বৃহস্পতিবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » তথ্য আইন সম্পর্কে জানে না দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ
তথ্য আইন সম্পর্কে জানে না দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ
তথ্য অধিকার আইন সর্ম্পকে দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ জানেন না। ২৫ শতাংশ মানুষ এ সর্ম্পকে জানলেও তাদের মধ্যে ২০ শতাংশ মানুষের এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই বলে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ‘আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস-২০১৯’ উপলক্ষ্যে তথ্য অধিকার আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের প্রথম দশকের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ক সভায় এ প্রতিবেদন তুলে ধরেছে টিআইবি।
টিআইবি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে তথ্য অধিকার পাওয়ার জন্য ৯৯ হাজার ২৩৮টি আবেদন জমা হয়েছে। গড়ে প্রতিবছর ১১ হাজারের বেশি আবেদন এসেছে। যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় খুবই সামান্য।
আরো বলা হয়েছে, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে ৩২ ধারা অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ বা প্রদান করা বাধ্যবাধকতা স্বত্ত্বেও জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তথ্যের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে, এর সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না, তদন্ত হলেও তার ফলাফল গোপন রাখা হচ্ছে। দুর্নীতির তথ্যের ক্ষেত্রেও একই চিত্র বিদ্যমান।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনগণকে ক্ষমতায়িত করতে তথ্য অধিকার আইনটি করা হয়েছে। এটি শক্তিশালী আইন হলেও এটি প্রয়োগ হচ্ছে না। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য পেতে অনেকে হয়রানির স্বীকার হয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘শতভাগ সরকারি কর্মকর্তারা তথ্য দিতে চান না। অধিকাংশ কমিশনগুলোতে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়ায় সেখান থেকে তথ্য পাওয়াটা জটিল হয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সহযোগীতা না করলে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তথ্য অধিকার আইনটি বাস্তবায়নের জন্য একটি জাতীয় কৌশলপত্র থাকা উচিত। যেখানে স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা থাকবে।’
অধ্যাপক আফসান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। কারণ যাদের কাছে অভিযোগ দাখিল করবে তারা নিজেরাই দুর্নীতিবাজ। এ জন্য জনমানুষ এ বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখায় না। তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে ৭৫ শতাংশ মানুষের কোন ধারণা নেই। ২৫ শতাংশ এ আইনটির কথা শুনলেও এর মধ্যে ২০ শতাংশ মানুষের এ আইনটি কি তা জানেন না। মূলত ৫ শতাংশ মানুষ তথ্য অধিকার আইনটির ধারণা রয়েছে।’
টিআইবি ১২টি সুপারিশ করেছে তা হলো, তথ্য অধিকার আইনের আওতায় ব্যবসা, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমে অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রয়োজনীয় সংশোধন, তথ্য ফরম পূরণের আবশ্যকতা হিসেবে তথ্য কর্মকর্তার নাম উল্লেখকরণ, অপসারণ, সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি।
এছাড়া, তথ্য বিবেচনায় অধিকার আইনে অনুরোধকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের বিবরণ প্রদানের বাধ্যবাধকতা বাদ দিয়ে অনুরোধকারী ব্যক্তি প্রদত্ত নির্দিষ্ট যে কোন ঠিকানায় তথ্য প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি, আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিধান, আইনের পরিপন্থি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ৩২ ধারাসহ বাকস্বাধীনতার পরিপন্থি অন্যান্য ধারা বাতিল, তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা ডেস্ক তৈরি ও অনলাইন ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাবসহ এই ১২টি সুপারিশ করেছে টিআইবি।