সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
রবিবার ● ২৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » ফেসবুক লাইভে ঈদের বাজার জমজমাট
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » ফেসবুক লাইভে ঈদের বাজার জমজমাট
৮৫০ বার পঠিত
রবিবার ● ২৬ মে ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ফেসবুক লাইভে ঈদের বাজার জমজমাট

সংগৃহীত ছবি
‘এই কামিজটা ফুলহাতা। দেখুন, হাতেও কেমন সুন্দর কারচুপির কাজ করা। এটার সালোয়ার সিল্কের, আর জর্জেটের গর্জিয়াস ওড়না। এই কামিজটা যদি আপনাদের পছন্দ হয়, তবে স্ক্রিনশট নিয়ে আমাকে ইনবক্স করুন।’ ফেসবুকে এমন ধরনের লাইভ ভিডিওতে পণ্য বিক্রি ইদানীং খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঈদ উপলক্ষে এই বাজার এখন জমজমাট।
গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় ঈদ লাইভ লিখে সার্চ দিয়ে পাওয়া যায় গোটা পঁচিশ ফেসবুক লাইভ, যেখানে বিক্রি করা হচ্ছিল কামিজ, গয়না, কসমেটিকস, শিশুদের পোশাক ইত্যাদি।

কোনো কোনো লাইভে হাজারের বেশি ভিউ হতে দেখা যায়। লাইভ দেখে মুহূর্তেই ক্রেতারা পণ্য অর্ডার করছেন। সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রেতা জানিয়ে দিচ্ছেন, কতটি বিক্রি হলো আর কতটি তার কাছে মজুত আছে।
ঈদের কেনাবেচায় এই ফেসবুকে লাইভ নতুন এক বাজারের ধারণা যুক্ত করেছে।
অর্ধশতাধিক ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ ঘুরে দেখা যায়, অনলাইনে খুব সহজেই বসে যায় এই বাজার।

যেমন একজন বিক্রেতা আনিকা নূর। তিনি প্রায় এক বছর ধরে পোশাক বিক্রির একটি ফেসবুক পেজ চালাচ্ছেন। নাম ফিরোজা। প্রায় ছয় বছর ধরে দেশি-বিদেশি একাধিক কোম্পানিতে চাকরি করেন আনিকা। পরে সন্তান পালনের জন্য চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এরপর বেছে নেন ফেসবুকে পোশাক বিক্রির ব্যবসা।
আনিকা বলেন, ‘আমি সাধারণত আগেই জানিয়ে দিই, কখন লাইভে আসব। আমি নির্দিষ্ট সময়ে লাইভে এসে ক্রেতাদের পোশাক দেখাই। পোশাকের বিবরণ ও দাম বলি। ক্রেতার কোনো প্রশ্ন থাকলে তাঁরা কমেন্ট করেন। আমি জবাব দিই। যাঁর যে পোশাকটা পছন্দ হয়, তিনি স্ক্রিনশট নিয়ে ইনবক্স করেন। লাইভ শেষে আমি দেখি, কে কোন পোশাক চেয়েছেন। একই পোশাক যদি একাধিক ব্যক্তি চান, তবে প্রথম যিনি স্ক্রিনশট পাঠিয়েছেন, তাঁর কাছেই পোশাকটা বিক্রি করা হয়। এটা অনেকটা হাটের নিলামের মতো।’

আনিকার মতো অনেকেই এভাবে ফেসবুকে পণ্য বিক্রি করেন। কেউ গ্রুপে, কেউ পেজে, কেউ ব্যক্তিগত প্রোফাইলে।
গয়নাবিষয়ক একটি ফেসবুক গ্রুপের প্রধান ইফাত আনজুম। তাঁর গ্রুপ আনজুমে প্রায় ২৮ হাজার সদস্য রয়েছে। সম্প্রতি ইফাত তাঁর গয়নার ব্যবসার বিজ্ঞাপনে মডেল করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানকে। আগেও তিনি নামীদামি অনেক মডেলকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছেন। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ইফাত বলেন, ‘এটা আমার প্রথম উদ্যোগ নয়। আগেও আমি একজনের সঙ্গে এই ব্যবসা করেছি। পরে আমি নিজেই যখন উদ্যোগ শুরু করি, তখন আমাকে ক্রেতা নিয়ে ভাবতে হয়নি। কারণ, তাঁদের সঙ্গে আমার আগে থেকেই একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নূর নাহার ইয়াসমিন বলেন, ‘ঈদ তো বটেই, অন্য সময়ও সুযোগ পেলে অনলাইনে কেনাকাটা করি। দেখা যায়, যাঁদের কাছে থেকে কেনাকাটা করি, তাঁদের আমি চিনি। অথবা এমন কাউকে আমি চিনি, যিনি বিক্রেতাকে চেনেন। ফলে, এখানে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।’

ফেসবুক ঘুরে দেখা যায়, লাইভে এসে পণ্য বিক্রি করা বিক্রেতাদের প্রায় সবাই নারী। তাঁদের অধিকাংশ পণ্য নারীদের ব্যবহারের জন্য। কিছু ক্ষেত্রে শিশুদের ব্যবহারের পণ্য আছে।
ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি করা একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নাম শপআপ। শপআপের উদ্যোক্তা সিফাত সারোয়ার বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মেই প্রায় এক লাখ ফেসবুক বিক্রেতা নিবন্ধিত আছেন। সারা বাংলাদেশে এই সংখ্যা তিন বা চার লাখের কম নয়। আমাদের বিক্রেতাদের প্রায় ৯০ শতাংশই নারী।’
এই বাজারে নারীদের পাশাপাশি পুরুষ ক্রেতাও আছেন। আমিনুর রহমান পেশায় ফটোগ্রাফার। কেনাকাটার জন্য তিনি এই লাইভ বাজারের ওপর ভরসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে খুব ভালো লাগে যে বিক্রেতা আপুরা ভীষণ যত্ন নিয়ে পণ্যগুলো দেখান। বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করেন। সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন। এই সেবাটা মার্কেটে গিয়ে পাওয়া যায় না। আরেকটা বিষয়, যাঁরা পণ্য বিক্রি করেন, তাঁরা কমবেশি উচ্চশিক্ষিত। ফলে, তাঁদের রুচি, পণ্য সম্পর্কে জ্ঞান ক্রেতা হিসেবে আমাকে উপকৃত করে।’

ফেসবুকের এই বাজারে নারী বিক্রেতাদের অধিক অংশগ্রহণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রধান সানজীদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের নারীরা লেখাপড়া করে অর্থ উপার্জনের সক্ষমতা ও মানসিকতা অর্জন করেছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিকতা এখনো নারীবান্ধব নয়। তাই বাইরে গিয়ে কাজ করার চেয়ে এভাবে ঘরে বসে পণ্য বিক্রি করার পথ অনেকে খুঁজে নিচ্ছেন। এই বাজার নারীদের জন্য দারুণ সুবিধাজনক।’
শপআপের সিফাত তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন, ফেসবুকে পণ্য বিক্রির এই ব্যবসা বেশ দ্রুতই বড় হয়ে যায়। এক বছরের মধ্যে অনেকে পেজ বা গ্রুপ চালানোর জন্য লোক পর্যন্ত নিয়োগ দেন। আলাদা অফিসও নেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মুশফিক মান্নান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন অনলাইন মার্কেটিং নিয়ে। তিনি বলেন, ইলেকট্রনিকস কমার্সের দুনিয়ায় ফেসবুক কমার্স বা এফ কমার্স একটি নতুন অধ্যায়। পারস্পরিক সম্পর্ক, নারীদের সহজগম্যতা, বিশ্বস্ততার মতো অনেক বিষয়ের কারণে দিন দিন এফ কমার্স ই-কমার্সের একটি অন্যতম ধারা হয়ে উঠছে। এফ কমার্সের ফলে ব্যবসায় একটা বিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তা হলো ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান। এভাবে ফেসবুক লাইভে বিক্রির ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতার কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন হয়। তাদের কুরিয়ার সার্ভিস লাগে, অনলাইন পেমেন্ট লাগে। এই বিষয়গুলো পূরণ করতে গিয়ে একটা বড় অংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে। সরকারের রাজস্বে তার প্রভাব পড়েছে। এই ব্যবস্থাকে সচল রাখতে গিয়ে বাজার কাঠামোও উন্নত হচ্ছে। যেটা আগে কখনো ছিল না।



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
২০৩০ সাল নাগাদ ৫ হাজার সেমিকন্ডাক্টর প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান করবে উল্কাসেমি
দেশের বাজারে লেক্সারের জেন৫ এসএসডি
বাজারে এলো স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট চিপসেটের রিয়েলমি জিটি ৭ প্রো স্মার্টফোন
সর্বাধিক বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের তালিকায় শাওমি রেডমি ১৩সি
নাসার গ্লোবাল ফাইনালিস্টের তালিকায় বাংলাদেশের ‘টিম ইকোরেঞ্জার্স’
দেশের বাজারে ভেনশন ব্র্যান্ডের স্মার্ট ডিসপ্লে যুক্ত পাওয়ার ব্যাংক ও ইয়ার বাডস
টিকটক অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ এর ভোটিং শুরু
টেক্সটেক আন্তর্জাতিক এক্সপো ২০২৪ এ ট্যালি প্রাইম ৫.০
ভিসাকার্ড পেমেন্টে ফুডপ্যান্ডায় ছাড়
বাংলালিংকের মাইবিএল অ্যাপে রয়্যাল এনফিল্ড বাইক জেতার সুযোগ