বৃহস্পতিবার ● ২৪ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » দেশের অগ্রযাত্রায় ই-গভর্ন্যান্স
দেশের অগ্রযাত্রায় ই-গভর্ন্যান্স
রবিবার রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে ই-গবর্নমেন্ট মাস্টারপ্ল্যান রিপোর্ট প্রকাশ ও এ টু আইএর তিনটি নাগরিক সেবা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দেশবাসীকে গৌরব করার মতো আশার বাণী শুনিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। কয়েক বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাল গবর্ন্যান্স ইনডেক্সে ৪০-৫০ ধাপ এগিয়েছে। আগামী ৫ বছরে তাই আরও ৫০ ধাপ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন আমরা দেখতেই পারি। তাই আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের আইসিটি ইন্ডিকেটর ডিজিটাল গবর্ন্যান্স ইনডেক্সের সেরা ৫০ দেশের মধ্যে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য অর্থাৎ অনলাইনে কেনাকাটা বৃদ্ধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নতি করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অত্যন্ত জরুরী। ক’বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দেশের জন্য মর্যাদাকর। চুক্তির আওতায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গবেষণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এর ফলে নিঃসন্দেহে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশ আরও এগিয়ে চলেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য সরকার ইতোমধ্যে যেসব বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, তার ভেতরে রয়েছে গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম। ৬৪ জেলার নির্বাচিত সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইসিটি ‘ক্যারিয়ার ক্যাম্প’ একটি নিয়মিত কার্যক্রম। ক্যারিয়ার ক্যাম্পের উদ্দেশ্য দেশের শিক্ষিত তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহ বাড়ানো। একই সঙ্গে তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা।
ই-বাণিজ্যকে এগিয়ে নিতে সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ই-সার্ভিস রোডম্যাপ-২০২১ বাস্তবায়নে প্রতি বছর বাজেটে আইসিটি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে ই-গবর্ন্যান্স এবং ই-বাণিজ্য সম্প্রসারণে এ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ই-বাণিজ্য এগিয়ে নিতে বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে সরকার। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ই-বাণিজ্যের যাত্রা শুরু ২০১০ সালে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ই-বাণিজ্য। ২০১০-১১ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্সে মোট ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি টাকা। পাশাপাশি এর আরও উন্নয়ন ঘটাতে নানা পদক্ষেপও নিচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন ই-কমার্স এক অপার সম্ভাবনাময় খাত, যা দেশের মানুষের কেনাকাটাকে করবে আরও গতিশীল, সাশ্রয়ী এবং সহজ। বিশ্ব আসরে ই-বাণিজ্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার ফলেই দেশে ই-বাণিজ্যের প্রসার সন্দেহাতীতভাবে আরও বিস্তৃত হয়ে চলেছে। ফলে দেশবাসী আশাবাদী হতেই পারে যে, অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের ই-গবর্ন্যান্স উন্নয়ন সূচকে বিশ্বের সেরা ৫০টি দেশের তালিকায় থাকবে।