন্থর হয়ে যাবে এবং রপ্তানিও হ্রাস পাবে।
ভিসিপিয়াব প্রসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান তার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, আমাদের দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১% থেকে ২% এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১.০৯%। বিপরীতে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবদান ৭.৪০%, ফিলিপাইনের ৩.৪০%, ইন্দোনেশিয়ার ৪.২৩%, এস্টোনিয়ার ৭.০০%। তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) এর ক্রমবিকাশ প্রাত্যহিক জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তি আরও বেশি করে যুক্ত হওয়ার প্রতিফলন স্বরূপ, যা সরকার এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। ডিজিটাল পাবলিক ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত শক্তিশালী ‘ডাটা ও ডিজিটাল ক্যাপিটাল’ গড়ে তুলে আমরা বাংলাদেশকে বিশে^র ‘এআই ইউজ কেস’ এর রাজধানীতে রূপান্তরের লক্ষ্য স্থির করতে পারি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির বিষয় তুলে ধরবো। আমাদের আইটি/আইটিইএস খাতে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার না করে বরং অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
বিশেষ অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, আমি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতির যুক্তিসংগত দাবিকে সমর্থন করি।
বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মতো ক্রমবর্ধমান শিল্পের জন্য কর সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে, আমাদের অবশ্যই জ্ঞান-ভিত্তিক ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যান্য দেশের সাথে ব্যবধান কমানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু পর্যায়ে দ্রুত গতিতে নিজেদের এগিয়ে নেয়া অপরিহার্য; অন্যথায়, আমাদের ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকতে হবে।
অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে সংসদ সদস্য ও ভিসিপিয়াব উপদেষ্টা জারা জাবীন মাহবুব বলেন, সত্যিকার একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীদের অগ্রণী ভূমিকাকে উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। তাদের অন্তর্ভুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা শুধু নারীর স্বাস্থ্যের উন্নতিই না, বরং কার্যকরভাবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে পারি।
সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, দেশে মাল্টিবিলিয়ন ডলারের মিডিয়া, বিনোদন ও প্রযুক্তি শিল্প রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আমাদের এই শিল্পকে ডিজিটালাইজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানটির পার্টনার হিসেবে ছিল এডিএন টেলিকম লি, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম (প্রা.) লিমিটেড, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) প্রা. লি., ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসি, আইটি কনসালট্যান্টস পিএলসি, বিডিজবস লিমিটেড এবং ইজেনারেশন পিএলসি।
অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, সিসিসিআই সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বিডিজবস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ডঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন; পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ; ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এম. রোকনুজ্জামান; এডিএন টেলিকমের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ; স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফোরকান বিন কাসেম; কনস্টেলেশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এর প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা তানভীর আলী; স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ব্রেইন স্টেশন ২৩-এর সিইও রাইসুল কবির এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পলিসি অ্যাডভাইজার ইমরান আহমেদ।