সোমবার ● ১৭ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » মোবাইল কলরেট কমানোর দাবি মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের
মোবাইল কলরেট কমানোর দাবি মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের
বাজেটে মোবাইলের ওপর বাড়তি কর বাতিল করে কলরেট কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
আজ সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে টেলিযোগাযোগ সেবায় অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করারও দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া উপগ্রহ কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকেই এই সেবা ছিল উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের যোগাযোগে বিলাসিতার মাধ্যম। ‘৯০ এর দশকে ওয়ান-জি ও টু-জি সেবার মাধ্যমে তারহীন মুঠোফোন সেবা চালু হলে এ ব্যবসাকে লুটপাটের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে এ খাতে মনোপলি ভাঙলে অতি সাধারণ ব্যক্তি ও পরিবারের সামর্থের নাগালে চলে আসে এ সেবা। বর্তমানে দেশে ফাইভ-জি চালুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একদিকে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায়, অন্যদিকে টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যয়ও বৃদ্ধি করতে চায়। এ ধরনের দ্বিমুখী নীতির কারণ কী, আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই?
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রতি বাজেটেই টেলিযোগাযোগে কর ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দেশের সব সেবা সংস্থার চেয়ে রাজস্ব আদায়ে টেলিযোগাযোগ খাত অগ্রগামী। জিডিপির প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ টেলিকম খাত থেকে আসে। বিটিআরসি শুধু রাজস্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করে। তাছাড়া, লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও তরঙ্গ বিক্রি বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা আদায় হয়।
মহিউদ্দিন বলেন, ১৩ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেছেন। বাজেটে টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন করে করারোপ করা হয়েছে, যা গ্রাহকদের মনে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অর্থমন্ত্রী হয়ত বা অবগত নন যে, গত বছর বাজেটে কলরেট বৃদ্ধির পর পুনরায় নতুন করে ১৫ আগস্ট ২০১৮ তারিখে ২৫ পয়সা সর্বনিম্ন কলরেটের স্থলে ৪৫ পয়সা সর্বনিম্ন কলরেট নির্ধারণ করলে আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করি।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে গত ১৩ ডিসেম্বর কলরেট বৃদ্ধি না করতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন নতুন করে কলরেট বৃদ্ধিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এ অবস্থায় সরকারের হাইকোর্টের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নতুন করে করারোপ করা থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন ছিল। যদিও প্রডিশনাল কালেকশন অব ট্যাক্সেস অ্যাক্ট, ১৯৩১ এর ধারা ৩ অনুযায়ী আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত কিছু পরিবর্তন বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়ে যায়। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে গ্রাহকরা এই কর দিতে বাধ্য নই। আমরা মহামান্য হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকব। যদি গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ আদায় করা হয় তার জন্য অপারেটর ও সরকার দায়ী থাকবে।
সময় তিনি বলেন, সরকার যদি এই শুল্ক প্রত্যাহার করে না নেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট যদি রায় জনগণের পক্ষে না দেন তাহলে আমরা আবারো জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।