সোমবার ● ৫ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি জার্নাল » চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়বে ৫৫ লাখ কর্মসংস্থান
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়বে ৫৫ লাখ কর্মসংস্থান
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে আগামী ২০ বছরে দেশে শ্রম খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। সর্বমোট ৫৫ লাখ কর্মসংস্থান ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘ন্যাশনাল কনসালটেশন অন ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন অ্যান্ড ফিউচার অব ওয়ার্ক’ শীর্ষক কর্মশালায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো) ও এটুআই। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাউপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী ও ইউনিডোর আঞ্চলিক প্রতিনিধি ভ্যান বারকেল রেনে।
কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিবিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক। আরো উপস্থিত ছিলেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি নিহাদ কবীর ও আইএলসি বাংলাদেশের সিনিয়র স্পেশালিস্ট কিশোর কুমার সিং।
মূল প্রবন্ধে আনীর চৌধুরী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে আগামী ২০ বছরে দেশে শ্রম খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এর ফলে তৈরি পোশাক শিল্পের ৩০ শতাংশ, ফার্নিচার শিল্পের ৬০, চামড়া খাতে ৩৫ ও ট্যুরিজম খাতে ২০ শতাংশসহ সর্বমোট ৫৫ লাখ কর্মসংস্থান ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। বিশেষ করে, অল্পশিক্ষিত নারী শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইউনিডোর আঞ্চলিক প্রতিনিধি ভ্যান বারকেল রেনে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকালে মানুষ ও যন্ত্র টিমমেট হিসেবে কাজ করবে। এতে শক্তি ও জনশক্তির ব্যবহার কমবে। কাস্টম-মেড পণ্য কম খরচে পাওয়া যাবে। এ পরিস্থিতিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষা জোরদারকরণ ও এগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিবিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাস্তবায়নাধীন ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগামী দিনের চাহিদা অনুসারে শিল্প অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। বর্তমানের নয়, আগামী দিনের প্রযুক্তি দেশে নিয়ে আসার জন্য দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, মানসম্মত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরি করতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় ঘটাতে হবে। বেসরকারি খাতে যেসব বিষয়ে দক্ষ কর্মীবাহিনী প্রয়োজন, সেসব বিষয়ে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন ও প্রশিক্ষণ দানে সহায়তা প্রদানের জন্য বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, পাঠ্যক্রমে আইসিটি শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান বাড়ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে রোবোটিকসহ নতুন নতুন বিষয় চালু করা হবে বলে তিনি জানান।
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন বলেন, দেশের সর্বত্র জনশক্তির দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ তিষ্ঠানসমূহকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ফান্ডের প্রস্তাব অর্থ বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন, যা বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে কাগজ-কলমভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তে কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি চালু করতে হবে।