বৃহস্পতিবার ● ৩১ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের কর্মসংস্থান
তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের কর্মসংস্থান
দেশে বেকারের সংখ্যা ও বেকারত্ব নিয়ে প্রায়ই তর্ক-বিতর্ক হয়ে থাকে। তবে যোগ্য ও মেধাবীরা যে সবসময়ই কাজ পান এবং নিজ উদ্যোগে নিজের পথ খুঁজে নিতে পারেন, এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। দেশে গত কয়েক বছরে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগসহ কর্মসংস্থান বেড়েছে আশাব্যঞ্জক গতিতে। সবচেয়ে বেশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও কম্পিউটার প্রকৌশল খাতে। এর তথ্য প্রমাণসহ সমর্থন মিলেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে। ২০১৮ সালের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এডিবি দেখতে পেয়েছে, শিক্ষিত স্নাতকদের মধ্যে সর্বাধিক কর্মসংস্থান হয়েছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ও আইটি সেক্টরে- প্রায় ৭৭.১ শতাংশ। যেখানে অন্য সব বিষয়ে স্নাতকদের কর্মসংস্থানের হার ৪০ শতাংশ। তদুপরি কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ডিগ্রীপ্রাপ্তরা এক বছরের মধ্যেই প্রবেশ করতে পারে কর্মজীবনে। তবে এখাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ এখনও কম। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আউটসোর্সিংয়েও বাংলাদেশের অবস্থান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আশাব্যঞ্জক।
জাতীয় সংসদে পরিবেশিত এক তথ্যে জানা যায়, ২০২১ সাল নাগাদ দেশে আইসিটি সেক্টরে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, দেশে একটি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা। স্বনির্ভর ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ বর্তমান সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। এও অস্বীকার করা যাবে না যে, প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও আইসিটির ভূমিকা ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী। বর্তমানে কৃষি, চাষাবাদ, খাদ্যশস্য বিপণন, পরিবহন ও যোগাযোগ এমনকি চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি। অথচ ২০০৯ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন, তখন রাজধানীর বাইরে কোন ইন্টারনেট সংযোগ পর্যন্ত ছিল না। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ কর্মক্ষম। আরও যা আশার কথা তা হলো, দিনে দিনে বাড়ছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা পৌঁছাবে ৭০ শতাংশে। এই তরুণ শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ইতোমধ্যে ৮ শতাংশ অতিক্রম করেছে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে ধাবমান বাংলাদেশ। এর জন্য অদক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করতে হবে দক্ষ জনশক্তিতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের ওপর। বাড়াতে হবে শিক্ষার মান। তথ্যপ্রযুক্তি-জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের দিকে নজর দিতে হবে। সর্বোপরি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য জোর দিতে হবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের ওপর। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক বিশ্বে হাত গুটিয়ে বসে থাকার অবকাশ নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ যথার্থ অর্থে গড়ে তুলতে হলে আইসিটি সেক্টরের ব্যাপক উন্নয়ন ও বিকাশ ছাড়া গত্যন্তর নেই। ই-সার্ভিস রোডম্যাপ-২০২১ বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এর জন্য প্রতিবছর বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। ই-গবর্নমেন্টসহ ই-বাণিজ্যের প্রসারেও হাতে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী। সে অবস্থায় আইসিটি সেক্টরে আরও শিক্ষিত জনবলের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।