বৃহস্পতিবার ● ৪ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কিছু যায় আসে না - রেন ঝেংফেই
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কিছু যায় আসে না - রেন ঝেংফেই
চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যবসা পরিচালনায় কোনো বাধা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এখন হুয়াওয়ের কাছে সব ধরনের পণ্য বিক্রি করতে পারবে। গত শনিবার জাপানের ওসাকায় জি২০ শীর্ষক সম্মেলনে এক সংবাদ বিবৃতিতে এমন ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ সিদ্ধান্তে কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেই। খবর রয়টার্স।
রেন ঝেংফেই গত মঙ্গলবার জানান, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতা দেখেছি। সে অনুযায়ী হুয়াওয়ের ব্যবসায় সমন্বয় আনা হয়েছে। কাজেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও এর কোনো প্রভাব হুয়াওয়ের ব্যবসায় পড়বে না। রাজনৈতিক স্বার্থে হুয়াওয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি রুখতে একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। তবে যা-ই হোক, হুয়াওয়েকে কোনোভাবেই দমিয়ে রাখতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র।
গত শনিবারের ঘোষণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, হুয়াওয়ের মার্কিন সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো অন্যায্য ছিল। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যেও হতাশা দেখা গেছে। কারণ তারা হুয়াওয়ের মতো একটি বড় প্রযুক্তি কোম্পানির কাছে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর পণ্য ও সরঞ্জাম বিক্রি করতে পারছিল না। হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা করতে হলে নিষেধাজ্ঞায় মার্কিন সরকারের অনুমোদন নেয়ার কথা বলা ছিল।
গত মে মাসে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় দেশের বাইরের ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির তৈরি টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম ক্রয়, সংযোজন অথবা ব্যবহার নিষিদ্ধ করে এক নির্বাহী আদেশে সই করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই আদেশে হুয়াওয়ের
নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও নির্বাহী আদেশটির লক্ষ্য যে চীনা কোম্পানিটি, তা পরে স্পষ্ট হয়। এ আদেশবলে হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। এর ফলে নিজেদের পণ্য উন্নয়ন ও উৎপাদনের জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি সব ধরনের সেমিকন্ডাক্টর পণ্য ক্রয় করা হুয়াওয়ের জন্য অসম্ভব হয়ে ওঠে। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে লাইসেন্স ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের বিদ্যমান গ্রাহকদের মাঝে সেবা অব্যাহত রাখাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অবশ্য বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর পরই যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের বিদ্যমান গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে, তা ৯০ দিনের জন শিথিল করা হয়েছিল। তবে হুয়াওয়ের ওপর আরোপিত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ নতুন মাত্রা পায়।
রেন ঝেংফেই বলেন, গত শনিবার জাপানের ওসাকায় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে হুয়াওয়ে ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য ভালো। হুয়াওয়েও মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরঞ্জাম কিনতে আগ্রহী। কিন্তু আমরা এখন যা করছি, তাতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা সামগ্রিকভাবে সবকিছু নিজেদের মতো করতে কাছ করছি।
রেন ঝেংফেই এর আগেও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো পরিস্থিতিতেই হুয়াওয়েকে ধ্বংস করতে পারবে না। বিশ্ব আমাদের পরিত্যক্ত কিংবা ছেড়ে যাবে না, কারণ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে উন্নত। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার না করার জন্য আরো বেশি দেশকে প্ররোচিত করে, তারপরও আমরা টিকে থাকব।