বৃহস্পতিবার ● ১ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি
বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে এখন পর্যন্ত জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠান। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শুরু না করায় আরও ৪টির বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একাধিকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে এই হাইটেক সিটি।
১৯৯৯ সালের ১৩ জুলাই বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের সভায় কালিয়াকৈরে ২৩১ একর জমিতে হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে এর আয়তন বাড়িয়ে করা হয় ৩৫৫ একর।
এতে উচ্চগতির ইন্টারনেট, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ, যোগাযোগের জন্য শাটল ট্রেন এবং কম দামে জায়গা বরাদ্দ পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এতে অন্তত ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি পিপিপি মডেলে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই হাইটেক সিটিতে উৎপাদিত পণ্যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা পাবেন উৎপাদকরা। উৎপাদিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার পণ্য রফতানিতে উৎপাদকরা ১০ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন।
৩৫৫ একর জমির ওপর নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প। এতে রয়েছে ৬টি ব্লক। এরমধ্যে ১ নম্বর ব্লকে রয়েছে ৬৫ একর জায়গা, দুই নম্বর ব্লকে ৬২ একর, তিন নম্বর ব্লকে ৪০, চার নম্বর ব্লকে ৩৬, পাঁচ নম্বর ব্লকে ২৯ এবং ৬ নম্বর ব্লকে ৯৭ একর জমি রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি কর্তৃপক্ষ ৬ নম্বর ব্লকে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি বরাদ্দ দিয়েছে। এরমধ্যে ৪টির বরাদ্দ বাতিল হয়েছে। মোট জায়গার মধ্যে ডেভেলপার ও অবকাঠামো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সামিট টেকনোপলিস দুই ও পাঁচ নম্বর ব্লক, ফাইবার অ্যাট হোম তিন নম্বর ব্লক উন্নয়নের দায়িত্ব পেয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি এরই মধ্যে ৫টি করে প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে কাজ হচ্ছে, তবে ধীরগতিতে।’ এ জন্য তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তার ভাষ্য, কোনও কোনও ক্ষেত্রে অনুমোদনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এই সময়টা কম লাগলে কাজের গতি বাড়তো বলে তিনি মনে করেন।
হোসনে আরা বলেন, ‘অনুমোদন প্রক্রিয়ার কথা অনলাইনে সম্পন্নের কথা বলা হলেও সব কাজ অনলাইনে করা সম্ভব হয় না।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনলাইন পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি। সমন্বয় করে কাজ করা গেলে কাজে অনেক গতি আসবে।
হোসনে আরা জানান, হাইটেক পার্কের ৬ নম্বর ব্লকে ২১টি প্রতিষ্ঠান জায়গা বরাদ্দ নিয়েছিল। তাদের বরাদ্দ নেওয়া জায়গা ৪৬ একর। এরমধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে শর্তানুযায়ী কাজ শুরু না করায় ৪টির বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এগুলো হলো ইন্টারক্লাউড, জেনেক্স, মিডিয়া সফট ও স্পেক্ট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম।
জানা গেছে, ৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা আছে। এরমধ্যে রয়েছে রাশিয়ার কিয়াকম সলিউশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে এবং প্রয়োজনীয়তা বুঝে সেগুলোর বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড ভিভো হাইটেক পার্কে কারখানা স্থাপনের জন্য আবেদন করেছিল। তবে যে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তা তাদের পছন্দ হয়নি। এ কারণে আর বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠান
আগামী ৪০ বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে রবি, জেনেক্স, বিজেআইটি সফটওয়্যার, ফেয়ার ইলেক্ট্রনিকস, কেডিএস গ্রুপ, ইন্টারক্লাউড, বিজনেস অটোমেশন, নাসডাক টেকনোলজিস, জেআর এন্টারপ্রাইজ, বিজনেস অটোমেশন লিমিটেড, ডেটা সফট, আমরা হোল্ডিংস, ভেড নেট লিমিটেড, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, মিডিয়া সফট, ডেটা সিস্টেম লিমিটেড, ইউওয়াই সিস্টেম লিমিটেড, এসবি টেল এন্টারপ্রাইজ, ইউনিকম বাংলাদেশ ও সিস্টেক ডিজিটাল।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে সফটওয়্যার কোম্পানি ক্যাটাগরিতে দেড় একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে রবি। মোবাইল অপারেটরটি সেখানে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। ফেয়ার ইলেক্ট্রনিক্সকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তিন একর জমি। প্রতিষ্ঠানটি ইলেক্ট্রনিক্স, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উৎপাদনে বিনিয়োগ করবে ১০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া বরাদ্দ পাওয়া ৯টি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে ২০ দশমিক ৫০ একর জমি। প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করবে ১৪০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার।