রবিবার ● ৩১ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » ইন্টারনেটে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান ফেসবুকের
ইন্টারনেটে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান ফেসবুকের
ইন্টারনেটের কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার মতামত পাতায় প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে এই আহ্বান জানান জাকারবার্গ। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়।
জাকারবার্গ বলেন, ক্ষতিকর কনটেন্ট পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব এককভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নেওয়া বেশ কঠিন।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর ও লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার দুই সপ্তাহ পর জাকারবার্গের খোলা চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কনটেন্ট নিয়ে উদ্বেগের কথা উঠে এল। ওই হামলায় ৫০ জন মুসলিম নিহত হন। মসজিদে হামলার সময় ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভস্ট্রিম করেন বন্দুকধারী ব্রেনটন টারান্ট। ১৫ মার্চ ঘটনার পর ফেসবুকে ওই ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। লাইভস্ট্রিম ও ভিডিওটি ছড়ানো বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। তবে জাকারবার্গ তাঁর খোলা চিঠিতে ক্রাইস্টচার্চে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
জাকারবার্গ তাঁর খোলা চিঠিতে চারটি ক্ষেত্রে নতুন আইন তৈরির আহ্বান জানান। সেগুলো হচ্ছে ক্ষতিকর কনটেন্ট, নির্বাচনী শুদ্ধতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও ডেটা সুবহনীয়তা।
লেখায় জাকারবার্গ বলেছেন, ‘আইনপ্রণেতারা প্রায়ই আমাকে বলেন, কথা বলার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক ক্ষমতা। সত্যি বলতে, আমি তা স্বীকার করি। ফেসবুক একটি স্বাধীন কাঠামো গঠন করছে, যাতে লোকজন কী পোস্ট হয়েছে বা কোন পোস্ট নামিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে ফেসবুকের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপিল করতে পারে।’
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জাকারবার্গ নতুন কিছু আইন দেখতে চান বলে তিনি তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নতুন আইনগুলো সব ওয়েবসাইটের জন্যই প্রযোজ্য হতে হবে, যাতে কোনো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ক্ষতিকর কনটেন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়া বন্ধের কাজটি সহজ হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারগুলোর প্রতি জাকারবার্গের আহ্বানে যা উঠে এসেছে, তা হলো বড় বড় সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে প্রতি তিন মাস পর স্বচ্ছতার প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনী শুদ্ধতা রক্ষায় বিশ্বব্যাপী কঠোর আইন। রাজনীতিক ব্যক্তিত্বদের শনাক্তে সব ওয়েবসাইটের জন্য একই মানদণ্ড প্রণয়ন। আইন শুধু প্রার্থী ও নির্বাচনের জন্যই নয়, বিভেদ সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক ইস্যুতেও প্রয়োগ হতে হবে। আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার সময়ের বাইরেও আইনের প্রয়োগ হতে হবে। অনলাইনে ভোটারদের টার্গেট করে রাজনৈতিক প্রচারাভিযানের জন্য যেভাবে ডেটা ব্যবহার হয়, তা নিয়ন্ত্রণে নতুন পন্থা বের করতে হবে। গোপনীয়তা রক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো সাধারণ ডেটা সুরক্ষা নীতি (জিডিপিআর) আরও বেশিসংখ্যক দেশ গ্রহণ করতে পারে। একটি সেবা থেকে অন্য সেবায় যখন কোনো ব্যক্তি চলে যায়, তখন ওই ব্যক্তির ডেটা সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব কার হবে, সে ব্যাপারে আইনে স্পষ্ট করতে হবে।
জাকারবার্গের খোলা চিঠিটি ইউরোপীয় কয়েকটি সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হবে।
নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় লোকজনের ব্যক্তিগত ডেটা অপব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক সমালোচিত হয়ে আসছে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। এ ঘটনায় ফেসবুক প্রশ্নের মুখে পড়ে।
জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি মনে করি, এই ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে ফেসবুকের দায়িত্ব রয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমি বিশ্বের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই।’