রবিবার ● ১০ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » ডিজিটাল ইকোনমি ও তথ্যপ্রযুক্তিতে সহায়তা করবে এডিবি
ডিজিটাল ইকোনমি ও তথ্যপ্রযুক্তিতে সহায়তা করবে এডিবি
ডিজিটাল ইকোনমি ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ‘ইনোভেশন ইকোসিস্টেম’ গড়ে তুলতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরে ইকোসিস্টেম ডেভেলপ করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ, তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটাল প্লাটফর্মে আনা ও হাইটেক পার্কে এডিবি সহায়তা করবে। দেশে ৪৮টির বেশি হাইটেক পার্কে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি হাইটেক পার্কে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মধ্যে এক বৈঠকে এ আশ্বাস দেয়া হয়।
প্রতিমন্ত্রী এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরকে, এবারের বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এক শ’ কোটি টাকার তহবিল গঠনসহ আইসিটি খাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকার গৃহীত ও বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচীর বিষয় জানান। এডিবি বাংলাদেশের উন্নয়নে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে আইসিটিসহ বিভিন্ন খাতে এডিবির আরও সহযোগিতা কামনা করেন। এডিবি আইসিটি খাতে সহযোগিতা দিলে খাতটি আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে বলেন মনে করে প্রতিমন্ত্রী। গত ১২ বছরে দেশ আইসিটি খাতে সাফল্যজনকভাবে এগিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে, এখন উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাশাপাশি চলছে। বর্তমান সরকার আইসিটি সেক্টরকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আগামী দিনে এই সেক্টর হবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। দেশের যুব সমাজ এর মধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। তারা সফটওয়্যারসহ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বড় বড় অবদান রেখে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বহু তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করেছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আইটি বিশেষজ্ঞ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের যে কোন দেশের সঙ্গে পাশাপাশি চলতে পারছে। এই সেক্টরে বিদেশী বিনিয়োগও বাড়ছে।
আইসিটি পার্কে সরকার বিদেশী কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী পলক উল্লেখ করে। দেশের আইসিটি পার্কগুলোতে ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী বহু কোম্পানি বিনিয়োগ করেছেন। কোন কোন প্রতিষ্ঠান উৎপাদনেও গেছে। দেশী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। কয়েকটি আইসিটি পার্কের অংশ বিশেষ পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারসিপ) আওতায় কাজ হচ্ছে। কয়েকটি জেলায় দীর্ঘদিন ধরে আইসিটি পার্ক নির্মাণ কাজ চলছে। এসব প্রকল্পে অর্থ সহযোগিতা পেলে দ্রুত পার্কগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
এডিবির অর্থনীতিসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বিগত ১০ বছরে অনেক এগিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে। আইসিটিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ভবিষ্যতেও এডিবির সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর আশ্বাস দিয়েছেন। এডিবি বাংলাদেশের যে কোন উন্নয়নেই অংশ নিতে আগ্রহী। আইসিটি খাতে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবেন দেশের তরুণ-তরুণীরা। বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ আইসিটি খাতে অনেক এগিয়ে গেছে। এই অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করতে এডিবি পাশে থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরকে বলেন, শুধু আইসিটি খাতের উন্নয়ন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য না। আমরা এই খাতকে নিরাপদও রাখতে চাই।
সূত্র জানিয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটিয়ে জঙ্গীবাদ ও অপপ্রচারকারীদের প্রতিরোধ করা হবে। ইতোমধ্যে অনেক নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। কেউ যাতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে অপপ্রচার ও জঙ্গীবাদে উস্কানি দিতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিলের বিষয়টি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। মন্ত্রী সভার অনুমতি পাওয়ার পরই ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠনের কাজ শেষ হবে। সাইবার অপরাধ দমন ও সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে বিটিআরসি আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয় করে কাজ করার সার্বিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাইবার অপরাধের উপর নজরদারি জোরদার, সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করে বিটিআরসি। ওই প্রস্তাবে অপরাধ দমন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও দফতরের সমন্বয়ে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠনের কাজ চলছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন দফতর এবং নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিজস্ব অধিক্ষেত্র অনুসারে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।