সোমবার ● ২৭ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মন্দা যাচ্ছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও মোবাইল ফোনের বাজার, রমজানের শেষ সপ্তাহে বিক্রি বৃদ্ধির আশা ব্যবসায়ীদের
মন্দা যাচ্ছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও মোবাইল ফোনের বাজার, রমজানের শেষ সপ্তাহে বিক্রি বৃদ্ধির আশা ব্যবসায়ীদের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও মোবাইল ফোনের বাজার মন্দা যাচ্ছে। রোজার মাসের শুরু থেকেই এই অবস্থা বিরাজ করছে। ঈদের আর কিছুদিন বাকি থাকলেও বাজার ভালো হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে রোজার শেষ সময়ে অর্থাৎ ঈদের ৫-৭ দিন আগে বাজার ভালো হওয়ার আশা করছেন তারা। ওই সময় চাকরিজীবীদের বেতন, বোনাস হবে। ব্যবসায়ীদের আশা, শেষ সময়ে বাজার ভালো হবে। তাই ঈদের আগের সাত দিনের অপেক্ষায় আছেন তারা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিসিএস কম্পিউটার সিটি, এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটির মোবাইল মার্কেট ঘুরে ক্রেতার উপস্থিতি সেভাবে চোখে পড়েনি। বিক্রেতারা বলেছেন, ‘রোজার সময় বিক্রি একেবারে কম থাকে। এবার রোজার মাসে একটু বেশিই খারাপ অবস্থা।’ শেষ দিকে ভালো হতে পারে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদ মাসের শুরুর দিকে পড়েছে। ফলে চাকরিজীবীদের বেতন বোনাস হতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে বাজার জমতেও সময় লাগছে। কেউ কেউ বলছেন, এ বছর ধানের দাম পড়ে যাওয়ায় অঞ্চলভিত্তিক বাজার জমেনি। ঈদের আগে এই বাজার আর জমবে না বলে তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি শাহিদ উল মুনীর বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের বাজার কিছুটা ফল করেছে। এখন মানুষের মনোযোগ অন্যান্য কেনাকাটায়। এজন্য বাজার স্লো ডাউন যাচ্ছে।’ এবার বাজার একটু বেশিই খারাপ বলে তিনি মনে করেন। তবে ঈদের ৫-৭ দিন আগে বাজার ভালো হতে পারে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘তখন বেতন, বোনাস হবে। ওই সময়ে ল্যাপটপসহ অন্যান্য পণ্যের বিক্রি বাড়বে।’
তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের আমদানিকারক ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিসের অন্যতম পরিচালক মুজাহিদ আল-বেরুনী সুজন বলেন, ‘আগে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন হলে প্রযুক্তি পণ্যের বিক্রি বাড়তো। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল ও ময়মনসিংহ এলাকায় ধান উঠলে আমাদের বিক্রি বাড়তো। এবার চিত্র ভিন্ন। ধানের দাম পড়ে যাওয়াও একটা কারণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার রোজা শেষের দিকে, কিন্তু এখনও বাজার উঠলো না। এখন শেষ সপ্তাহের দিকে (রোজার) তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় দেখি না।’
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) যুগ্ম সম্পাদক ও স্যামসাং মোবাইলের অন্যতম পরিবেশক ফেয়ার গ্রুপের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এই রোজার মাসে মোবাইল মার্কেট বেশ খারাপ যাচ্ছে। আমরা ঈদকে কেন্দ্র করে যে টার্গেট করেছি তার ৮০ ভাগও পূর্ণ হবে না বলে মনে হচ্ছে। যদি শেষ দিকে মার্কেট ভালো হয় এবং খুব বেচাকেনা হয় তাহলেই ৮০ শতাংশ টার্গেট পূরণ হতে পারে। আর বাজার ভালো না হলে টার্গেটের ৬০-৭০ ভাগও পূরণ করা কঠিন হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পণ্যের অবস্থা (স্যামসাং মোবাইল) কিছুটা ভালো হলেও অন্যান্য স্মার্টফোন ব্যবসায়ীর অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকেরই বেচাকেনা নেই।’
এদিকে, মটোরোলা ও হুয়াওয়ে স্মার্টফোন ও ডিভাইসের ন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর স্মার্ট টেকনোলজিসের মোবাইল বিভাগের পরিচালক সাকিব আরাফাত বলেন, ‘গুগল কাণ্ডে হঠাৎ চাপে পড়েছিল হুয়াওয়ে, দিকনির্দেশনা হারিয়েছিল। এখন চাপ সামলে উঠেছে।’ তিনি জানান, হুয়াওয়ের প্রতি বাংলাদেশের ক্রেতাদের আগ্রহ কমেনি, বরং বাড়ছে। রোজার শেষ দিকে মার্কেট ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদী।
মটোরোলা মোবাইল নিয়ে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে ব্র্যান্ডটির বিক্রি ২০-২৫ ভাগ বেড়েছে। বিভিন্ন অফার ও ছাড়ের কারণে ক্রেতারা হাতে তুলছে মটোরোলা। রোজার শেষ দিকে স্মার্টফোন মার্কেট জমে উঠবে।’
শাওমি মোবাইল ফোনের ন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউটর সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেডের (এসইবিএল) প্রধান নির্বাহী বলেন, এবার মোবাইল বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। ২৫-৩০ শতাংশ বিক্রি পড়ে গেছে। আশা করছি, ঈদের আগের সাত দিনে বিক্রি বাড়বে। গত রোজার মাসেও এই অবস্থা ছিল। শেষ সাত দিনে বিক্রি বেড়েছিল।