বৃহস্পতিবার ● ১৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » এআই নির্ভর ডাটাবেজ চালু করলো হুয়াওয়ে
এআই নির্ভর ডাটাবেজ চালু করলো হুয়াওয়ে
এআই নির্ভর ডাটাবেজ ‘গাউসডিবি’ এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডিস্ট্রিবিউটেড স্টোরেজ ‘ফিউশন স্টোরেজ ৮.০’ চালু করেছে বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। ১৫ মে বুধবার, চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই দুটি সেবা চালু করা হয়। ডাটা+বুদ্ধিবৃত্তিক স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে তথ্য অবকাঠামোকে পুনঃসজ্ঞায়িত করাই এসব সেবা চালুর মূল লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ের পরিচালনা বোর্ডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও আইসিটি স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ওয়াং বলেন, ‘মানুষ এখন বুদ্ধিবৃত্তিক দুনিয়ায় প্রবেশ করছে। ফলে এখন উৎপাদনের নতুন নিয়ামক তথ্য এবং উৎপাদনশীলতার নতুন নিয়ামক বুদ্ধিমত্তা। নানাবিধ বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্যোগ এবং সমন্বিত ডাটাবেজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকার ও টেলিকম খাতের প্রধান ডাটা অবকাঠামো হবে। আইসিটি অবকাঠামো ও স্মার্ট ডিভাইস সরবরাহের ক্ষেত্রে হুয়াওয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে। এআই নির্ভর ডাটাবেজ গাউসডিবি হুয়াওয়ে ক্লাউড-এর সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে এবং ভিন্নধর্মী কম্পিউটিং শক্তিকে ছড়িয়ে দেবে, যার মধ্যে আছে এক্স৮৬, এআরএম, জিপিইউ এবং এনপিইউ কম্পিউটিং। ধারাবাহিকভাবে এআই স্ট্র্যাটেজিকে সামনে এগিয়ে নেওয়া এবং একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটিং ইকোসিস্টেম গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
গাউসডিবি বিশ্বের সর্বপ্রথম এআই নির্ভর ডাটাবেজ, যার উল্লেখযোগ্য দুটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথমত, এটি ডিস্ট্রিবিউটেড ডাটাবেজের সম্পূর্ণ জীবনচক্রের মধ্যে এআই সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রগামী। এটি সেলফ ওঅ্যান্ডএম, সেলফ টিউনিং এবং সেলফ ডায়াগনসিস-এর মাধ্যমে সেলফ হিলিংও সম্ভব। অনলাইন অ্যানালিটিক্যাল প্রসেসিং (ওএলএপি), অনলাইন ট্রানজেকশন প্রসেসিং (ওএলটিপি) এবং হাইব্রিড ট্রানজেকশন/অ্যানালিটিক্যাল প্রসেসিং (এইচটিএপি)-এর ক্ষেত্রে গাউসডিবি-তে সর্বোত্তম তত্ত্ব ব্যবহার করা হয়, যাতে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম সেলফ-টিউনিং অ্যালগরিদম শেখার উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করা যায় এবং টিউনিং সক্ষমতা ৬০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যায়। দ্বিতীয়ত, এই সেবার উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া নানাধর্মী কম্পিউটিং ফ্রেমওয়ার্ককে কাজে লাগায়। এছাড়া টিপিসি-ডিসি বেঞ্চমার্কের পরীক্ষায় গাউসডিবি কার্যকরী সক্ষমতার ভিত্তিতে প্রথম হয়েছে, যা শিল্পখাতে বিদ্যমান অন্য সবার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারনেট, লজিস্টিকস, শিক্ষা এবং অটোমোটিভ খাতে গাউসডিবি স্পেকট্রামের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডাটা ওয়্যারহাউজ সেবা সরবরাহ করে।
এছাড়া ফিউশন স্টোরেজ ৮.০-এর তিনটি উদ্ভাবনী ফিচার আছে। প্রথমত, এটা শিল্পখাতের সর্বোচ্চ স্টোরেজ ক্ষমতা বাড়ায়। এসপিসি-১ পরীক্ষায় হুয়াওয়ের এই নতুন স্টোরেজ-এর রিড-রাইট করার সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে প্রতি নডে ১৬৮,০০০ আইওপিএস। কঠিন এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশনকে সাপোর্ট দিতে প্রথমবারের মতো ডিস্ট্রিবিউটেড স্টোরেজকে ক্ষমতায়ন করছে। দ্বিতীয়ত, ফিউশন স্টোরেজ ৮.০ একটি ডাটা সেন্টারে মাত্র একটি স্টোরেজ সিস্টেম ব্যবহার করে একাধারে ব্লক, ফাইল, অবজেক্ট এবং হাডুপ ডিস্ট্রিবিউটেড ফাইল সিস্টেম প্রটোকলকে অধিকতর সক্ষম করে। তৃতীয়ত, এটা স্টোরেজ ব্যবস্থাপনার লাইফসাইকেলে বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় ঘটায়; বিশেষ করে রিসোর্স প্ল্যানিং ও সার্ভিস প্রভিশনিং থেকে শুরু করে সিস্টেম অপটিমাইজেশন, ঝুঁকি অনুমান ও ত্রুটি নিরূপন পর্যন্ত সব বিষয়েই সহায়তা করে।
হুয়াওয়ের গাউসডিবি এবং ফিউশন ইনসাইট বিগ ডাটা সল্যুশন বিশ্বের ৬০টি দেশ ও অঞ্চলে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া এই দুটি সল্যুশন বিশ্বের ৫০০টি ব্যবসায়িক অংশীদার গ্রহণ করেছেন এবং শিল্পখাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, সরকার, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, উৎপাদন এবং যাতায়াত খাতে এসব সল্যুশন ব্যবহার করা হচ্ছে। হুয়াওয়ে ক্লাউড ১৩টি ডাটাবেজ সার্ভিস চালু করেছে, যার মধ্যে শিল্পখাতের গ্রাহকদের জন্য ক্লাউডে ডাটা ওয়্যারহাউজ সার্ভিস অন্যতম।
হুয়াওয়ের গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিজ ভিশন (জিআইভি) পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৫ সালে গ্লোবাল ডাটা ভলিউম বেড়ে ১৮০ জেটাবাইটে দাঁড়াবে। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৩২.৫ জেটাবাইট। এছাড়া প্রতি তিন মাসে শিল্পখাতে এআই কম্পিউটিং সক্ষমতার চাহিদা দ্বিগুণ হচ্ছে, ২০২৫ সালে যা বেড়ে দাঁড়াবে ৮০ শতাংশে। ভবিষ্যতের বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্বের জন্য বিনিয়োগ ও উদ্ভাবন অব্যাহত এবং তথ্য অবকাঠামোকে পুনঃসজ্ঞায়িত করতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে হুয়াওয়ে বদ্ধপরিকর বলে অনুষ্ঠানে জানিয়েছে।