সোমবার ● ২০ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » হুয়াওয়ের ফোনে বেশ কিছু আপডেট বন্ধ করে দিয়েছে গুগল
হুয়াওয়ের ফোনে বেশ কিছু আপডেট বন্ধ করে দিয়েছে গুগল
ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি হুয়াওয়েকে তাদের ‘এনটিটি লিস্টে’ অন্তর্ভুক্ত করে। ওই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের সঙ্গে কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করতে হলে বিশেষ লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের পরপরই গুগলের এই ঘোষণা এল বলে মন্তব্য করা হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
গুগল বলেছে, তারা নির্দেশনা অনুসরণ করছে এবং এর প্রয়োগ খতিয়ে দেখছে। অপরদিকে হুয়াওয়ে এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
হুয়াওয়ে ব্যবহারকারীদের কী হবে?
যারা ইতোমধ্যেই হুয়াওয়ে স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন, তারা যথারীতি অ্যাপ ইনস্টল ও আপডেট তাদের ফোনে নিতে পারবেন। তবে, গুগল যখন এ বছরের শেষের দিকে নতুন সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড বাজারে ছাড়বে, সেটি হুয়াওয়ে ফোনে ব্যবহার করতে না পারার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এমনকি ভবিষ্যতের হুয়াওয়ে ফোনগুলোতে গুগল ম্যাপস বা ইউটিউব অ্যাপ ব্যবহার না-ও করা যেতে পারে।
হুয়াওয়ে অবশ্য ওপেন সোর্স লাইসেন্সের মাধ্যমে পাওয়া অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ ব্যবহার করতে পারবে। সে সংস্করণের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে- হুয়াওয়ে ওই অপারেটিং সিস্টেমটি নিজেদের মতো করে ব্যাপকভাবে কাস্টমাইজ করতে পারবে না, যেমনটা তারা এতদিন করে আসছিল।
সিএসএস কনসালটেন্সির বিশ্লেষক বেন উডের মতে, গুগলের এই সিদ্ধান্ত হুয়াওয়ের ভোক্তাপণ্য ব্যবসায় ব্যপক প্রভাব ফেলবে।
এখন হুয়াওয়ের কী করণীয়?
গত বুধবার মার্কিন প্রশাসনের এনটিটি লিস্টে হুয়াওয়ের নাম যোগ করার পরপরই প্রতিক্রিয়া জানায় হুয়াওয়ে। ওই তালিকায় নাম থাকার ফলে কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি কিনতে হলে আগে মার্কিন সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অ্যান্ড্রয়েট অপারেটিং সিস্টেমটির নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান গুগল। এর পাশাপাশি, হুয়াওয়ে প্রতি বছর প্রায় ৬৭ বিলিয়ন ডলারের যন্ত্রাংশ কিনে থাকে।
সাম্প্রতিক মার্কিন সিদ্ধান্তের পর হুয়াওয়ে প্রধান মন্তব্য করেন, তার প্রতিষ্ঠান এমন পরিস্থিতির জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তিনি আরও যোগ করেন, হুয়াওয়ে এখন থেকে নিজেদের যন্ত্রাংশ নিজেরাই তৈরি করার দিকে মনোযোগ দেবে।
শুরু আরও আগে থেকেই
হুয়াওয়ে কেবল স্মার্টফোন তৈরি করে না, প্রতিষ্ঠানটি স্মার্টফোনের নেটওয়ার্ক কাঠামোও তৈরি করে। ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই বলে এসেছে, হুয়াওয়ে তাদের নেওয়ার্ক প্রযুক্তিকে পশ্চিমা সারকারগুলোর ওপর নজরদারির কাজে ব্যবহার করে থাকতে পারে। হুয়াওয়ে বরবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ হুয়াওয়ের নেটওয়ার্ক পণ্য ব্যবহার থেকে সরে এসেছে। অনেক দেশটি জানিয়ে দিয়েছে তারা ৫জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের প্রযুক্তি ব্যবহার করবে না। যুক্তরাজ্য অবশ্য এখনও কোনো অনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
গুগলের সিদ্ধান্তের ফলে স্বল্প মেয়াদে পশ্চিমে হুয়াওয়ের বড় ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে। যারা নতুন করে অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনবেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই এমন ফোন কিনতে চাইবেন না যেখানে গুগল প্লে স্টোর থাকবে না।
আর দীর্ঘ মেয়াদে কেবল হুয়াওয়ে নয়, অন্য স্মার্টফোন নির্মাতারাও হয়তো অ্যান্ড্রয়েড নির্ভরতা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। হুয়াওয়ে উতোমধ্যেই নিজস্ব অ্যাপস্টোর তৈরি করার বিষয়ে কাজ করছে।