বৃহস্পতিবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » সৌদি আরবে মোবাইল অ্যাপ নিয়ে সমালোচনার মুখে অ্যাপল-গুগল
সৌদি আরবে মোবাইল অ্যাপ নিয়ে সমালোচনার মুখে অ্যাপল-গুগল
সৌদি আরবে নারীদের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়-এমন অ্যাপের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল ও গুগল। ‘অ্যাবশার’ নামের ওই অ্যাপ অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর ও গুগলের প্লে স্টোরে রয়েছে। সৌদি আরবের ই-সার্ভিস মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে ওই অ্যাপ নিরাপদে পরিবারের সদস্যদের প্রোফাইল ব্রাউজ করাসহ নানা ইলেকট্রনিক সেবা পাওয়া যায়। ওই অ্যাপের মাধ্যমে পুরুষেরা নারীর চলাচলের তথ্য পান বলে তা বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের সিনেটর রন ওয়েডেন অ্যাপল ও গুগলের কাছে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠি সম্পর্কে গত মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। ওই চিঠিতে তিনি সৌদি পুরুষদের অ্যাবশার অ্যাপ ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন, যার মাধ্যমে নারীদের চলাফেরার তথ্য রিয়েল টাইম মেসেজের মাধ্যমে জানার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।
সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের এক নারী তুরস্কে ছুটি কাটানোর সময় বাবা ও পরিবারের কাছ থেকে পালিয়ে আসেন। তাতে অ্যাবশার অ্যাপ থাকায় তিনি ওই মোবাইল চুরি করে আনেন। তা না হলে তিনি ধরা পড়ে যেতেন।
সৌদি আরবের অভিভাবকত্বের নিয়ম অনুযায়ী কোনো নারীকে ভ্রমণ ও অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টারের তৈরি ওই অ্যাপের মাধ্যমে কোনো পুরুষ নারীর নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে চলাচল নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। ওই গণ্ডি পেরোলে তাঁর কাছে নোটিফিকেশন চলে যায়।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেছেন, বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করবেন।
বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরাও। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক রথনা বেগম বলেছেন, পুরুষের কথা ভেবেই এটি তৈরি করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকেও ওই অ্যাপকে নিন্দা জানানো হয়েছে। সংগঠনটির অ্যাপল ও গুগলকে ওই অ্যাপের মাধ্যমে মানবাধিকার যাতে ঝুঁকিতে না পড়ে, তার জন্য ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে।
অনেক দিন ধরে চলে আসা অ্যাপটি সম্পর্কে ২০১৬ সালে মন্তব্য করেন সৌদি আরবের জাতীয় তথ্যকেন্দ্রের পরিচালক তারিক বিন আবদুল্লাহ আল-শেদ্দি। তাঁর ভাষ্য, স্মার্ট ডিভাইসের জন্য অ্যাপটি বানানোর আসল লক্ষ্য হচ্ছে সেবার মান বাড়ানো। তিন বছর আগেই এর গ্রাহক ৬০ লাখ পার হয়ে যায়।